রিসোর্টে বিয়ে দেওয়ার ঘটনায় দুজনের আত্মহত্যা, যা জানা গেল
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০২:৩০ পিএম, ২২ জানুয়ারি ২০২৫ বুধবার
গত ১৯ জানুয়ারি সিলেটের দক্ষিণ সুরমা উপজেলায় অবস্থিত রিজেন্ট পার্ক রিসোর্টে অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগে ১৬ জন স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রীকে আটক করে সিলাম এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারা। পরবর্তীতে তাদের মধ্যে আটজনকে অভিভাবক ডেকে বিয়ে দেন এবং অন্যদের সামাজিকভাবে বিয়ের আয়োজন করার মুচলেকা নিয়ে অভিভাবকদের জিম্মায় ছেড়ে দেন।
এছাড়াও এ সময় রিসোর্ট ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগের ঘটনাও ঘটে। সম্প্রতি, উক্ত ঘটনায় অপমানবোধ করে দুজন আত্মহত্যা করেছেন দাবিতে একটি তথ্য ও ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।
রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, রিজেন্ট পার্ক রিসোর্টের ঘটনায় দুইজনের আত্মহত্যার দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে, তৃষা বিশ্বাস নামের এক নারী কনস্টেবলের ঝুলন্ত মরদেহের ছবি আলোচিত দাবিতে প্রচার করা হয়েছে।
এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত পোস্টগুলো পর্যালোচনা করে এতে একজন নারীর ঝুলন্ত মরদেহের ছবি দেখতে পায় রিউমর স্ক্যানার। উক্ত ছবির সূত্রে Kartik Nath নামের একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে গত ১৯ জানুয়ারি করা একটি পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়।
পোস্টটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, পোস্টটিতে ব্যবহৃত ছবিগুলোর একটির সাথে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ছবির মিল রয়েছে। উক্ত ছবি ব্যতীতও ওই নারীর ঝুলন্ত মরদেহের ভিন্ন ছবিও পোস্টটিতে পাওয়া যায়।
পোস্টটি থেকে জানা যায়, গত ১৯ জানুয়ারি পটুয়াখালী পুলিশ লাইনের ব্যারাক থেকে তৃষা বিশ্বাস (২২) নামের এক নারী কনস্টেবলের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তৃষা বিশ্বাস মাদারীপুর জেলার ঢাসার থানার পূর্ব কমলাপুর গ্রামের কৃষ্ণ বিশ্বাসের কন্যা। তিনি ২০২৩ সালের নভেম্বর মাসে চাকরিতে যোগ করেন।
অর্থাৎ, রিজেন্ট পার্ক রিসোর্টের ঘটনায় দুইজন আত্মহত্যা করার দাবিতে প্রচারিত ছবিটি ভিন্ন ঘটনার।
পরবর্তীতে সিলেটের রিজেন্ট পার্ক রিসোর্টে আটককৃত আটজনকে বিয়ে দেওয়ার ঘটনা পরবর্তী সময়ে কেউ আত্মহত্যা করেছেন কিনা জানতে গণমাধ্যম কিংবা নির্ভরযোগ্য সূত্রে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
উক্ত দাবির বিষয়ে নিশ্চিত হতে পরবর্তীতে সিলেটের স্থানীয় পত্রিকা ‘দৈনিক জালালাবাদ’-এর সম্পাদক মুকতাবিস উন নূর এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি রিউমর স্ক্যানারকে বলেন, ‘ওই ঘটনায় দুইজন আত্মহত্যা করার দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। এমন কোনো ঘটনাই ঘটেনি। পুলিশ কমিশনারের সাথেও আমার আলাপ হয়েছে। তিনিও এমন কোনো তথ্য পাননি।’
সুতরাং, সিলেটের রিজেন্ট পার্ক রিসোর্টে অসামাজিক কার্যকলাপের দায়ে আটক তরুণ-তরুণীদের বিয়ে করিয়ে দেওয়ার ঘটনায় পরবর্তীতে দুইজন আত্মহত্যা করার দাবিতে ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্যটি মিথ্যা।
এএইচ