ঢাকা, শুক্রবার   ৩১ জানুয়ারি ২০২৫,   মাঘ ১৭ ১৪৩১

নানা সংকটে জর্জরিত কালকিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৯:৫৫ পিএম, ২৯ জানুয়ারি ২০২৫ বুধবার

মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নানা সংকটে মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে স্বাস্থ্যসেবা। প্রয়োজনীয় জনবল না থাকায় কাঙ্ক্ষিত চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন রোগীরা। হাসপাতালে ৩৫ জন চিকিৎসকের জায়গায় কর্মরত রয়েছেন মাত্র ১২ জন। তাই গুরুতর রোগী আসলেই তাদের পাঠিয়ে দেয়া হয় বরিশাল কিংবা ঢাকায়। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে রোগী ও তাদের স্বজনদের।

জানা যায়,১৯৭৬ সালে কালকিনি উপজেলার ঝাউতলা ও পাঙ্গাশিয়া মৌজায় ৬ একর ৯৬ শতাংশ জমিতে ৩১ শয্যাবিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি নির্মিত হয়।পরবর্তীতে ২০১০ সালে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়।তবে শয্যা বাড়লেও বাড়েনি চিকিৎসা সেবার মান। এখানে মেডিকেল অফিসারের ২৪টি পদের মধ্যে কর্মরত আছেন ১৩ জন।আর কনসালটেন্ট পদের ১১ জনের ভিতরে ৭টি পদই শূন্য।সবমিলিয়ে  ৩৫ জন চিকিৎসকের ভিতরে এখানে পোস্টিং রয়েছেন ১৭ জন চিকিৎসক।এদের ভিতরে বর্তমানে ৫ জন চিকিৎসক বিভিন্নস্থানে সংযুক্ত থাকায় এখন ১২ জন চিকিৎসক দিয়ে চলছে চিকিৎসা সেবা।তাই কাঙ্ক্ষিত সেবা পাচ্ছেন না রোগীরা। ফলে উন্নত চিকিৎসার জন্য মাদারীপুর সদর সহ ঢাকা, বরিশাল ও ফরিদপুর মেডিকেল কলেজে প্রেরণ করায় খরচের সঙ্গে বেড়েছে ভোগান্তি।এতে করে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা প্রতিনিয়ত দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন।

অপরদিকে এক্স -রে,আল্ট্রাসনো সহ বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষার যন্ত্রপাতি থাকলেও রোগীদের বাইরে থেকে পরীক্ষা করাতে হয়।পাশাপাশি চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী ২৪ জনের স্থানে রয়েছে মাত্র ১০ জন। এতে হাসপাতালটি ঠিক মতো পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার অভাবে ভোগান্তিতে পরতে হচ্ছে রোগীদের।তাছাড়া নিম্ম মানের খাবার প্রদান সহ নানা অভিযোগ রয়েছে এখানে সেবা নিতে আসা রোগীদের। এতে ক্ষুব্ধ রোগী, স্বজন ও এলাকাবাসী।

হাসপাতালটির এক্সরে টেকনিশিয়ান এসএম সোহেল রেজা ও প্যাথলজিস্ট কাওসার আলম জানান, তাদের সমস্যার কথা গুলো ইতিমধ্যে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। 

আর হাসপাতালটিতে খাবার প্রদানকারী ঠিকাদার মোঃ জসিম হোসেন জানান,যখন খাবারের টেন্ডার হয়েছিল তখন দ্রব্যমূল্যের দামের তুলনায় বর্তমানে দামে বেড়েছে প্রায় তিনগুন।তাই তাদের বর্তমানে খাবার সরবরাহ করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।যদি বাজার দরের সাথে সমন্বয় করা হতো তবে ভাল খাবার দেয়া যেত।

এদিকে কালকিনি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ এ কে এম শিবলী রহমান স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জনবল সংকটের কথা স্বীকার করে জানান, ৩১ শয্যার হাসপাতাল ৫০ শয্যার করা হলেও প্রয়োজনীয় জনবল এখনও নিয়োগ দেওয়া হয়নি।৩৫ জন চিকিৎসকের জায়গায় ১২ জন এবং ২৪ জন চতুর্থশ্রেণীর কর্মচারীর স্থানে ১০ জন দিয়ে হাসপাতালটির সেবা দেয়া হচ্ছে। তাই সার্বিক সেবা নিয়ে কিছুটা অভিযোগ থাকবে। এরপরও আমরা চেষ্টা করছি জনগনকে ভালো সেবা দেওয়ার জন্য।দ্রুত শূন্য পদে জনবল নিয়োগ পেলে চিকিৎসা সংকট কেটে যাবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।

দ্রুত হাসপাতালের লোকবল সংকট সমাধান করে উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটির সেবার মান বাড়ানো হোক, এমনটাই প্রত্যাশা উপজেলার সাধারণ মানুষের।

এসএস//