ঢাকা, বুধবার   ০২ এপ্রিল ২০২৫,   চৈত্র ১৮ ১৪৩১

নৃশংস হামলায় কাঁদছে গাজা ও লেবানন, ইসরায়েলি আগ্রাসনে প্রাণহানি ৪৫

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৮:৫০ এএম, ২৮ মার্চ ২০২৫ শুক্রবার

গাজায় ইসরায়েলি হামলার তীব্রতা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। শুক্রবার (২৯ মার্চ) আল জাজিরার প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি বাহিনীর একের পর এক বিমান হামলা ও গোলাবর্ষণে অন্তত ৪০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এই হামলার ফলে গাজা উপত্যকায় মোট নিহতের সংখ্যা ৫০ হাজার ২০০ ছাড়িয়ে গেছে। নিহতদের মধ্যে বেশিরভাগই নারী ও শিশু। একইসঙ্গে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলেও হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী, যেখানে ৬ লেবাননবাসী প্রাণ হারিয়েছেন।

গাজার মধ্যাঞ্চলের একটি ব্যস্ত বাজারে ইসরায়েলি বিমান হামলায় ৭ ফিলিস্তিনি নিহত হওয়ার ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। জেইতুন এলাকায় একটি বাসাবাড়িতে হামলা চালিয়ে ৩ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করা হয়েছে। এছাড়া রাফাহ ও বানি সুহেলা শহরে ড্রোন হামলায় আরও কয়েকজন নিহত ও আহত হয়েছেন। 

ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের হামলায় ৫০ হাজার ২০৮ ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১ লাখ ১৩ হাজার ৯১০ জন আহত হয়েছেন। ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও হাজারো নিখোঁজ ফিলিস্তিনিকে খুঁজে পাওয়া যায়নি।

গাজায় চলমান এই সংঘাতে মানবিক পরিস্থিতি দিন দিন ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি সতর্ক করে দিয়েছে যে গাজায় হাজার হাজার ফিলিস্তিনি তীব্র ক্ষুধা ও অপুষ্টির শিকার হচ্ছে। তিন সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে কোনো মানবিক সাহায্য গাজায় প্রবেশ করতে পারেনি। হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা সামগ্রী, বিদ্যুৎ ও জ্বালানির তীব্র সংকট চলছে।

এদিকে লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলে ইসরায়েলি ড্রোন হামলায় ৬ বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। ইসরায়েল দাবি করেছে যে তারা হিজবুল্লাহর লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে। তবে নিহতদের বেশিরভাগই সাধারণ নাগরিক। গত ২৭ নভেম্বর যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষরিত হলেও ইসরায়েল লেবাননে নিয়মিত হামলা চালিয়ে যাচ্ছে।

এই সংঘাতের প্রেক্ষাপটে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নিষ্ক্রিয়তা প্রশ্নের সম্মুখীন হয়েছে। ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিকদের ওপর চলমান হামলা ও মানবিক সংকট সত্ত্বেও জাতিসংঘ ও বিশ্ব নেতাদের পক্ষ থেকে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না। গাজাবাসীর দুর্ভোগ ও মৃত্যুর মিছিল যেন থামছেই না, আর এই পরিস্থিতিতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের জরুরি হস্তক্ষেপের দাবি দিন দিন জোরালো হচ্ছে।

এসএস//