ঢাকা, মঙ্গলবার   ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫,   ফাল্গুন ১৩ ১৪৩১

ছাত্রদের নতুন দলের শীর্ষ পদ, সদস্য ও প্রতীক নিয়ে যা জানা গেল

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:৪৩ এএম, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ মঙ্গলবার

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্র নেতাদের নতুন রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশের দিনেই দলটির নাম, নেতৃত্ব ও কমিটি ঘোষণা করা হতে পারে। তবে দলের নির্বাচনি প্রতীক কি হবে, সেটি এখন অপ্রকাশিত রাখা হতে পারে। 

আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছে নতুন এই দল।

দলটির শীর্ষ পদ থাকছে ছয়টি। যাত্রার শুরুতে আহ্বায়কের নেতৃত্বে ছয়টি শীর্ষ পদসহ দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সংখ্যা হবে ১০০ থেকে ১৫০ জন। দলের আত্মপ্রকাশের দিনে এই কমিটি ঘোষণা করা হতে পারে।

পরে দলটির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সংখ্যা বাড়িয়ে ৩০০ থেকে ৫০০ জন করা হতে পারে।

আর এই কমিটি নিয়েই নির্বাচনের প্রস্তুতি নেবে দলটি।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণার পর দলের কাউন্সিল করতে সময় লাগতে পারে দুই বছর। সেজন্য আহ্বায়ক কমিটিই দলকে এগিয়ে নিয়ে নির্বাচনে যাবে।

"কাউন্সিল করার পর সেখানে যে সাংগঠনিক কাঠামো আসবে, সেটি দলের মূল কাঠামো হিসেবে" থাকবে এবং "নির্বাচনের আগে কাউন্সিল করা সম্ভব না" বলেও জানিয়েছে একটি সূত্র।

ফলে এই কমিটি নিয়েই দলটির নির্বাচনের দিকে এগোনোর কৌশল এক্ষেত্রে অনেকটাই স্পষ্ট।

দলের নাম কী হতে পারে?
আগামী ২৮ তারিখ রাজধানীর মানিক মিয়া এভিনিউতে বিকেল তিনটায় নতুন দলের আত্মপ্রকাশের কথা জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম। সোমবার সন্ধ্যায় বাংলামোটরে জাতীয় নাগরিক কমিটির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে একথা জানান তিনি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে আসন্ন রাজনৈতিক দলটির সম্ভাব্য শীর্ষ পদের একজন নেতা বলেন, নতুন দলের নামে 'নাগরিক', 'ছাত্রজনতা' কিংবা 'রেভ্যুলেশন'- এর মতো শব্দ থাকতে পারে।

এই মুহূর্তেই দলীয় প্রতীক ঘোষণা করা না হলেও ‘কলম’ ও ‘শাপলা’র মতো প্রতীক আলোচনার টেবিলে আছে বলেও জানা যাচ্ছে।

এরইমধ্যে জাতীয় নির্বাচনের আগেই স্থানীয় নির্বাচন করার যে আলোচনা শোনা যাচ্ছে, তা মাথায় রেখে নিজেদের তৃণমূলের সাংগঠনিক কাঠামোও গুছিয়ে নিচ্ছে দলটি।

বিশেষ করে, দেশের বিভিন্ন জায়গায় জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যেসব কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে, সেখান থেকে অনেকেই দলটিতে যোগ দেবেন। এর মাধ্যমে নির্বাচনের জন্য নিজেদের প্রতিনিধি তৈরির অভ্যন্তরীণ কাজও এগিয়ে রাখা হয়েছে বলে জানা গেছে।

সেক্ষেত্রে সারাদেশ থেকে তৃণমূলের গ্রহণযোগ্য নেতৃত্বকে কেন্দ্রীয় কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করার পরিকল্পনাও করা হয়েছে; যার মাধ্যমে শুরুতে ঘোষণা করা কেন্দ্রীয় কমিটির পরিধি পরে বাড়ানো হবে। দল ঘোষণার পরপরই দ্রুততম সময়ে জেলা, উপজেলা কমিটি গঠন করা হবে।

দলের শীর্ষ নেতৃত্ব নিয়ে দ্বন্দ্ব ও সমঝোতা
শীর্ষ পদগুলোতে কারা থাকবেন, এ বিষয়টি পত্রপত্রিকায় শিরোনাম হচ্ছে দলের যাত্রা শুরুর আগেই । পদ নিয়ে দ্বন্দ্ব-বিভেদের বিষয় নিয়েও খবর হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, দলটির শীর্ষ পদে নাহিদ ইসলামের থাকার বিষয়টি এখন চূড়ান্ত। উপদেষ্টা পদ থেকে ইস্তফা দেয়ার পর তার নেতৃত্বেই আত্মপ্রকাশ করবে নতুন রাজনৈতিক দল।

এর বাইরে জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আদলেই চারজন নিয়ে নতুন দলের আহ্বায়ক কমিটি হবার কথা জানিয়েছিলেন দল গঠনের প্রক্রিয়ায় যুক্ত একাধিক নেতা।

শেষ সময়ে সব পক্ষের মন যোগাতে পদের সমঝোতা করা হচ্ছে বলেই জানা যাচ্ছে। ফলে চারজনের পরিবর্তে আহ্বায়ক কমিটিতে থাকতে পারেন ছয়জন ব্যক্তি। যতদূর জানা গেছে, শীর্ষ পদের তালিকায় থাকা ব্যক্তিদের মধ্যে কোনো নারী নেই।

জুলাই আন্দোলনের সামনের সারিতে থাকা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ ও জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমের দলটির শীর্ষ পর্যায়ের দুটি পদে থাকার বিষয়টিও প্রায় নিশ্চিত।

এছাড়া মধ্যপন্থার দল হিসেবেই দলটি আত্মপ্রকাশ করবে বলে বলা হচ্ছে।

নতুন দলে যোগ দেয়ার আগে ছাড়তে হবে আগের পদ, সেটা হোক জাতীয় নাগরিক কমিটি বা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কিংবা উপদেষ্টা পরিষদের। সে জন্য দলের নেতৃত্বে আসতে নাহিদ ইসলামকে উপদেষ্টার পদ থেকে পদত্যাগ করতে হবে।

সূত্র: বিবিসি বাংলা

এএইচ