‘সাবেক মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রী মোজাম্মেল হক ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা!’
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৩:২৬ পিএম, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ রবিবার

বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক টাকার বিনিময়ে তিনি অসংখ্য ব্যক্তিকে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সনদ দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগকারীরা জানান, টাকা দিলেই সহজেই মিলত মুক্তিযোদ্ধা সনদ।
এদিকে সাবেক মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী মোজাম্মেল হককে হঠাৎ মুক্তিযোদ্ধা বলে অভিহিত করেছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য, সাবেক এমপি হাসান উদ্দিন সরকার।
তিনি বলেন, মোজাম্মেল হক ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা। এটা নিয়ে কোনো দ্বিমত নেই। বরং বলতে পারেন তাহলে তিনি মুক্তিযোদ্ধা হলেন কীভাবে? ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতার অপব্যবহার করতে তাকে ব্ল্যাঙ্ক চেক দিয়েছিল। তিনি (আ ক ম মোজাম্মেল হক) মুক্তিযুদ্ধের তালিকায় নিজে নাম ঢুকিয়ে মুক্তিযোদ্ধা হয়েছেন। সংসদে এ নিয়ে সমালোচনা হয়েছে। সেখানে মোজাম্মেল হক মুক্তিযুদ্ধের সাক্ষী হিসাবে আমার নাম উল্লেখ করেছেন। আমি দ্বিধাহীন ভাষায় বলছি, মোজাম্মেল হক কোথাও যুদ্ধ করেননি এবং তিনি মুক্তিযোদ্ধা নন।
অন্যদিকে বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ জবি উল্লাহ (গেজেট ১০৭ নং) জানান, ১৯৮৬ সালের লাল মুক্তিবার্তায় মোজাম্মেল হকের নাম নেই। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে গেজেট করে সেখানে তাকে মুক্তিযোদ্ধা বানিয়ে দিল। এটা জালিয়াতি। প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা করে ভুয়াদের বাতিলের দাবি জানাই।
১৯৭১ সালের ১৯ মার্চ গাজীপুরের জয়দেবপুরে পাক হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে সশস্ত্র প্রতিরোধ যুদ্ধের অর্জন আ ক ম মোজাম্মেল হক ছিনতাই করেছেন বলে জানান জবি উল্লাহ।
তিনি বলেন, এই যুদ্ধের নেতৃত্বে ছিলেন হাসান উদ্দিন সরকার, হাবিবুল্লাহ, নজরুল ইসলাম খান, সৌমেন্দ্র গোস্বামী, সহিদুল ইসলাম পাঠান, মোতালিব, সহিদুল্লাহ বাচ্চু, মো. রফিকুল ইসলাম, শেখ আবুল হোসাইন, আব্দুস সাত্তার। হাজার হাজার মানুষের মধ্যে মোজাম্মেল হকও ছিলেন। অথচ ইতিহাস বিকৃত করে পুরো কৃতিত্ব নিলেন আ.ক.ম. মোজাম্মেল হক।
এছাড়া ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সনদ বিক্রি করে মোজাম্মেল হক হাজার কোটি টাকা ইনকাম করেছেন-এমন দাবি করে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) সদস্য খ ম আমীর আলী বলেন, তার (মোজাম্মেল হক) মন্ত্রীর মেয়াদে সারা দেশে কমপক্ষে ২৫ হাজার ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা বানিয়েছে। ইতোমধ্যে ১১ হাজার চিহ্নিত করতে পেরেছে মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়। বাকি ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা শনাক্তে কাজ করছে অন্তর্বর্তী সরকার।
তিনি আরও বলেন, ১৯৭১ সালের আগে মোজাম্মেল হক বিএ এবং এমএ পাশ করেন ১৯৯৪ সালে। কিন্তু তিনি মুক্তিযুদ্ধের নথিতে টেম্পারিং করে তার শিক্ষাগত যোগ্যতার ঘরে লিখেছেন এমএ এলএলবি যা শুধু অসম্ভবই নয়, কল্পনাতীত। ক্ষমতার অপব্যবহার করে তিনি এসব করেছেন।
এসএস//