ঢাকা, সোমবার   ২০ জানুয়ারি ২০২৫,   মাঘ ৬ ১৪৩১

গণভবন থেকে নথি উদ্ধার, মিলল আল জাজিরার প্রতিবেদনের সত্যতা

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৮:৫৩ পিএম, ১৯ জানুয়ারি ২০২৫ রবিবার

গত ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতা হারানো সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নানা অপকর্ম নিয়ে ২০২১ সালে অনুসন্ধানী তথ্যচিত্র প্রকাশ করে কাতারভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম আল জাজিরা। ‘অল দ্য প্রাইম মিনিস্টারস মেন’—শিরোনামে প্রকাশিত সেই প্রতিবেদনের পর বেশ আলোচনা তৈরি হয় দেশে।

প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদ, তার পরিবার ও শেখ হাসিনার অন্যান্য ঘনিষ্ঠজনরা কীভাবে রাষ্ট্রীয় বাহিনীকে ব্যবহার করে প্রতিদ্বন্দ্বীকে অপহরণ এবং অবৈধভাবে কোটি কোটি টাকা ঘুষ নিয়েছেন। এছাড়া তাতে আরও ওঠে আসে, এইসব অপকর্মের পেছনে মদদদাতা হিসেবে খোদ শেখ হাসিনাই ছিলেন। 

প্রতিবেদনটি ইউটিউবে ১ কোটিরও বেশি বার দেখা হয়েছে। এটি আন্তর্জাতিক পুরস্কার লাভ করে। অপরদিকে প্রতিবেদনের জেরে সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ এবং তার ভাইদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসন। ওই সময় বাংলাদেশ সরকার প্রতিবেদনটিকে ‘মিথ্যা, মানহানিকর এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হিসেবে অভিহিত করেছিল।

এছাড়া এই প্রতিবেদন প্রকাশের পর তথ্য ফাঁসকরা হুইসেলব্লোয়ার জুলকারনাইন সায়ের খানের ভাইকে লোহার রড দিয়ে পেটানো হয়। যারা প্রতিবেদনে সহায়তা করেছিলেন তাদের অনেকে ভয়ে দেশ ছাড়তেও বাধ্য হন।

সম্প্রতি শেখ হাসিনার সাবেক বাসভবন গণভবন থেকে একটি দুমড়ানো-মুচড়ানো নথি উদ্ধার করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে দ্য সানডে টাইমসের প্রতিবেদনে জানা যায়, বাংলাদেশ হাইকমিশনের ওই কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাতে সম্মত হন ব্রাউন। পরে তাদেরকে একজন সলিসিটরের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। ওই সলিসিটর ব্রিটিশ আদালতে মামলা শুরু করতে পারতেন। সাক্ষাতের পরের মাসে এই দুজন শেখ হাসিনা সরকারের সঙ্গে পরামর্শ করেন।

এই বৈঠকের কয়েকদিন আগেই আল-জাজিরা ‘অল দ্য প্রাইম মিনিস্টারস মেন’ শীর্ষক ডকুমেন্টারিটি প্রচার করেছিল। তাতে সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদের ভাই প্রকাশ্যে গর্ব করে বলেন, তিনি পুলিশ ও আধাসামরিক বাহিনীকে দিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বীদের উঠিয়ে নিতে পারেন এবং ঘুষ নিয়েই কোটি কোটি টাকা আয় করতে পারেন।

সানডে টাইমস বলেছে, শেখ হাসিনার বাড়ি থেকে পাওয়া নথিতে উল্লেখ আছে, তার সরকার আলজাজিরার পাশাপাশি ব্রিটিশ সাংবাদিক ডেভিড বার্গম্যানের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার পরিকল্পনা করেছিল। বার্গম্যান প্রতিবেদনটি তৈরীতে সহায়তা করেছিলেন।

নথিতে আরও পাওয়া গেছে, বার্গম্যানের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের কর্মকর্তারা একাধিক মিথ্যা তথ্য দিয়েছিলেন। এবং একটা সময় তাকে আটক করার পরিকল্পনাও করেন তারা।

তবে যুক্তরাজ্যের আদালতে মামলা করতে চাইলেও শেখ হাসিনা সরকার এটি আর করেনি। এর বদলে ইউটিউব ও ফেসবুককে ভিডিও প্রতিবেদনটি সরিয়ে নিতে চাপ দিতে থাকে তারা। কিন্তু ইউটিউব ফেসবুক কেউই এতে কর্ণপাত করেনি। যদিও বাংলাদেশের হাইকোর্ট এই প্রতিবেদন সরাতে হাসিনার পক্ষে রায় দিয়েছিল, তা সত্ত্বেও ভিডিওটি রয়ে যায়। 

সূত্র: সানডে টাইমস

এসএস//