নতুন সুরে পুরোনো গল্পের পুনর্জাগরণ করবে কয়ারবাংলার
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৬:৪৯ পিএম, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪ বুধবার
বাংলাদেশের প্রথম বাংলা অ্যাক্যাপেলা ব্যান্ড কয়ারবাংলা আবারও তাদের সঙ্গীতের সুর দিয়ে দর্শকদের হৃদয় ছুঁতে প্রস্তুত। ২০১১ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে কয়ারবাংলা শুধু সঙ্গীত পরিবেশনা নয়, বরং সঙ্গীতের মাধ্যমে সমাজ ও সংস্কৃতিকে এক নতুন মাত্রা দেওয়ার চেষ্টা করেছে। এক দশকেরও বেশি সময় ধরে নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেও ব্যান্ডটি নিজেদের অবস্থান ধরে রেখেছে। এবার, বিজয় দিবস উপলক্ষে একটি বিশেষ পরিবেশনার মাধ্যমে কয়ারবাংলা নতুন করে আলোচনায় আসছে।
কয়ারবাংলার জন্ম ও যাত্রা
কয়ারবাংলা প্রতিষ্ঠা করেন তানভীর আলম সজীব, যিনি এই ব্যান্ডের মূল প্রেরণাস্বরূপ। শুরু থেকেই ব্যান্ডটি সঙ্গীতের মাধ্যমে সৃজনশীলতার নতুন দিগন্ত উন্মোচনে কাজ করেছে। ২০১৩ সালে তাদের প্রথম অ্যালবাম “নতুন করে পাওয়া” মুক্তি পায়, যা নজরুল সঙ্গীতের সুর আর আধুনিক ধারার মধ্যে এক অনন্য সংযোগ স্থাপন করে।
অ্যালবামের প্রকাশ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন দেশের প্রখ্যাত গুণীজনরা, যারা কয়ারবাংলার সঙ্গীত ভিশনকে উচ্চ প্রশংসায় ভূষিত করেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, বিশিষ্ট সংগীত শিল্পী ইয়াসমিন মুস্তারী, কবি নজরুলের প্রখ্যাত গবেষক প্রয়াত শ্রী সুধীন দাশ , খ্যাতনামা সঙ্গীত পরিচালক প্রয়াত সুজেয় শ্যাম, প্রখ্যাত থিয়েটার ব্যক্তিত্ব শংকর সাউজাল সহ আরো অনেকে। সেই যাত্রা থেকে শুরু করে কয়ারবাংলা টিভি শো, মঞ্চ পরিবেশনা, এবং HAY ফেস্টিভ্যালের মতো আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মে পারফর্ম করেছে।
সঙ্গীতের মাধ্যমে নতুন দিগন্ত
নানা বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে কয়ারবাংলা এখন নতুন সদস্যদের সঙ্গে একটি নতুন দিগন্তের দিকে এগোচ্ছে। নতুন প্রজন্মের সৃজনশীলতা এবং তানভীর আলম সজীবের দিকনির্দেশনা ব্যান্ডটিকে নতুনভাবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
তানভীর আলম সজীব বলেন, “আমরা বিশ্বাস করি, গান এমন এক শক্তি, যা শুধু বিনোদন নয়, বরং এটি মানুষের মনে আশা এবং সাহস জাগিয়ে তোলে। আমাদের নতুন প্রয়াস সঙ্গীতের মাধ্যমে মানুষকে অনুপ্রাণিত করার। আমরা চাই, আমাদের গান দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে একটি শান্তি ও ঐক্যের বার্তা নিয়ে আসুক।”
বিজয় দিবসে বিশেষ পরিবেশনা
১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস উপলক্ষে কয়ারবাংলা নজরুলের কালজয়ী গান “কারার ঐ লৌহ কপাট” একটি নতুন আঙ্গিকে পরিবেশন করবে। এটি কেবল একটি সঙ্গীত পরিবেশনা নয়, বরং স্বাধীনতার চেতনা, প্রত্যয়, এবং সংকল্পের প্রতীক হয়ে দাঁড়াবে।
বর্তমান প্রেক্ষাপটের গুরুত্ব
বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং সামাজিক অস্থিতিশীল পরিবেশে, সঙ্গীতের শক্তি মানুষের মনে এক ধরনের ঐক্যের বার্তা পৌঁছে দিতে পারে। কয়ারবাংলা বিশ্বাস করে, সঙ্গীতই পারে এমন সময়েও মানুষের মধ্যে শান্তি এবং আশার আলো ছড়িয়ে দিতে।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
কয়ারবাংলার নতুন সদস্যরা নিজেদের সৃজনশীলতা দিয়ে ব্যান্ডটির সঙ্গীত ভিশনকে আরও সমৃদ্ধ করতে চায়। তাদের স্বপ্ন, সঙ্গীতের মাধ্যমে বাংলাদেশের সংস্কৃতিকে বিশ্বমঞ্চে পৌঁছে দেওয়া। নতুন সদস্যদের মতে, আমরা বিশ্বাস করি, সঙ্গীত মানুষকে একত্রিত করার শক্তি রাখে। আমাদের সুর যেন দেশের প্রতিটি মানুষের হৃদয়ে আশার বার্তা পৌঁছে দিতে পারে, এটাই আমাদের লক্ষ্য।
সুরের পথে পুনর্জন্ম
কয়ারবাংলার নতুন যাত্রা শুধু একটি ব্যান্ডের পুনর্জাগরণ নয়, বরং এটি সঙ্গীতের শক্তি দিয়ে একটি জাতিকে অনুপ্রাণিত করার প্রতিশ্রুতি। সঙ্গীতের মাধ্যমে ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, এবং আধুনিকতাকে একত্রিত করে কয়ারবাংলা এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে।
কয়্যার বাংলার নতুন সদস্যরা হলেন, সঙ্গীত শিল্পী, সুরকার ও সঙ্গীত পরিচালক তানভীর আলম সজীব, সঙ্গীত শিল্পী ও শিক্ষক মাহমুদুল হাসান, সঙ্গীত শিল্পী ও শিক্ষক ঝুমা খন্দকার, সঙ্গীত শিল্পী, সুরকার ও সঙ্গীত পরিচালক ইউসুফ আহমেদ খান, সঙ্গীত শিল্পী নাদিয়া আরেফিন শাওন, সঙ্গীত শিল্পী, সুরকার ও সহ-সঙ্গীত পরিচালক সুকন্যা মজুমদার, সঙ্গীত শিল্পী ও শিক্ষক মনীশ সরকার, সঙ্গীত শিল্পী ইসরাত জাহান মীম, সঙ্গীত শিল্পী ও স্থপতি প্রিয়াঙ্কা ভট্টাচার্য, সঙ্গীত শিল্পী ও ফার্মাসিস্ট মৌমিতা মুমু।
এসএস//