ঢাকা, রবিবার   ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫,   মাঘ ২০ ১৪৩১

টিউলিপের দুর্নীতি তদন্তে গোপনে ঢাকা ঘুরে গেল ব্রিটেনের এফবিআই

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১২:২০ পিএম, ২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ রবিবার

দুর্নীতির অভিযোগে যুক্তরাজ্যের মন্ত্রীত্ব হারিয়েছেন বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বোনের মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক। যুক্তরাজ্যের সাবেক সিটি মিনিস্টারের পদ হারানোর পর এবার তার এমপি পদ নিয়েও চলছে টানাটানি। এমন প্রেক্ষাপটে যুক্তরাজ্যের সাবেক সিটি মিনিস্টারের ব্যাপারে তথ্য নিতে বাংলাদেশে এসেছেন দেশটির জাতীয় অপরাধ সংস্থার (এনসিএ) কর্মকর্তারা। তারা বাংলাদেশের দুর্নীতিবিরোধী তদন্তকারীদের সঙ্গে গোপন বৈঠক করেছেন।

গতকাল শনিবার এ তথ্য জানায় ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম  ‘দ্য মেইল অন সানডে’।  ব্রিটেনের 'এফবিআই' হিসেবে পরিচিত ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সি (এনসিএ) লেবার পার্টির সাবেক মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে। বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সঙ্গে ঢাকায় এক গোপন বৈঠকের পর ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ এই পদক্ষেপ নিয়েছে বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমটি।

প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাজ্যের গোয়েন্দারা বাংলাদেশে গিয়ে সেখানকার দুর্নীতিবিরোধী তদন্তকারীদের সঙ্গে একটি গোপন বৈঠক করেছে। এ বৈঠকের আয়োজন করে ঢাকায় ব্রিটিশ হাইকমিশন। ওই বৈঠকে ব্রিটিশ গোয়েন্দাদের রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে টিউলিপের দুর্নীতি নিয়ে নতুন তথ্য-প্রমাণ দেওয়া হয়। গত ৫ আগস্ট টিউলিপের খালা শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর ব্রিটিশ গোয়েন্দারা দুবার ঢাকা সফর করেছেন।

যুক্তরাজ্যের সাবেক সিটি মিনিস্টার টিউলিপ সিদ্দিক ও  সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাড়াও তাদের পুরো পরিবারের বিরুদ্ধে পাবনার রুপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। 

২০১৩ সালে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে শেখ হাসিনা এ চুক্তি স্বাক্ষর করেন। তখন সেখানে উপস্থিত ছিলেন টিউলিপ সিদ্দিকও। বলা হচ্ছে, টিউলিপ এতে মধ্যস্থতা করে অর্থ আত্মসাৎ করেছেন।

বাংলাদেশের একটি সূত্র সংবাদমাধ্যমটিকে জানিয়েছে, ব্রিটিশ দলটি ব্রিটেনে বালাদেশি কর্মকর্তাদের দ্বারা টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে অভ্যন্তরীণ চুক্তির মাধ্যমে তদন্ত করার প্রস্তাব দিয়েছেন। এছাড়া তারা টিউলিপের বিরুদ্ধে হয়ত তদন্ত করতে পারে।

জানা যায়, টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ উঠেছে সেগুলো যদি প্রমাণিত হয় তাহলে তার ১০ বছর বা তারও বেশি সময়ের জেল হতে পারে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলাদেশি এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, যুক্তরাজ্যের এনসিএ-এর কর্মকর্তারাই এই গোপন বৈঠকটি আয়োজনের প্রস্তাব দেয়। এরপর ঢাকাস্থ ব্রিটিশ হাইকমিশন এটি আয়োজন করে।

এরআগেও এনসিএ-এর কর্মকর্তারা বাংলাদেশে এসেছিলেন। সেটি গত বছরের অক্টোবরে। সেবার তারা কথা দিয়ে গিয়েছিলেন, বাংলাদেশ থেকে যেসব অর্থ পাচার করা হয়েছে, সেগুলো ফেরত দিতে তারা সহায়তা করবেন।

এ অবস্থায় টিউলিপ সিদ্দিকের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, ই-মেইল রেকর্ড এবং এমনকি তাকে জিজ্ঞসাবাদের জন্য ডাকা হতে পারে বলেও জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দুই ঘনিষ্ঠ ব্যক্তির কাছ থেকে লন্ডনে যথাক্রমে ৭ লাখ ও ৬ লাখ ৫০ হাজার পাউন্ড মূল্যের দুটি ফ্ল্যাট উপহার পাওয়ার অভিযোগ ওঠার পর এরই মধ্যে মন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন টিউলিপ।


এমবি//