বইমেলায় `জুলাই গণঅভ্যুত্থান`
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৯:১১ পিএম, ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ মঙ্গলবার
জুলাই গণঅভ্যুত্থান বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে এক যুগান্তকারী অধ্যায়। ছাত্র-জনতার অদম্য শক্তি, গণতন্ত্রের জন্য লড়াই এবং সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার অনন্য উদাহরণ হয়ে উঠেছে এই অভ্যুত্থান। ফ্যাসিস্ট হাসিনার বিরুদ্ধে জনগণের বিক্ষোভ, সরকারবিরোধী আন্দোলনের তীব্রতা, গণমানুষের অংশগ্রহণ এই ঘটনাকে অনন্য করে তুলেছে।
এই ঘটনা নিয়ে আফরোজা খাতুনের বই ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান’ এবারের বইমেলায়।
এই গ্রন্থটিতে গণঅভ্যুত্থানের ধারণা, ইতিহাস, পটভূমি, টাইমলাইন এবং তার পরিণতির বিস্তৃত চিত্র তুলে ধরেছে। এতে উঠে এসেছে আন্দোলনের প্রেক্ষাপট, সুশীল সমাজের ভূমিকা, ছাত্র -জনতার অগ্রণী ভূমিকা এবং সাধারণ জনগণের দৃঢ় প্রতিরোধ।
গ্রন্থটির অন্যতম দিক হলো ২০২৫ সালের ১৫ জানুয়ারি, জুলাই গণঅভ্যুত্থান-২০২৪ এর শহীদদের গেজেট সংযুক্ত করা হয়েছে।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মূলে ছিল রাজনৈতিক দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার এবং সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার মানের ক্রমাবনতি। নানাবিধ বৈষম্য, এবং সামাজিক ন্যায়বিচারের অভাব জনগণের ক্ষোভকে তীব্র করে তোলে।
এখানে দেখানো হয়েছে কিভাবে জনগণ তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য রাস্তায় নেমে আসে। এতে উঠে এসেছে গুরুত্বপূর্ণ কিছু প্রশ্ন—কেন রাষ্ট্রীয় কাঠামো এত দুর্বল হয়ে পড়েছিল যে, জনগণকে এমন গণঅভ্যুত্থানর দিকে এগিয়ে যেতে হলো?
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে তরুণ সমাজের ভূমিকা ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শিক্ষিত তরুণ-তরুণীরা তাদের সোচ্চার কণ্ঠ, প্রযুক্তি ব্যবহারের দক্ষতা এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের মাধ্যমে আন্দোলনকে সুসংহত করে তুলেছিল। তারা নেতৃত্ব দিয়েছিল এমন এক আন্দোলনে, যেখানে প্রতিটি শ্রেণি-পেশার মানুষ একত্র হয়েছিল।
এছাড়াও এখানে রাষ্ট্রের প্রতিক্রিয়া, প্রশাসনিক দমনপীড়ন, এবং গণমাধ্যমের ভূমিকা বিশ্লেষণ করেছে।
গ্রন্থটি কেবল ইতিহাস নয়; এটি একটি প্রামাণ্য দলিল। এতে ব্যবহৃত হয়েছে সরাসরি অংশগ্রহণকারীদের অনেকের বক্তব্য, সংবাদ প্রতিবেদন এবং সমসাময়িক গবেষণার তথ্য।
জুলাই গণঅভ্যুত্থান আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে, যখন মানুষ একত্রিত হয়, তাদের চাহিদা এবং অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সংগঠিত হয়, তখন ক্ষমতার কাঠামো কেঁপে ওঠে।
এই গ্রন্থটি শুধু ঘটনার প্রামাণ্য বিবরণ নয়; এটি ভবিষ্যতের জন্য একটি শিক্ষা। এতে প্রজন্মের কাছে একটি বার্তা রয়েছে—মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য, স্বাধীনতার জন্য এবং ন্যায়বিচারের জন্য, সংগ্রাম সবসময় প্রাসঙ্গিক।
এএইচ