ঢাকা, মঙ্গলবার   ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫,   মাঘ ২২ ১৪৩১

জাবি’র হলে ইন্টারনেট কানেকশনের সময় যুবক নিহত

জাবি সংবাদদাতা  

প্রকাশিত : ০৩:২০ পিএম, ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ মঙ্গলবার

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) মোশাররফ হোসেন হলে ইন্টারনেট কানেকশনের কাজ করার সময় ছাদ থেকে পড়ে এক ইন্টারনেট শ্রমিক মারা গেছেন। 

নিহত যুবক প্রীতম (১৮)র গ্রামের বাড়ি মাদারীপুর জেলায়। তিনি ইন্টারনেট সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান মাস্টারনেটের শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। 

প্রত্যক্ষদর্শীদের সূত্রে জানা যায়, মীর মোশাররফ হোসেন হলের এ ব্লকের পশ্চিম পাশে নতুন স্থাপিত আনসার ক্যাম্পে ইন্টারনেট সংযোগ দেয়ার কথা ছিল। রাত ১১টার দিকে আনসার সদস্য রবিউলকে ফোন করে সংযোগ দিতে আসেন প্রীতম। রবিউল তাকে নিচতলার কক্ষে রাউটার ও সংযোগের স্থান দেখিয়ে দিয়ে চলে যান। 

পরে ইন্টারনেটের তার টেনে আনার জন্য ছাদে উঠেন প্রীতম। ছাদের সর্বশেষ কোণায় রেলিংয়ের পাশ দিয়ে অতিক্রমের সময় ইট খসে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সে পড়ে যায় বলে ধারণা করা হচ্ছে৷ পরে তাকে অচেতন অবস্থায় সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। 

প্রীতমের সহকর্মী লিংকন বলেন, আমরা রাত দশটা থেকে একসাথে কাজ করছিলাম। ১১টার দিকে আনসারের ক্যাম্প থেকে ফোন আসলে প্রীতম ওইদিকে কাজ করতে যায়। পরে দেড় থেকে দুই ঘন্টা হয়ে গেছে সে আসে না; ফোন দেই কিন্তু ধরে না। এরপরে আশেপাশে আনসারদেরকে জিজ্ঞেস করি এখানে এসে খোঁজাখুঁজি করে দেখি প্রীতম পড়ে আছে। প্রথমে আমি ভাবছিলাম হয়তো মারা গেছে। কিন্তু ছাত্র ভাইরা বলল, যে বেঁচে আছে। পরে ওনারাই এম্বুলেন্সে করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।

মীর মশাররফ হলের ৪৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী রাহাত বলেন, সন্ধ্যা থেকে ওরা হলে ইন্টারনেটের কাজ করছিল। হঠাৎ করে রাত একটার দিকে মাস্টারনেটের মালিক আমাকে ফোন দিয়ে বলে যে, আপনাদের হলে কাজ করতে গিয়ে আমার একটা ছেলে মারা গেছে একটু দেখেন। পরে আমি হলের পেছনে এসে দেখি ও পড়ে আছে। প্রথমে মৃত ভেবে কেউ সামনে যায়নি৷ পরে ধরে দেখি পালস আছে৷ তার মুখ দিয়ে প্রচুর ফেনা বের হচ্ছিল। পরে আমরা গাড়ি ডেকে তাকে এনাম মেডিকেলে নেয়ার ব্যবস্থা করি৷ 

৪৮ ব্যাচের শিক্ষার্থী জুবায়ের শাবাব বলেন, স্বাভাবিকভাবে ছাদ থেকে পিছলে পড়লে দেয়ালের খুব কাছে থাকার কথা ছিল৷ কিন্তু অন্তত ১০ ফিট দূরে সে চিৎ হয়ে পড়েছিল৷ কোনভাবে এত দূরে তো পড়ার কথা না। আমরা বিষয়টা নিয়ে সন্দিহান। 

এদিকে আনসার সদস্য রবিউল ইসলাম বলেন, আমি রাত দশটা থেকে প্রকৌশল অফিসে ডিউটি করছিলাম। ১১টার দিকে ইন্টারনেটের লোক ফোন দিয়ে বলে আপনাদের এখানে কাজ করতে আসছি। আমি তাকে রাউটার-জিনিসপাতি দিয়ে আবার ডিউটিতে চলে যাই। 

এ ব্যাপারে অধ্যাপক মাহমুদুর রহমান বলেন, রাত ১টার দিকে খবর পেয়ে কোয়ার্টার থেকে বের হই। ছাত্ররা তখন তাকে এম্বুলেন্সে করে নিয়ে যাচ্ছিল। তখনই প্রক্টরিয়াল টিম ও নিরাপত্তা কর্মীরা আসেন। প্রাথমিকভাবে, ছাদের রেলিংয়ের খসে যাওয়া ইট দেখে ধারণা করছি, তার টানতে গিয়ে সে হয়তো পা পিছলে পড়ে মারা গেছে।

সাভারের এনাম মেডিকেলের দায়িত্বরত চিকিৎসক বলেন, আমাদের এখানে দেড়টার দিকে তাকে নিয়ে আসা হয়। জরুরি বিভাগে ইসিজি করে মৃত বলে নিশ্চিত হই আমরা। তিনি অন্তত ৩০ মিনিট আগে মারা যান।

এএইচ