ঢাকা, সোমবার   ১০ মার্চ ২০২৫,   ফাল্গুন ২৬ ১৪৩১

লাভ হবে না জেনেও হাসিনা হাজার কোটি টাকা নষ্ট করলেন

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১২:২৫ পিএম, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ মঙ্গলবার

আমি প্রধানমন্ত্রীকে খুব ভাল মানুষ এবং একজন দেশপ্রেমী জানতাম। আমার অনেক দিনের ধারণা মুহূর্তের মধ্যেই ভেঙ্গে শেষ হয়ে গেল। যে মানুষ একটা গরীব দেশের প্রধানমন্ত্রী এবং তার কাছে হাজার কোটি টাকা নষ্ট হবে, এটা কোনো ব্যাপার না।

ফেসবুকে দেওয়া দীর্ঘ পোস্টে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাসভবন গণভবনে এক বৈঠকের তিক্ত অভিজ্ঞতা জানালেন নদী গবেষক ড. রুকনুল ফেরদৌস।

পাঠকদের জন্য তাঁর পোস্টটি হুবহু তুলে দেওয়া হল-

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে একদিন 
(সতর্কীকরণ ; অনেক বড় লেখা। সংক্ষিপ্ত করার চেষ্টা করেছি। এর থেকে সংক্ষিপ্ত করতে পারলাম না বলে দুঃখিত)।

(১) 
এক সময় আমি কাজ করতাম ডঃ মমিনুল হক সরকার স্যারের সাথে। ডঃ মমিনুল হক সরকার স্যার হলেন, বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান একজন নদী বিশেষজ্ঞ। তাঁর মাথাটা একটা আস্ত কম্পিউটার। আমাদের যে কাজটা করতে অনেক সময় লাগত, সেটা তিনি চোখের নিমিষে বলে দিতে পারতেন শুধু মাত্র সেটেলাইট ইমেজের দিকে একটু তাকিয়ে থেকে। স্যারের সাথে কাজ করার সুযোগ পাওয়া একটা ভাগ্যের ব্যাপার। সেই হিসেবে আমি অনেক ভাগ্যবান।   

অনেক বছর আগের কথা। তৎকালীন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী, বাংলাদেশের নদী নিয়ে একটা প্রোজেক্টর সূচনা করেছিলেন। প্রোজেক্টের নাম ছিল “ক্যাপিটাল ড্রেজিং”। এটার জন্য একটা উচ্চ পর্যায়ের কমিটিও ছিল। তো “ক্যাপিটাল ড্রেজিং” প্রোজেক্ট শুরুর আগে দুইটা পাইলট প্রোজেক্ট নেওয়া হল যমুনা নদীতে। একটা সিরাজগঞ্জ এবং আরেকটা কুড়িগ্রাম জেলাতে। ঐ উচ্চ পর্যায়ের কমিটি, ডঃ মমিনুল হক সরকার স্যারকে  দায়িত্ব দিয়েছিল সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীতে (একটা নির্দিষ্ট জায়গায়) ড্রেজিং ফলপ্রসূ হবে কি না তা গবেষণা করে রিপোর্ট আকারে জানানোর জন্য। ঐ রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে অনেক কিছুর ভবিষ্যৎ ঠিক হবে।

(২) 
ডঃ মমিনুল হক সরকার স্যার অফিসে এসে আমাকে তাঁর রুমে ডাকলেন এবং কি করতে হবে বিস্তারিত বললেন। স্যারের তত্তাবধানে আমি এবং স্যার দুইজনে মিলে গবেষণা করে রিপোর্টের কাজ শেষ করলাম। স্যার এবং আমি অনেক সময় নিয়ে এই কাজ করছিলাম, কেননা এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ কাজ ছিল। 

আমাদের গবেষণার ফলাফল ছিল “যমুনা নদীর ঐ নির্দিষ্ট জায়গায় ড্রেজিং ফলপ্রসূ হবে না”। 

এখানে কোটি কোটি টাকার ব্যাপার এবং ড্রেজিং করলে সম্পূর্ণ টাকাই নষ্ট হবে, তাই আমরা খুবই সতর্ক ছিলাম। স্যার আমাকে সঙ্গে নিয়ে পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ের উদ্দেশে রওয়ানা দিলেন। একটা গুরুত্বপূর্ণ মিটিং ছিল। যেখানে উপস্থিত ছিলেন তৎকালীন পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রী, সচিব, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক সহ আরও অনেকে।     
   
