ঢাকা, শুক্রবার   ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫,   ফাল্গুন ১৬ ১৪৩১

জাতীয় নাগরিক পার্টির আনুষ্ঠানিক আত্মপ্রকাশ আজ 

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৮:২৮ এএম, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ শুক্রবার

নতুন দল ও শীর্ষ নেতৃত্বের নাম ঘোষণা করেছে জুলাই অভ্যুত্থানের নেতৃত্বদানকারী তরুণরা। গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যৌথ বৈঠকে দলটির নাম নির্ধারণ করা হয় জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। নতুন এ দলের আহ্বায়ক হিসেবে নাহিদ ইসলাম এবং সদস্য সচিব হিসেবে আখতার হোসেনের নাম চূড়ান্ত হয়েছে। এ ছাড়া নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীকে প্রধান সমন্বয়কারী, হাসনাত আবদুল্লাহকে দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক ও সারজিস আলমকে উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক পদে চূড়ান্ত করা হয়েছে। রাজধানীর বাংলামোটরে জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে দলটির আত্মপ্রকাশের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে বিকাল ৩টা থেকে।

অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও অন্য উপদেষ্টাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। দল গঠনে সরকারের সহায়তা নেইÑ তা প্রমাণে উপদেষ্টাদের কেউ অনুষ্ঠানে থাকছেন না বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। দুই ছাত্র উপদেষ্টা মাহফুজ আলম ও আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়াও থাকবেন না বলে জানা গেছে। বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের

শরিক রাজনৈতিক দলগুলোকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদসহ জ্যেষ্ঠ নেতাদের আমন্ত্রণপত্র পাঠানো হয়েছে। আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে ঢাকায় নিযুক্ত ৫১ দেশের রাষ্ট্রদূত, হাইকমিশনার, কূটনীতিকদের। এদিকে ছাত্র-তরুণদের এই রাজনৈতিক দলের আয়োজন ঘিরে নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলার প্রস্তুতি নিয়েছে ডিএমপি।

এ বিষয়ে সারজিস আলম বলেন, ৫ আগস্টের নতুন বাংলাদেশের স্বপ্নের সাথে, জুলাই আন্দোলনের স্পিরিটকে সামনে রেখে আমরা সেই বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করতে চাই, যা হাজারো শহীদের রক্তে গড়া একটি দীর্ঘ সংগ্রামের ফল। আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, শহীদ পরিবারের সদস্য, দেশি-বিদেশি কূটনীতিক ও প্রবাসী বাংলাদেশিদের উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে, জানান তিনি।

এর আগে, নতুন দল প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে গত ৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ‘আপনার চোখে নতুন বাংলাদেশ’ শিরোনামে একটি জনমত জরিপ চালানো হয়। এতে ২ লাখেরও বেশি মানুষ অংশ নেন; ৩০টিরও বেশি নাম ও প্রতীকের প্রস্তাব পাওয়া যায়। এর মধ্য থেকে ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি’কে বেছে নেওয়া হয়েছে বলে নতুন দলের নেতৃবৃন্দ জানিয়েছেন।

জানা গেছে, যাত্রার শুরুতে আহ্বায়কের নেতৃত্বে ছয়টি শীর্ষ পদসহ দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সংখ্যা হবে ১০০ থেকে ১৫০ জন। দলের আত্মপ্রকাশের দিনে এই কমিটি ঘোষণা করা হতে পারে। পরে দলটির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সংখ্যা বাড়িয়ে ৩০০ থেকে ৫০০ জন করা হতে পারে। আর এই কমিটি নিয়েই নির্বাচনের প্রস্তুতি নেবে দলটি। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণার পর দলের কাউন্সিল করতে সময় লাগতে পারে দুই বছর। সে জন্য আহ্বায়ক কমিটিই দলকে নির্বাচনের পথে এগিয়ে নিয়ে যাবে। কাউন্সিল করার পর সেখানে যে সাংগঠনিক কাঠামো আসবে, সেটি দলের মূল কাঠামো হিসেবে থাকবে বলেও জানা গেছে।

এদিকে জাতীয় নাগরিক পার্টির আনুষ্ঠানিক আত্মপ্রকাশ উপলক্ষে আজ শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি)সকাল থেকেই রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে কঠোর নিরাপত্তা বলয় গড়ে তুলবে পুলিশ। সকালেই ডগ স্কোয়াড ও মেটাল ডিটেকটর নিয়ে সমাবেশ মঞ্চসহ সমাবেশস্থলে তল্লাশি চালানো হবে। এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ সাজ্জাত আলী আমাদের সময়কে জানান, সমাবেশ ঘিরে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

এসএস//