হানি ট্র্যাপের শিকার ভারতের ৪৮ প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৬:৩৯ পিএম, ২২ মার্চ ২০২৫ শনিবার

কর্ণাটকের মন্ত্রী কে এন রাজান্নার একটি চাঞ্চল্যকর মন্তব্য ভাইরাল হয়েছে। যেখানে তিনি ভারতের প্রায় ৪৮ জন প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ হানি ট্র্যাপের শিকার হয়েছেন বলে দাবি করেছেন।
গত মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) বিধানসভায় দেওয়া এক ভাষণে তিনি এই দাবি করেন।
কে এন রাজান্না বলেছেন, কেন্দ্রীয় নেতাসহ ভারতের প্রায় ৪৮ জন বড় রাজনীতিক হানি ট্র্যাপের শিকার হয়েছেন। তাদের মধ্যে মন্ত্রী-এমপিও রয়েছেন। তার এই মন্তব্যের পর রাজ্য ও জাতীয় রাজনীতিতে বেশ তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। অনেকে বিষয়টির সত্যতা যাচাই করতে উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের দাবি করেছেন। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
বিধানসভায় দেওয়া ভাষণে কে এন রাজান্না বলেন, ‘আমার জানামতে, প্রায় ৪৮ জন নেতা এই সিডি ও পেনড্রাইভের (হানি ট্র্যাপ) শিকার হয়েছেন। এটি শুধু একটি দলের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। আরও অনেকের সঙ্গে এটা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘কর্ণাটককে বলা হয় হানি ট্র্যাপের কারখানা। এটি একটি গুরুতর অভিযোগ। আমার কাছে তথ্য রয়েছে, তুমকুরুতে দুজন মন্ত্রী হানি ট্র্যাপের শিকার হয়েছেন।’
তিনি জানান, তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে একটি লিখিত অভিযোগ করবেন এবং পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি জানাবেন।
তিনি বলেন, ‘এর পেছনে কারা রয়েছে? এর সঙ্গে কারা জড়িত? সবকিছু বেরিয়ে আসুক। জনগণ জানুক।’
কে এন রাজান্নার ছেলে আইনসভার সদস্য রাজেন্দ্রও এ বিষয়ে কথা বলেছেন। তিনি জানান, ছয় মাস ধরে ভারতের রাজনীতিবিদদের হানি ট্র্যাপে ফেলার চেষ্টা চলছে। কেবিনেটমন্ত্রী ইতোমধ্যে বিবৃতি দিয়েছেন, তদন্ত হওয়া উচিত। আমি মনে করি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এটির তদন্ত করবেন।’
কীভাবে মন্ত্রী-এমপিদের হানি ট্র্যাপে ফেলা হচ্ছে, এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাজেন্দ্র বলেন, ‘তারা হোয়াটসঅ্যাপে কল করবে অথবা একটি বার্তা দেবে। ছয় মাস ধরে এটি ঘটছে। আমরা দুই মাস ধরে এই সিন্ডিকেটকে ট্র্যাক করার চেষ্টা করছি। তদন্ত শেষ হতে দিন। সব জানতে পারবেন।’
গণপূর্তমন্ত্রী ও কংগ্রেস নেতা সতীশ জারকিহোলি বলেছেন, হানি ট্র্যাপের চেষ্টা নতুন কিছু নয়। কয়েক ব্যক্তি এটিকে রাজনীতিতে বিনিয়োগ হিসেবে ব্যবহার করছে। তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ, এর আগে একজন মন্ত্রীকে দু-দুবার হানি ট্র্যাপে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে। তবে সেই চেষ্টা সফল হয়নি।’
সতীশ জারকিহোলি আরও বলেন, ‘আমরা ওই মন্ত্রীকে অভিযোগ দায়ের করতে বলেছি। শুধু একটি অভিযোগ দায়েরের মাধ্যমে আমরা জানতে পারব কেন এই কার্যকলাপগুলো ঘটছে। যদি তারা অভিযোগ করেন, আমরা খুঁজে বের করব, এর পেছনে কারা রয়েছে। আমরা মুখ্যমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে এটি নিয়ে আলোচনা করব। এটি শুধু আমাদের দলের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়; এটি সব দলেই ঘটে।’
কর্ণাটকের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জি পরমেশ্বরা বলেন, তিনি এ ধরনের অভিযোগে অবগত নন। সংশ্লিষ্ট বিভাগের কাছ থেকে তথ্য চাইবেন। তিনি বলেন, ‘আমি বিভাগ থেকে কিছু তথ্য চাইব। এখন পর্যন্ত কেউ আমাদের কিছু বলেনি। আমি এসব কিছুই জানি না। বিভাগ আমাদের জানালেই আমি জানতে পারব।’
এসএস//