ডঃ মমিনুল হক সরকার স্যার আমাদের গবেষণার রিপোর্ট উপস্থাপন করলেন। একটা পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশান করলেন এবং বুঝিয়ে দিলেন যে, কেনো  যমুনা নদীর ঐ নির্দিষ্ট জায়গায় ড্রেজিং ফলপ্রসূ হবে না। মিটিং এ উপস্থিত তৎকালীন পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রী ঐ রুম থেকে চলে যাবার পর, পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ের সচিব বললেন “যেভাবেই হোক ড্রেজিং ফলপ্রসূ হবে এভাবে রিপোর্ট তৈরি করতে। এটা উপরের নির্দেশ। রিপোর্ট আজকের মধ্যেই দিতে হবে কেননা আগামীকাল রিপোর্ট যাবে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে”। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালককে দায়িত্ব দিলেন বিষয়টা তদারকি করতে।
 
(৩)
আমরা তখনই চলে গেলাম বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালকে্র কার্যালয়ে। সেখানে বসে আমাদের বাধ্য করা হল রিপোর্টটা পরিবর্তন করতে। ডঃ মমিনুল হক সরকার স্যার অনেক বুঝানোর বৃথা চেষ্টা করলেন কিন্তু কোন লাভ হল না। স্যার আমার পাশে মুখ গোমড়া করে বসে ছিলেন এবং আমি নিজ হাতে ঐ রিপোর্টটা পরিবর্তন করলাম। হিসাব নিকাশ থেকে শুরু করে সব কিছু পরিবর্তন করা হল। পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশানও পরিবর্তন করা হল। আমাদের থেকে রিপোর্টটা নিয়ে মহাপরিচালক আবার রওয়ানা দিলেন পানি সম্পদ মন্ত্রBfলয়ের দিকে আর আমরা আমাদের অফিসের দিকে। 

(৪)
ডঃ মমিনুল হক সরকার স্যার এবং আমার, আমাদের দুই জনেরই মন খুব খারাপ। স্যার গাড়িতে অনেক্ষন চুপ করে বসে ছিলেন। কোন কথা বলছিলেন না। তখন আমি স্যার কে বললাম, আমরা এটা হতে দিতে পারি না। এইভাবে দেশের কোটি কোটি টাকা ক্ষতি হবে এবং তা আবার আমাদের হাত দিয়েই? এটা কোনভাবেই মানা যায় না। আমি স্যারকে বললাম হয়তবা প্রধানমন্ত্রী এটার কিছুই জানেন না। আমাদের উচিত যেকোন ভাবেই হোক প্রধানমন্ত্রীকে এটা জানানো। স্যার তখন আমাকে বললেন কোন ভাবে যদি পরিকল্পনা মন্ত্রীকে বিষয়টা জানানো যায় তবে কাজ হতে পারে। স্যার তখন কাকে ফোন করেছিলেন মনে নাই, তবে আমাদের ভাগ্য ভাল। পরের দিন সন্ধ্যায় পরিকল্পনা মন্ত্রীর বাসায় একটা সাক্ষাতের সময় পাওয়া গেল।

(৫)
পরের দিন সন্ধ্যায় পরিকল্পনা মন্ত্রীর বাসায় ডঃ মমিনুল হক সরকার স্যার গিয়েছিলেন এবং মন্ত্রী মহোদয়কে বোঝাতে সক্ষম হয়েছিলেন যে, “যমুনা নদীর ঐ নির্দিষ্ট জায়গায় ড্রেজিং ফলপ্রসূ হবে না”। কিন্তু “ড্রেজিং ফলপ্রসূ হবে” এই রিপোর্ট তো প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে চলে গেছে। এখন উপায় কি? মন্ত্রী মহোদয় সরকার স্যার কে বললেন, আপনারা আবার নতুন করে রিপোর্ট ও প্রেজেন্টেশান তৈরি করুন এবং প্রধানমন্ত্রীর সাথে মিটিং এর দিন ১০/১২ কপি নতুন রিপোর্টটা নিয়ে আসবেন। যেহেতু একটা রিপোর্ট চলে গেছে তাই এটা আপাতত কাউকে কিছু বলার দরকার নাই। আমি সুযোগ পেলে প্রধানমন্ত্রীকে বিষয়টা অবগত করব। মিটিং এর দিন রিপোর্টটা সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর হাতে দিবেন। আমি মিটিং এর দিন প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুমতি নিয়ে আপনাকে রিপোর্টটা দিতে বলব। আশা করি প্রধানমন্ত্রী মানা করবেন না।

সরকার স্যার ঐ দিন সন্ধ্যায়ই আমাকে ফোন করে সব বললেন। পরদিন সকালে সরকার স্যার আমাদের অফিসের তৎকালীন নির্বাহী পরিচালক স্যারকে বললেন যে আমরা আবার নতুন করে রিপোর্ট করব। সিদ্ধান্ত হল আমি এই কাজ করব অফিস সময়ের শেষে। অফিস টাইম এ এই কাজ করা যাবে না। আমার মনে আছে, আমি ৩ দিন, অফিস টাইম এর পরে কাজ করেছিলাম রাত দুইটা/তিন টা পর্যন্ত।
 
