ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫,   মাঘ ২৩ ১৪৩১

৩২ নম্বরে ঢুকে পড়েছে ছাত্র-জনতা, চলছে ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৯:১১ পিএম, ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ বুধবার | আপডেট: ০৯:১২ পিএম, ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ বুধবার

ধানমন্ডি ৩২ নম্বর বাড়িতে মিছিল নিয়ে ঢুকে পড়েছে ছাত্র-জনতা। ভারতে অবস্থানরত আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পূর্বঘোষিত অনলাইন বক্তব্যকে ঘিরে উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে ছাত্র-জনতা মিছিল নিয়ে সেখানে ঢুকে পড়েছে। একই সঙ্গে সেখানে ভাঙচুর চালাতে দেখা গেছে। এছাড়া সেখানে অগ্নিসংযোগও করা হয়েছে। 

বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) রাত ৮টার দিকে বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে বিক্ষুব্ধরা বাড়িটির ভেতর ঢুকে পড়েন।

এর আগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা ঘোষণা করেন, শেখ হাসিনা কোনো বক্তব্য দিলে ধানমন্ডি ৩২ নম্বর বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হবে। পরে ধানমন্ডি ৩২ নম্বর অভিমুখে মিছিল কর্মসূচি ঘোষণা করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।

রাত ৮টায় শাহবাগ থেকে এ মিছিল শুরু করার কথা থাকলেও বিকাল থেকেই ধানমন্ডি ৩২ এলাকায় জড়ো হতে থাকে ছাত্র-জনতা। সন্ধা হতে হতে সেখানে ব্যাপক জনসমাগম দেখা যায় এবং ফ্যাসিবাদ বিরোধী নানা স্লোগান দিতে শোনা যায়।

একপর্যায়ে উত্তেজিত ছাত্র-জনতা ধানমন্ডি ৩২ নম্বর বাড়ির গেট ভেঙে ভেতরে ঢুকে পড়ে এবং সেখানে ভাঙচুর শুরু করে। করে অগ্নিসংযোগ। 

এদিকে বিকেল থেকে ধানমন্ডি ৩২ নম্বর অভিমুখে মিছিল কর্মসূচিকে সমর্থন দিয়ে অনেকেই ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন। কেউ লিখেছেন, ‘থাকবে না- ফ্যাসিবাদের আঁতুড়ঘর ধানমন্ডি ৩২ নাম্বার থাকবে না’। এছাড়া বুলডোজার মিছিলের একটি পোস্টারে ছেয়ে গেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম।

এমন পরিস্থিতিতে বুধবার সন্ধায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ ফেসবুকে লেখেন, ‘রাতে দেশ ফ্যাসিবাদের তীর্থভূমি মুক্ত হবে’। জুলাই আন্দোলনের অন্যতম  সমন্বয়ক ও অন্তর্বর্তী সরকারের যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ফেসবুকে লেখেন – ‘উৎসব হোক!’

হাসনাত আবদুল্লাহ এক বক্তব্যে বলেন, আমরা হাসিনা চ্যাপ্টার, ছাত্রলীগ চ্যাপ্টার ৫ আগস্ট ক্লোজ করে দিয়েছি। ৫ আগস্টের পর ফ্যাসিবাদবিরোধী যে দলগুলো আছে, তাদের সঙ্গে আমাদের মতের পার্থক্য হবে, রাজনৈতিক মতপার্থক্য হবে, বিভাজন থাকবে। কিন্তু এক জায়গায় স্পষ্ট, হাসিনা ও ফ্যাসিবাদের পুনর্বাসন কোনোভাবে এ দেশে হতে দেওয়া হবে না।

এর আগে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার ছয় মাস পূর্ণের দিনে বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) রাত ৯টায় ছাত্রসমাজের উদ্দেশে বক্তব্য দেবেন শেখ হাসিনা। আর এই ভাষণ প্রচারিত হবে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ‘বাংলাদেশ ছাত্রলীগে’র অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ থেকে।

এরপরেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ভেরিফায়েড পেজে বলা হয়, বাংলাদেশের ছাত্রদের উপর নৃশংসতম গণহত্যা চালানোর পরে ছাত্রসমাজের উদ্দেশ্যেই দিল্লীতে বসে ভাষণ দেয়ার মত ধৃষ্টতা দেখাচ্ছে হাসিনা। এমন নির্লজ্জতার প্রতিবাদে বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) রাত ৯ টায় (যখন হাসিনার ভাষণ দেয়ার কথা) ঢাকা শহরের প্রত্যেক মোড়ে মোড়ে জুলাই গণহত্যার ভিডিও, ডকুমেন্টারি, ছবি প্রদর্শন করবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। আপনারা সারাদেশের প্রত্যেকটি মোড়ে মোড়ে, বাজার-হাটে জুলাই গণহত্যার ভিডিও প্রচার করুন। 

এতে আরও বলা হয়, বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) রাত ৯টায় বাংলাদেশের সকল সরকারি-বেসরকারি টিভি চ্যানেলে "জুলাই গণঅভ্যুত্থান"-এর উপরে বিশেষ বুলেটিন প্রচার করার আহ্বান জানানো হচ্ছে। আশারাখি, জুলাই গণঅভ্যুত্থানপন্থী ছাত্র-জনতার পাশে মিডিয়ার সরব উপস্থিতি দেখা যাবে।

আপর এক পোস্টে বলা হয়, যেসব মিডিয়া বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) হাসিনার বার্তা প্রচারের দুঃসাহসিকতা দেখাবে তাদেরকে আমরা জাতীয় দালাল হিসেবে চিহ্নিত করবো।

এসএস//