দেশ চালাচ্ছে ‘পলিটিক্যাল গভর্মেন্ট’, বললেন মাহফুজ আলম
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৯:৫১ পিএম, ১১ মার্চ ২০২৫ মঙ্গলবার | আপডেট: ০৯:৫৫ পিএম, ১১ মার্চ ২০২৫ মঙ্গলবার

গণ-অভ্যুত্থানের বিজয়ী শক্তিই বর্তমানে দেশ পরিচালনা করছে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। তিনি বলেন, ‘এই সরকার অভ্যুত্থানের শহীদদের রক্তের বিনিময়ে গঠিত হয়েছে এবং এটি একটি পলিটিক্যাল গভর্মেন্ট।’
আজ মঙ্গলবার (১১ মার্চ) বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) কার্যালয় পরিদর্শনকালে তিনি এসব কথা বলেন।
তথ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘আওয়ামী লীগকে রাজনৈতিকভাবে পরাজিত করার মাধ্যমেই আমরা এখানে এসেছি। গণ-অভ্যুত্থানে যারা জয়ী শক্তি, তারাই বর্তমানে দেশ চালাচ্ছে। এটি অত্যন্ত রাজনৈতিকভাবে প্রভাবিত একটি সরকার।’
তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেছেন, ‘গণ-অভ্যুত্থানে বিজয়ী শক্তি বর্তমানে দেশ চালাচ্ছে। কারণ এই সরকার হচ্ছে অভ্যুত্থানের শহীদদের রক্তের বিনিময়ে গঠিত সরকার।’
তিনি বলেন, ‘অনেকেই বলেন যে এই সরকার দ্রুত নির্বাচন দিয়ে চলে যায় না কেন। কিন্তু যেটা অনেকে ভুলে যান সেটা হচ্ছে- এই সরকার অভ্যুত্থানে অনেক শহীদের রক্তের বিনিময়ে গঠিত সরকার। দেখতে অ্যাপলিটিক্যাল মনে হলেও এখানে টেকনোক্র্যাটসহ আরো অনেক লোক রয়েছেন। কিন্তু মূলত এটা পলিটিক্যাল গভর্মেন্ট। কারণ এটা একটা পলিটিক্যাল ভিক্টোরির ওপরে দাঁড়িয়ে রয়েছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘আওয়ামী লীগকে পলিটিক্যালি পরাজিত করার সুবাদেই আমরা এখানে রয়েছি। গণ-অভ্যুত্থানে যারা জয়ী শক্তি, যারা ভিক্টোরিয়াস তারাই আসলে দেশ চালাচ্ছে। এটা খুবই পলিটিক্যালি মোটিভেটেড একটা গভর্মেন্ট এবং পলিটিক্যাল গভর্মেন্ট।’
মাহফুজ আলম বলেন, ‘অন্য পলিটিক্যাল গভর্মেন্টের লক্ষ্য থাকে তার দলকে সার্ভ করা। কিন্তু আমাদের সৌভাগ্য হচ্ছে এই সরকারকে কোনো দলকে সার্ভ করতে হচ্ছে না। এই সরকার জনগণকে সার্ভ করছে, আপামর জনগণের ক্ষেত্রে সব মত এবং ধর্মের মানুষের জন্য কাজ করছে।
তো ওই নিরিখে আমাদের সংবাদ মাধ্যমে সেই জিনিসগুলো যাওয়া উচিত।’
তিনি বলেন, ‘একটা ইনফরমেশন ওয়ারের মুখোমুখি আমরা দাঁড়িয়ে রয়েছি। ভারতের পাশাপাশি বাংলাদেশের ভেতর থেকেও একটা ইনফরমেশন ওয়ার চলছে। আমরা অনেকেই ভাবতে পারি যে আমরা বোধ হয় হয়তো একটু রিলাক্সড থাকতে পারি। কিন্তু যারা এখানে পরাজিত হয়েছে তারা কেউ রিলাক্সড না। বিশেষ করে ইনফরমেশনের ক্ষেত্রে তো আরো না। ফলে এখানে বাসসের ভূমিকা হচ্ছে, বাসস একটা নিউজ এজেন্সি। যেহেতু এখান থেকে সোর্স আকারে অন্য অনেক মিডিয়া তথ্য পরিবেশন করে। শুধু দেশে নয় বিদেশেও তথ্য পরিবেশনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের একটা বেঞ্চমার্ক ধরা হয় বাসসকে। ফলে এই জায়গায় দায়িত্বশীলতাটা আপনাদের কাছ থেকে প্রত্যাশিত।’
তথ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘বাসসকে মানুষ সরকারের মুখপাত্র হিসেবে ভাবে, অন্যান্য দেশগুলোতেও নিউজ এজেন্সিগুলো সরকারের সাথে রিলেটেড। কিন্তু ওই এজেন্সিগুলো আমরা কিন্তু উদ্ধৃত করি। এক্ষেত্রে আমাদের পত্রিকাগুলো না শুধু, পুরো দুনিয়ার বিভিন্ন পত্রিকা উদ্ধৃত করে। বাসস অন্তত সাউথ এশিয়াতে উদ্ধৃত করার মতো একটা নিউজ এজেন্সি হওয়া উচিত। বাংলাদেশ তো বটেই। ওই ক্ষেত্রে আপনারা কী করতে পারেন, সেটা আপনাদের দায়িত্ব। অন্যদিকে আপনাদের এখানে জনবল বাড়ানো থেকে শুরু করে আরো কী কী টেকনিক্যাল সাপোর্ট লাগবে তার প্রস্তাবগুলো আপনাদের কাছ থেকে আমি চাই।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের ভাবমূর্তি বলতে একটা শব্দ আছে। যদিও এটা এখন একটু নেগেটিভ মিনিং দাঁড়িয়ে গেছে। দেশের বাইরে বাংলাদেশকে রিপ্রেজেন্টেশনের ক্ষেত্রে আপনাদের একটা ভূমিকা রয়েছে। এ ক্ষেত্রে আপনারা দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখলে আশা করি যে বাংলাদেশ উপকৃত হবে, জনগণ উপকৃত হবে এবং এই অভ্যুত্থানের সরকার উপকৃত হবে।’
অনুষ্ঠানে বাসসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান সম্পাদক মাহবুব মোর্শেদ বলেন, ‘সিনহুয়া, এএফপিসহ বেশ েকিছু আন্তর্জাতিক নিউজ এজেন্সির সাথে আমাদের নিউজ বিনিময় চুক্তি রয়েছে। এর বাইরেও আমরা অন্যান্য নিউজ এজেন্সিগুলোর সাথে চুক্তির পরিকল্পনা করছি। সেই লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’
এ সময় বাসসের ব্যবস্থাপনা সম্পাদক ফজলুল হক, প্রধান বার্তা সম্পাদক (ইংরেজি) মোর্শেদুর রহমান, প্রধান বার্তা সম্পাদক (বাংলা) মো. আকতারুজ্জামান, প্রধান প্রতিবেদক (ইংরেজি) মানিকুল আজাদ ও প্রধান প্রতিবেদক (বাংলা) দিদারুল আলম উপস্থিত ছিলেন।
এমবি//