(৬)
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মিটিং এর দুই দিন আগে ডঃ মমিনুল হক সরকার স্যার হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। স্যার হার্ট এর রোগী ছিলেন। স্যার আমাকে তাঁর রুমে ডেকে বললেন, উনার পক্ষে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মিটিং এ যাওয়া সম্ভব না। স্যার এর ইচ্ছা, আমি যেন যাই। স্যার বললেন, আমার বিশ্বাস তুমি পারবা। তুমি প্রধানমন্ত্রীকে বুঝাতে পারবা। আর পরিকল্পনা মন্ত্রী তোমাকে সাপোর্ট দিবে। আমি এক কথায় বললাম, আমি পারব এবং এই ড্রেজিং যাতে না হয়, সেই ভাবেই বোঝানোর চেষ্টা করব। 

কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে তো চাইলেই যাওয়া যায় না। অনেক অনুমতির ব্যাপার আছে। স্যার, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে নাম পরিবর্তন করে তাঁর জায়গায় আমার নাম দেয়ার জন্য অনুরোধ  করলেন। মন্ত্রণালয় রাজি হয়ে, অনুমতির জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে আমার নাম প্রস্তাব করল এবং তা অনুমোদিত হল।     
ডঃ মমিনুল হক সরকার স্যারের সহযোগিতায়, আমি খুব ভাল করে নিজেকে প্রস্তুত করলাম। 

(৭) 
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মিটিং এর দিন সকালে ডঃ মমিনুল হক সরকার স্যার এবং নির্বাহী পরিচালক স্যার এর কাছে অনুমতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের দিকে রওনা দিলাম। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে, তিন স্তরের সিকিউরিটি চেক পার করে একটা হল রুমে গিয়ে আমার জন্য নির্ধারিত আসনে গিয়ে বসলাম। আমি যেহেতু নতুন, তাই আমাকে বলে দেয়া হল কখন কখন কথা বলতে পারব, কিভাবে কথা বলতে হবে, কিভাবে কথা বলার জন্য অনুমতি নিতে হবে, অনেক নিয়ম কানুন। 

পরিকল্পনা মন্ত্রী ঐ হল রুমে প্রবেশ করা মাত্র আমি তাঁর কাছে গিয়ে সালাম দিয়ে আমার রিপোর্টগুলো তাঁকে দিতে চাইলে তিনি বললেন, আপনি নিজের হাতে এক কপি প্রধানমন্ত্রী কে দিবেন এবং বাকি কপিগুলা সামনের সারিতে বসা বাকি মন্ত্রিদের দিবেন। আমাকে উনার নির্দেশের জন্য অপেক্ষা করতে বললেন।

একে একে অনেক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও সচিবগণ এসে হাজির হলেন। ঐ মিটিং এ তৎকালীন পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক এবং বি আই ডাবলু টি এ এর চেয়ারম্যানও উপস্থিত ছিলেন। একটু পর প্রধানমন্ত্রী এসে হাজির হলেন। আগে থেকেই বিভিন্ন টিভি চ্যানেলের সাংবাদিকগণ উপস্থিত ছিল। প্রধানমন্ত্রী আসার পর তারা কিছু ভিডিও ফুটেজ নিয়ে চলে গেল। তারপর মিটিং শুরু হল।

শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী সংক্ষিপ্তভাবে কিছু বলার পর পরিকল্পনা মন্ত্রীকে ঐ দিনের মিটিং এর বিষয় উত্থাপন করতে বললেন। মন্ত্রী মহোদয় শুরু করলেন এবং কিছুক্ষণ বলার পর বললেন যে আমাদের পানি বিশেষজ্ঞদের গবেষণায় কিছু পরিবর্তন হয়েছে, যা আগের রিপোর্টের থেকে ভিন্ন এবং সময় স্বল্পতার জন্য আমরা তা আগে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠাতে পারি নাই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অনুমতি দিলে উপস্থিত একজন পানি বিশেষজ্ঞ তা আপনার সামনে উপস্থাপন করবেন। 

প্রধানমন্ত্রী অনুমতি দিলেন এবং পরিকল্পনা মন্ত্রী আমাকে হাতের ইশারায় রিপোর্ট দিতে বললেন। 

