সিরিয়ায় দখল করা জায়গায় নিজেদের বসতি বাড়াবে ইসরায়েল
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৩:১৮ পিএম, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৪ সোমবার
অবৈধভাবে দখল করে রাখা গোলান মালভূমিতে বসতির সংখ্যা বাড়ানোর পরিকল্পনা অনুমোদন করেছে ইসরায়েলের সরকার। সিরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট আল-আসাদের পতনের সিরিয়ার আরও ভূখণ্ড দখলের কয়েকদিনের মধ্যে এই সিদ্ধান্ত নিল ইসরায়েল।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় জানিয়েছে, সরকার অধিকৃত অঞ্চলের 'জনমিতিক উন্নয়নের' এই পরিকল্পনাকে 'সর্বসম্মতিক্রমে অনুমোদন' করেছে। এ পরিকল্পনার লক্ষ্য ওই অঞ্চলে ইসরায়েলি জনসংখ্যা দ্বিগুণ করা।
নতুন এই পরিকল্পনা ১৯৬৭ সালে ইসরায়েল মালভূমির যে অংশ দখল করেছিল, শুধু তার জন্য। ১৯৮১ সালে কার্যত এই অঞ্চলকে ইসরায়েলের সঙ্গে যুক্ত করার উদ্দেশ্যে পার্লামেন্ট নেসেট সেখানে ইসরায়েলি আইন প্রয়োগের সিদ্ধান্ত নেয়।
সম্প্রতি আসাদ সরকারের পতনের পর ইসরায়েলের দখল করা নতুন সিরীয় ভূখণ্ডে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে না। নতুন দখল করা এই এলাকার মধ্যে মাউন্ট হারমনের মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থানও রয়েছে। সেখান থেকে দামেস্কের ওপর নজরদারি করা যায়। মাউন্ট হারমন ১৯৭৩ সালের যুদ্ধের পর সম্পাদিত এক চুক্তি অনুযায়ী নিরস্ত্রীকৃত অঞ্চল অন্তর্ভুক্ত।
এক বিবৃতিতে নেতানিয়াহু এই পরিকল্পনার প্রশংসা করেন। অধিকৃত অঞ্চলে বসতি স্থাপন বাড়ানোর ১১ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
বর্তমানে গোলান মালভূমিতে প্রায় ৩১ হাজার ইসরায়েলি অবৈধভাবে বসতি স্থাপন করে বসবাস করছে। তারা সংখ্যালঘু দ্রুজ সম্প্রদায়ের সঙ্গে বাস করে। দ্রুজরা নিজেদের মূলত সিরীয় হিসেবে পরিচয় দেয়।
নেতানিয়াহু বলেছেন, গোলানকে শক্তিশালী করার অর্থ ইসরায়েল রাষ্ট্রকে শক্তিশালী করা। আর এই সময়ে এটি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি আরও বলেন, আমরা এই এলাকা ধরে রাখব, এটি বিকশিত করব এবং এখানে বসতি স্থাপন করব।
জর্ডানের আম্মান থেকে আল জাজিরা-র প্রতিবেদক নূর ওদেহ জানান, ইসরায়েল 'সুবিধাজনক সময়' দেখে বসতি বাড়ানোর এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী, গোলান মালভূমির ওপর ইসরায়েলের দখলদারি অবৈধ। তবে ২০১৭ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রথম মেয়াদে প্রেসিডেন্ট থাকাকালে যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে এই অঞ্চলে ইসরায়েলের সার্বভৌমত্বকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেয়।
২০২৪ সালের নভেম্বরের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর ২০ জানুয়ারি আবার দায়িত্ব গ্রহণ করবেন ট্রাম্প।
ওদেহ বলেন, নেতানিয়াহু এই সময়টার ফায়দা নিয়ে বসতি সম্প্রসারণের ঘোষণা দিয়েছেন, এই দখলদারি পাকাপোক্ত করার জন্য। পশ্চিম তীরে যেভাবে ভূমি দখল, বসতি নির্মাণ এবং স্থায়ী দখলদারি চালানো হচ্ছে, এখানেও সেই একই কৌশল প্রয়োগ করা হচ্ছে।
এদিকে নেতানিয়াহুর কার্যালয় জানিয়েছে, তিনি শনিবার ট্রাম্পের সঙ্গে ফোনালাপে সিরিয়ার পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেছেন।
যদিও সিরিয়ায় হায়াত তাহরির আল-শাম-এর (এইচটিএস) নেতৃত্বাধীন বিদ্রোহী দলগুলো আসাদ সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের উদ্যোগ নেওয়ার পর ইসরায়েল সিরিয়ার বিভিন্ন স্থানে শতাধিক আক্রমণ চালিয়েছে।
এসএস//