ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ০৬ মার্চ ২০২৫,   ফাল্গুন ২২ ১৪৩১

ভাগ্য খুলছে ইবতেদায়ী শিক্ষকদের, ফাইলে উপদেষ্টার স্বাক্ষর

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১১:০৪ এএম, ৬ মার্চ ২০২৫ বৃহস্পতিবার

অবশেষে ইবতেদায়ী মাদরাসার শিক্ষকদের ভাগ্য খুলতে যাচ্ছে। এমপিওভুক্তির প্রস্তাবের ফাইলে স্বাক্ষর করে গেছেন বিদায়ি শিক্ষা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। এখন প্রধান উপদেষ্টার অনুমোদন পেলেই এই শিক্ষকরা এমপিওভুক্ত হবেন। 

শিক্ষা উপদেষ্টা হিসেবে নিজের শেষ কর্মদিবসে বুধবার (৫ মার্চ) ওই ফাইলে স্বাক্ষর করেন তিনি। শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। 

এর মধ্য দিয়ে দীর্ঘ ৪০ বছর পর এক হাজার ৫১৯ ইবতেদায়ি মাদরাসার ছয় হাজারের বেশি শিক্ষকের ভাগ্য খুলতে যাচ্ছে। 

এমপিওভুক্ত (বেসরকারি) শিক্ষকদের উৎসব ভাতা, বিনোদন ভাতা, বাড়িভাড়াসহ অন্যান্য ভাতা বাড়ছে বলে জানিয়েছেন তিনি। গতকাল বুধবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদকে বিদায় এবং নতুন শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক সি আর আবরারের যোগদান উপলক্ষে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এ অনুষ্ঠানে ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ এসব কথা জানান।

বিদায়ি উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, ‘আমি সবাইকে আশ্বাস দিয়েছিলাম, সাধ্যমতো এ বছর এবং আগামী বছরের বাজেটে যতটুকু অর্থ সংকুলন করা যায়, অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বসে আমরা যত দূর পারি চেষ্টা করব দাবিগুলো মেটাতে।’

উপদেষ্টা বলেন, ‘কিন্তু ১৫-২০ বছরের বঞ্চনা দু-এক বছরের বাজেট দিয়ে তো মেটানো যায় না। এটা বোঝানো খুব কঠিন। আজই বেসরকারি বেতন সরকারি বেতনের সমান করে দিতে হবে— এটা ন্যায্য দাবি বুঝলাম, কিন্তু এক বছরের বাজেট দিয়ে কিভাবে ১৫ বছরের বৈষম্য ঠিক করা যায়? কিন্তু শুরুটা করা দরকার। সেই শুরুটা আমরা করে দিয়ে যাচ্ছি।’

ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, ‘তাঁদের (এমপিওভুক্ত শিক্ষক) উৎসব ভাতা, বিনোদন ভাতা, বাড়িভাড়া, চিকিৎসা ভাতা—এ বছরের ঈদুল আজহা থেকে শুরু করে আগামী বছরের বাজেট থেকে অন্তত কিছু বাড়াতে পারব, এখানেও আমি ঘোষণা দিচ্ছি না কত বাড়াব। আমি জানি সেটুকু বাজেটের মধ্যে এ বছর এবং আগামী বছরের বাজেটের মধ্যে প্রভিশন রাখা হচ্ছে।

শিক্ষকদের অবসর এবং কল্যাণ ভাতার জন্য একটা তহবিল তৈরি করা হচ্ছে জানিয়ে বিদায়ি উপদেষ্টা বলেন, ‘এ বছরই কিছুটা তৈরি করা হয়েছে। আগামী বাজেটে আরো রাখা হবে। তবে পুরো ফান্ড টেকসই করতে হলে দু-একটা বাজেটে হবে না, ভবিষ্যতে তিন-চারটা বাজেটে আশা করি এটার সমাধান হয়ে যাবে।’

ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, ‘বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের কল্যাণ ভাতা এবং অবসর ভাতা—এটা হলো তাঁদের সবচেয়ে ন্যায্য দাবি। কিন্তু তাঁরা তো সংঘবদ্ধ নন। তাঁরা রাস্তায়ও কোনো দিন নামেননি। কিন্তু আমি তো মনে করেছিলাম তাঁদের ওই দাবিটাই সবচেয়ে আগে মেটানো উচিত।’

তিনি বলেন, ‘দেশের অনেক ইবতেদায়ি মাদরাসা আছে। এর মধ্যে অনেক অনানুষ্ঠানিক। কিন্তু অনেক প্রতিষ্ঠানের নথি (রেজিস্ট্রেশন) আছে। সরকারি প্রাথমিক স্কুলের মতো তারা বাংলা, ইংরেজি গণিত পড়াচ্ছে, অবকাঠোমো শিক্ষক থাকার পরও এমপিওভুক্ত করা হয়নি। তাঁদের এমপিওভুক্ত করা সম্ভব। সেই কাজ আমি করে দিয়েছি।’

গতকাল বুধবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের শেষ দিন সেই ফাইলে স্বাক্ষর করে গেছেন বিদায়ি শিক্ষা উপদেষ্টা। সেই ফাইল এখন প্রধান উপদেষ্টার কাছে পাঠানো হবে। তাঁর সম্মতি মিললে শিক্ষকরা এমপিওভুক্তি হিসেবে বেতন-ভাতা পাবেন।

এএইচ