৯৫ দিন ধরে ভাসছিলেন সাগরে, বেঁচে ছিলেন কচ্ছপ খেয়ে
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০২:৩৮ পিএম, ১৭ মার্চ ২০২৫ সোমবার

প্রশান্ত মহাসাগরের কচ্ছপ, পাখি এবং তেলাপোকা খেয়ে বেঁচে থাকা এক জেলেকে ৯৫ দিন পর উদ্ধার করা হয়েছে। পেরুর ওই বাসিন্দাকে তার পরিবারের কাছে পুনরায় ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
৬১ বছর বয়সী জেলে ম্যাক্সিমো নাপা কাস্ত্রো গত ৭ ডিসেম্বর দক্ষিণ পেরুর উপকূলীয় শহর মার্কোনা থেকে মাছ ধরার উদ্দেশ্যে রওনা হন। তিনি দুই সপ্তাহের জন্য সাগরে পাড়ি জমিয়েছিলেন।
কিন্তু দশ দিন পর একটি ঝড়ে তার নৌকার গতিপথ পাল্টে যায় এবং সরবরাহ কমে যাওয়ার কারণে সাগরে ভাসতে শুরু করেন। তার পরিবার অনুসন্ধান শুরু করলেও পেরুর সামুদ্রিক টহল দল তাকে খুঁজে পায়নি।
এরপর ইকুয়েডরের টহল জাহাজ ডন এফ তাকে উপকূল থেকে ১ হাজার ০৯৪ কিলোমিটার (৬৮০ মাইল) দূরে পানিশূন্য এবং আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে খুঁজে পায়।
ম্যাক্সিমো তার নৌকায় বৃষ্টির পানি পান করত।
এছাড়া খাবার হিসেবে যা পেত তাই খেত। এর মধ্যে ছিল সামুদ্রিক কচ্ছপ, তেলাপোকা এবং পাখি। কিন্তু তার শেষ ১৫ দিন খাবার ছাড়াই কেটেছে। কাস্ত্রো জানান, তা দুই মাস বয়সী নাতনিসহ তার পরিবারের কথা ভেবে সব সহ্য করার শক্তি পেয়েছিলেন তিনি।
তিনি আরো বলেন, আমি প্রতিদিন আমার মায়ের কথা ভাবতাম। আমাকে দ্বিতীয় সুযোগ দেওয়ার জন্য আমি ঈশ্বরের কাছে কৃতজ্ঞ।
তার মা এলেনা স্থানীয় গণমাধ্যমকে বলেন, তার ছেলের নিখোঁজের সময় পর আত্মীয়রা আশাবাদী থাকলেও, তিনি আশা হারাতে শুরু করেছিলেন।
উদ্ধারের পর কাস্ত্রোকে চিকিৎসা ও পরীক্ষার জন্য পাইটাতে নিয়ে যাওয়া হয় এবং তারপর তাকে পেরুর রাজধানী লিমায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে জর্জ শ্যাভেজ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তার মেয়ে ইনেস নাপার সঙ্গে দেখা করেন।
তখন এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। ইকা অঞ্চলের সান আন্দ্রেসের কাস্ত্রোর নিজ জেলায় প্রতিবেশী এবং আত্মীয়স্বজনরা তাকে বরণ করার জন্য রাস্তাগুলো সাজিয়েছেন।
গত বছর রাশিয়ার পূর্বে ওখোটস্ক সাগরে একটি ছোট স্ফীত নৌকায় দুই মাসেরও বেশি সময় ভেসে থাকার পর রাশিয়ান মিখাইল পিচুগিনকে উদ্ধার করা হয়েছিল। একইভাবে সালভাদোরান জেলে হোসেকে সালভাদোর আলভারেঙ্গা প্রশান্ত মহাসাগরে ১৪ মাসের এক অগ্নিপরীক্ষা সহ্য করেছিলেন।
সূত্র : বিবিসি
এসএস//