ঢাকা, সোমবার   ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫,   মাঘ ২১ ১৪৩১

ভারতে মহাকুম্ভে হিন্দুদের জন্য খুলে দিলো মসজিদ-মাদরাসার দরজা

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৬:৩৪ পিএম, ৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ সোমবার

ভারতে প্রায়ই রাজনৈতিকভাবে মুসলিম বিদ্বেষের তীব্রতা দেখা যায়। এমন বিদ্বেষ ও সংকটের সময় মানুষের দিকে হাত বাড়িয়ে দেয়ার ফের এক প্রমাণ মিলল দেশটির উত্তর প্রদেশ রাজ্যের প্রয়াগরাজের (সাবেক এলাহাবাদ) মহাকুম্ভে। গত ২৯ জানুয়ারি পদদলিত হওয়ার ঘটনার পর হাজারও বিপন্ন ও নিরন্ন পুণ্যার্থীদের আশ্রয় প্রদানের জন্য মসজিদ, মাদরাসা ও ইমামবাড়ার দরজা খুলে দিয়েছিলেন প্রয়াগরাজের মুসলিমরা।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবর, এদিকে মহাকুম্ভ চলাকালে শহরের অনেক এলাকায় মুসলিম ব্যবসায়ীদের দোকানপাট বন্ধ রাখার জন্য অলিখিত সরকারি নির্দেশনা জারি করা হয়েছিল।

বিপন্ন মানুষের জন্য শুধু মসজিদ, মাদ্রাসাই নয়—ক্ষুধার্ত অসহায় পুণ্যার্থীদের জন্য স্থানীয় মুসলিমরাও উন্মুক্ত করেছিলেন বাড়ির আগল। আশ্রয় দেওয়ার পাশাপাশি তাঁদের জন্য নিরামিষ খাবারও রান্না করা হয় বহু পরিবারে। পুরি, সবজি, খিচুড়ি, গরম চা দেওয়ার পাশাপাশি কম্বল দেওয়া হয় শীত কাটাতে।

পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনার পাশাপাশি বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই খবর প্রাধান্য পাচ্ছে। স্থানীয় মুসলিমদের কথায়, এটাই প্রয়াগরাজের সংস্কৃতি, স্থানীয়ভাবে যা ‘গঙ্গা–যামনি তেহজিব’ বলে পরিচিত।

মুসলিম বিদ্বেষে রাজনৈতিক ইন্ধন সত্ত্বেও এই সংস্কৃতি বা মানবিকতা শুধু প্রয়াগরাজেই নয়, অন্যত্রও দৃশ্যমান। সম্প্রতি কাশ্মীরে বরফের কারণে একদল পর্যটক আটকা পড়েছিলেন। স্থানীয় মুসলিমরা তাঁদের উদ্ধার করে মসজিদে আশ্রয় দিয়েছিলেন। পরদিন উদ্ধারকারী দল আসা পর্যন্ত তাঁদের জন্য খাবার–পানীয়র ব্যবস্থা করেছিলেন।

শুধু একটি দুটি নয়, ২৯ ও ৩০ জানুয়ারির রাত ও দিন হাজারো অসহায় পুণ্যার্থীর জন্য খুলে দেওয়া হয়েছিল খুল্লাবাদ সবজি মন্ডি মসজিদ, বড়া তাজিয়া ইমামবাড়া, হিম্মতগঞ্জ দরগাহ, চক মসজিদের দরজা। নখসখোলা অঞ্চলের হাফিজ রাজ্জাব মসজিদ ও চক এলাকার জামে মসজিদে আশ্রয় দেওয়া হয় অন্তত ৫০০ জনকে। মুসলিম–অধ্যুষিত রোশনবাগ, খুল্লাবাদ, রানি মান্ডি, শাহগঞ্জ এলাকার বহু গৃহস্থ বাড়িতে আশ্রয় দেওয়া হয় রাজস্থান, তামিলনাড়ু, বিহার, হরিয়ানা থেকে কুম্ভমেলায় যাওয়া পুণ্যার্থীদের।

গণমাধ্যমের খবর, বাড়ির নারীরা এসব পুণ্যার্থীর জন্য সাধ্যমতো খাদ্য–পানীয়র ব্যবস্থা করেন। কোনো কোনো এলাকায় সেই রাতেই ভান্ডারা বা লঙ্গরের আয়োজন করা হয়।

এ সময় স্থানীয় মুসলিম ছাড়াও শিখ সম্প্রদায়ও গুরুদ্বারের দরজা খুলে দিয়েছিল। মহাকুম্ভে আসা অসহায় পুণ্যার্থীদের আশ্রয় দেয়া হয়েছিল।

এমবি//