সচিবালয়ে আগুন: পতিত সরকারের দোসরদের দিকেই আঙ্গুল
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১২:০৮ পিএম, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪ বৃহস্পতিবার | আপডেট: ০২:৫৩ পিএম, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪ বৃহস্পতিবার
হঠাৎ মধ্যরাতে বাংলাদেশ সরকারের প্রশাসনিক কেন্দ্র সচিবালয়ে আগুন। আগুন লাগা সচিবালয়ের ৭ নম্বর ভবনে চলে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি মন্ত্রণালয়ের কাজ, ছিল সরকারের গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র। সেগুলো নষ্ট করার জন্যই কী এই আগুনের ঘটনা, আর এতে পতিত সরকারের দোসরদের দিকেই আঙ্গুল তুলেছেন অনেকে।
বুধবার রাত ১টা ৫২ মিনিটে সচিবালয়ের ৭ নম্বর ভবনে আগুন ধরে। ফায়ার সার্ভিসের প্রায় ৬ ঘণ্টার চেষ্টায় আজ সকালে সেই আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
আগুন লাগার ঘটনায় ভবনের ৮ এবং ৯ তলা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই তলাগুলোতে সরকারি সব গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র সংরক্ষিত ছিল। ভয়াবহ এই অগ্নিকাণ্ডে সরকারি গুরুত্বপূর্ণ সব নথিপত্র পুড়ে গেছে। বিশেষত অর্থ মন্ত্রণালয়, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি, স্থানীয় সরকার, পল্লি উন্নয়ন ও সমবায়, শ্রম ও কর্মসংস্থান, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় ও যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের অফিস ছিল এই ভবনে।
অনুমান করা হচ্ছে, আগুনে অনেক নথি পুড়ে গেছে, যার ফলে প্রশাসনিক কাজকর্মে ব্যাঘাত ঘটতে পারে।
কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রশ্ন তুলে বলছেন, সর্বোচ্চ নিরাপত্তার জায়গায় কীভাবে আগুন লাগল। কেউ কেউ আগুন লাগার ঘটনাকে নাশকতা বলেও উল্লেখ করছেন। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, সচিবালয়ে আগুনের ঘটনায় উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে।
ফায়ার সার্ভিসের ডিজি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জাহেদ কামাল প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেছেন, আগুন লাগার প্রাথমিক কারণ এখনও আমরা বের করতে পারিনি। তবে দ্রুতই তদন্ত শুরু করবেন বলে জানা যায়।
সচিবালয়ের সাত নম্বর ভবনে আগুনের ঘটনায় নাশকতার সন্দেহ করছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ভূঁইয়া। তিনি হুঁশিয়ারি করেছেন, এই ষড়যন্ত্রে যে বা যারাই জড়িত তাদের বিন্দু পরিমাণ ছাড় দেওয়া হবে না। আজ সকালে নিজের ফেসবুক একাউন্টে একটি পোস্টে এই হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
আগুনের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে তরুণ উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ফেসবুক পোস্টে লেখেন, ‘বিগত সময়ে হওয়া অর্থ লোপাট, দুর্নীতি নিয়ে আমরা কাজ করছিলাম। কয়েক হাজার কোটি টাকা লুটপাটের প্রমাণও পাওয়া গিয়েছিল। আগুনে কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে এখনো জানা যায়নি। আমাদেরকে ব্যর্থ করার এই ষড়যন্ত্রে যে বা যারাই জড়িত থাকবে তাদের বিন্দু পরিমাণ ছাড় দেওয়া হবে না।’
বিশ্লেষকরা পতিত আওয়ামী সরকারের দোসরদের দিকেই আঙ্গুল তুলছেন। সরকারের বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বিগত সরকারের আমলে যেখানে প্রয়োজন মনে করেছেন সেখানেই আগুন ধরিয়ে দিয়ে কাহিনী ধামাচাপা দেয়ার অনুশীলন আওয়ামী লীগের জন্য নতুন কিছু নয়। এমনটাই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
হাসিনাকে ফেরত পেতে সম্প্রতি নয়াদিল্লিকে চিঠি দিয়েছে ঢাকা। তাছাড়া হাসিনার আমলের হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাটের তদন্ত করছে সরকার। পুড়ে যাওয়া মন্ত্রণালয়গুলো খেয়াল করলেই বোঝা যায়, আলামত ধ্বংসের জন্য এই আগুন দেওয়া হতে পারে বলে ধারণা করছেন অনেকে।
/////////////////////////
এএইচ//