যাদের সহায়তায় ওবায়দুল কাদেরের পলায়ন, প্রকাশ করলেন বিএনপি বহিষ্কৃত নেতা
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৩:৩০ পিএম, ৮ জানুয়ারি ২০২৫ বুধবার | আপডেট: ০৩:৩৪ পিএম, ৮ জানুয়ারি ২০২৫ বুধবার
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। এরপর আত্মগোপনে চলে যান ওবায়দুল কাদেরসহ আওয়ামী লীগের নেতারা। তবে সম্প্রতি প্রকাশ হয়েছে যে ওবায়দুল কাদের দেশত্যাগ করে ভারতে অবস্থান করছেন। এবার তাকে পালাতে যারা সহযোগিতা করেছেন তাদের নাম প্রকাশ করেছেন বিএনপির এক বহিষ্কৃত নেতা।
ফেসবুক লাইভে ও স্ট্যাটাসে যশোর জেলা যুবদলের সদ্য বহিষ্কৃত প্রচার সম্পাদক এসকেন্দার আলী জনি জানিয়েছেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও শেখ হাসিনার চাচাতো ভাই শেখ হেলালসহ তার পরিবারের চার সদস্যকে ভারতে পালিয়ে যেতে সহযোগিতা করেছে যশোর জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আনসারুল হক রানা।
তার বক্তব্যে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। এমন অভিযোগের লাইভ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হৈচৈ পড়ে গেছে। বিষয়টি এখন ‘টক অব দ্য টাউন’।
মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) ফেসবুক লাইভে এসে ও ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে এমন অভিযোগ করেছেন জনি। এ সময় তিনি দলটির জেলা শাখার সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ তুলে ধরে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ জানান।
ফেসবুক লাইভে জনি বলেন, ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও শেখ হাসিনার চাচাতো ভাই শেখ হেলালসহ তার পরিবারের চার সদস্যকে ভারতে পালিয়ে যেতে সহযোগিতা করেছে যশোর জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আনসারুল হক রানা’।
লাইভে জনি অভিযোগ করেন, যশোর ক্যান্টনমেন্টে লুকিয়ে ছিলেন ওবায়দুল কাদের। ৫ তারিখের পর তাকে ভারতে পালাতে সাহায্যে করেছেন যশোর জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আনসারুল হক রানা। কিছু দিন আগে সিঙ্গাপুর গিয়েছিলেন যশোর জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক। বেনাপোলের পুটখালির গোল্ড নাসিরের সাথে টাকা ভাগাভাগি হয়েছে।
এছাড়া মঙ্গলবার রাতে ফেসবুকে দেয়া এক স্ট্যাটাসে এসকেন্দার আলী জনি লেখেন ‘১৩ সেপ্টেম্বর বেলা আড়াইটার দিকে যশোর জেলা যুবদলের সেক্রেটারি আনসারুল হক রানা, মাদক সম্রাট শহীদের সহায়তায় পুটখালি ঘাট দিয়ে শেখ হেলালসহ পরিবারের ৪ সদস্যকে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে পার করে দিয়েছে সেটা গোয়েন্দার কাছে তথ্য আছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ঘাট’ শহিদকে ধরলে এতথ্য পাওয়া যাবে। শুধু কাদের নয়, আওয়ামী লীগের বহু নেতাকে ভারতে যেতে সাহায্য করেছে যশোর যুবদলের সাধারণ সম্পাদক রানা। এতথ্য সব নেতাই জানে। এখন যশোর যুবদল দেখলে মনে হবে যুবলীগ হেঁটে যাচ্ছে। যশোর জেলা যুবদলের সভাপতি তমাল আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক আনসারুল হক রানা দলকে যুবলীগে পরিণত করেছে।
লাইভে তিনি আরও বলেন, আমি রাজপথে মার খেয়েছি, আমার ভাই মার খেয়েছে। আওয়ামী লীগের ষড়যন্ত্রের কারণে পরিবারসহ জেল খেটেছি। আমি ১৭ বছর ধরে নির্যাতনের শিকার ও ত্যাগী নেতা হয়েও আমাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। আমি আন্দোলন সংগ্রাম করবো; ত্যাগী নেতাদের কেন বহিষ্কার করা হচ্ছে। যুবদলের নেতাকর্মী জয় বাংলা স্লোগান দিয়ে বিএনপি পার্টি অফিসের সামনে মিছিল করেছে। ভিডিওসহ নেতৃবৃন্দের জানানো হলেও তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।’
বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে যশোর জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আনসারুল হক রানা বলেন, ‘এসব বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের জন্যই এসকেন্দার আলী জনিকে বহিষ্কার করা হয়েছে। সে সুস্থ নয়। ওবায়দুল কাদের কোন দিক দিয়ে কোথায় গেছে, সেটা আপনারা তদন্ত করেন। একজন একটা কথা বললেই তো সত্যি হয়ে যায় না।’
প্রসঙ্গত, গত ১৭ ডিসেম্বর নিজ সংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে আপত্তিকর পোস্ট দেয়ার অভিযোগে যশোর জেলা যুবদলের প্রচার সম্পাদক এসকেন্দার আলী জনিকে বহিষ্কার করা হয়।
এএইচ