সংস্কার নিয়ে বিতর্ক দেশবিরোধী শক্তিকে সুযোগ করে দেবে: তারেক রহমান
আশরাফুল ইসলাম নূর, খুলনা
প্রকাশিত : ০৬:০৮ পিএম, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ সোমবার | আপডেট: ০৬:৪৭ পিএম, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ সোমবার

দেশে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার ওপর গুরুত্ব দিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যার তারেক রহমান বলেছেন, সংস্কার নিয়ে অবান্তর আলোচনা করে মূল কাজকে নষ্ট করা হচ্ছে। নিজেদের মধ্যে অযাচিত তর্ক-বিতর্কের মাধ্যমে এমন কোন পরিস্থিতি উদ্ভব না হয়, যাতে বাংলাদেশের ভালো চায়না এমন শক্তি আবারও সুযোগ পায়।
সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) খুলনা মহানগর বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।
নগরীর সার্কিট হাউজ ময়দানে দীর্ঘ ১৬ বছর পর অনুষ্ঠিত কাউন্সিলকে ঘিরে নেতাকর্মীদের ঢল নামে। সকাল থেকেই নানা আনুষ্ঠানিকতায় কর্মসূচি শুরু হয়। দুপুর সাড়ে ১২টায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হন তারেক রহমান।
প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি বলেন, দেশের অধিকাংশ মানুষ মনে করে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন হলে বিএনপির রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পাবে। তবে এজন্য বসে থাকলে চলবে না। নিজেদেরকে তৈরি করতে হবে। ব্যক্তিস্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে দেশের জন্য কাজ করতে হবে।
শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এবং দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে দেখে অনুপ্রাণিত হওয়ার জন্য দলের নেতাকর্মীদের আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, জনগণ আমাদেরকে আবারও সুযোগ দিলে অতীতের অসমাপ্ত কাজগুলো শেষ করবে বিএনপি।
রাষ্ট্র সংস্কারে বিএনপির রুপরেখা ৩১ দফাতে দেয়া হয়েছে উল্লেখ করে বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, কৃষি, শিল্প সহ সব সেক্টরে বিএনপি কাজ করবে। যুক্তরাজ্যে মানুষের স্বাস্থ্য সেবার সব দায়িত্ব রাষ্ট্রের। তবে সেই জায়গায় পৌঁছাতে তাদের ৭৭ বছর লেগেছে। আমরা বাংলাদেশের মানুষের জন্য সেই ব্যবস্থা গড়ে তুলবো।
অভিযোগ করে তারেক রহমান বলেন, স্বৈরাচার আমাদেরকে খাদের কিনারে পৌঁছে দিয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছে। তাদের শাসনামলে দেশের মানুষ প্রায় সবাই নির্যাতিত ছিল। মিথ্যা মামলা, গুম, খুন দিয়ে হয়রানি করা হয়েছে। গণতন্ত্রকে ধ্বংস করা হয়েছে। চোদ্দশ’ মানুষ শহীদ হয়েছেন মুক্ত বাংলাদেশ উপহার দেওয়ার জন্য। তাদের প্রত্যাশিত দেশ গড়তে দরকার স্থিতিশীলতা।
নির্বাচনে ভোট ব্যবস্থার ওপর গুরুত্ব দিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, দলে যতো বেশি গণতন্ত্রের চর্চ্চা করা হবে ততো ভালো মানুষ পর্যায়ক্রমে নেতৃত্বে আসতে পারবে। একই ভাবে দেশে গণতন্ত্র চর্চ্চা হলে দেশ ভালো নেতৃত্ব পাবে। গণতন্ত্রের স্বপক্ষের শক্তি হিসেবে বিএনপির প্রতিটি কর্মীকে অব্যাহতভাবে দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করতে হবে। মানুষের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করতে হবে।
জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠার পর প্রথম কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছিল খুলনাতে। অনেক বছর পরে আবারও খুলনায় কাউন্সিলে থাকতে পেরে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন তারেক রহমান।
এরআগে সকাল সোয়া ১০টার দিকে জাতীয় সঙ্গীত ও দলীয় সঙ্গীত পরিবেশন, জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন এবং বেলুন ফেস্টুন ও কবুতর উড়িয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান। বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী নিতাই রায় চৌধুরী।
খুলনা মহানগর বিএনপি'র আহবায়ক শফিকুল আলম মনার সভাপতিত্বে সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য কন্ঠশিল্পী বেবী নাজনীন, খুলনা বিভাগীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল, তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, গবেষণা সম্পাদক কৃষিবীদ শামীমুর রহমান শামীম, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুন্ডু, সাবেক এমপি সৈয়দা নার্গিস আলী, খুলনা জেলা বিএনপির আহবায়ক মনিরুজ্জামান মন্টু, কেএম হুমায়ুন কবির, হাফিজুর রহমান মনি, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আলী বাবু, মুর্শিদ কামাল, কাজী মিজানুর রহমান বক্তব্য রাখেন।
এএইচ