আমি আমার সামনের রাখা রিপোর্টগুলা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর দিকে এগিয়ে গেলাম। তার ডান পাশে দাঁড়িয়ে সালাম দিয়ে এক কপি তার হাতে দিলাম। উনি হাতে নিয়ে এক এক করে রিপোর্টের পাতা উল্টাতে লাগলেন এবং পুরা রিপোর্টটা একটু বোঝার চেষ্টা করলেন। ঐ সময় সবাই চুপ করে ছিল। যেন পিন পতন নীরবতা। প্রধানমন্ত্রী রিপোর্টটা তার টেবিলে রেখে আমাকে বসতে বললেন। আমি জিজ্ঞেস করলাম বাকি রিপোর্টগুলো অন্য মন্ত্রীদের দিব কি না? উনি অনুমতি দিলেন এবং আমি বাকি রিপোর্টগুলো মন্ত্রীদের বিতরণ করে, আমার জন্য নির্ধারিত আসনে গিয়ে বসলাম।

মিটিংয়ের এক পর্যায়ে গিয়ে আমাকে অনুমতি দেয়া হল প্রেজেন্টেশন দেবার জন্য। আমি দিলাম এবং পরিস্কারভাবেই সব বুঝিয়ে দিলাম যে, ড্রেজিং ফলপ্রসূ হবে না। উপস্থিত সবাই দেখল এবং শুনল। এটা নিয়ে অনেক আলোচনা হল। আমার স্পষ্ট মনে আছে, কৃষিমন্ত্রী এবং পরিকল্পনা মন্ত্রী ছাড়া আর কেউ আমাকে সাপোর্ট করে নাই। 

প্রধানমন্ত্রী অনেক কথা বললেন এবং শেষে বললেন, “ড্রেজিং হবে এবং এটাই আমার সাফ কথা। আমি আর কিছু শুনতে চাই না।”

আমি প্রচণ্ড অবাক হয়েছিলাম সেদিন। আমি প্রধানমন্ত্রীকে খুব ভাল মানুষ এবং একজন দেশপ্রেমী জানতাম। আমার অনেক দিনের ধারণা মুহূর্তের মধ্যেই ভেঙ্গে শেষ হয়ে গেল। যে মানুষ একটা গরীব দেশের প্রধানমন্ত্রী এবং তার কাছে হাজার কোটি টাকা নষ্ট হবে, এটা কোন ব্যাপার না। এটা কোন কথা হল? 

মনে অনেক প্রশ্ন আর হতাশা নিয়ে চুপ করে বসেছিলাম। আর কোন কথা বলি নাই। 

(৮)
মিটিং শেষে প্রধানমন্ত্রী চলে যাবার পর এক এক করে যখন সবাই চলে যাচ্ছিল, ঠিক সেই সময় পানি মন্ত্রণালয়ের সচিব আমার কাছে এসে বললেন বাইরে গিয়ে যাতে আমি উনার জন্য অপেক্ষা করি। কথা বলবেন। 

বাইরে এসে আমি পানি মন্ত্রণালয়ের সচিবের জন্য অপেক্ষা করছিলাম তখন উনি বের হয়ে আসলেন এবং আমাকে বললেন উনার গাড়িতে বসতে। সচিব এর গাড়িতে তার পাশে বসে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে বের হলাম। আর তখনই শুরু হল আমার উপর আক্রমণ। এমন কোন খারাপ গালি নাই যে সচিব আমাকে দেয় নাই। খারাপ ভাষায় অজস্র গালিগালজ করছিলেন।

একবার জিজ্ঞেস করলেন, এই যে রিপোর্ট পরিবর্তন করলাম, তা তাকে জানালাম না কেন? বললাম, সত্যিটা প্রধানমন্ত্রীর জানা উচিত, তাই রিপোর্ট পরিবর্তন করেছি। 

এ কথা শোনার পর সচিব তার ড্রাইভারকে বললেন, গাড়ী থামাতে। মাঝ রাস্তায়, বিজয় সরণির কাছে গাড়ী থামলে সচিব আমাকে এক প্রকার ঘাড় ধাক্কা দিয়ে গাড়ী থেকে নামিয়ে দিলেন।  

মন মেজাজ প্রচণ্ড খারাপ হয়েছিল। হাঁটতে হাঁটতে ফার্মগেট চলে গেলাম। একটা সিএনজি ট্যাক্সি নিয়ে অফিসে ফেরত আসলাম। সব ঘটনা ডঃ মমিনুল হক সরকার স্যার এবং নির্বাহী পরিচালক স্যারকে বললাম। দুই জনই একই পরামর্শ দিলেন। এই ঘটনা এইখানেই শেষ। আমি যেন কাউকে না বলি। 

(৯)
পরবর্তীতে যমুনা নদীতে ঐ জায়গায় ড্রেজিং হয়েছিল এবং ড্রেজিং করে কোন লাভ হয় নাই।

এএইচ