চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ৪০ ছুঁই ছুঁই, জনজীবনে চরম ভোগান্তি
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৪:৪৬ পিএম, ২৩ এপ্রিল ২০২৫ বুধবার

চুয়াডাঙ্গা জেলা যেন পরিণত হয়েছে উত্তপ্ত চুলায়। দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম সীমান্তবর্তী এই জনপদের ওপর দিয়ে গত কয়েকদিন ধরে বয়ে চলেছে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ। সূর্যের তেজ আর ভ্যাপসা গরমে অস্থির হয়ে উঠেছে মানুষের জনজীবন।
কৃষক, দিনমজুর, রিকশাচালক, ভ্যানচালক থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ সবাই পড়েছে চরম দুর্ভোগে। মধ্যদুপুরের পর থেকেই রাস্তা-ঘাট হয়ে পড়ছে প্রায় জনশূন্য। ছায়া আর পানির খোঁজে মানুষ ছুটছে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায়।
বুধবার (২৩ এপ্রিল) বিকেল ৩টায় চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, বাতাসে আর্দ্রতা মাত্র ২৮ শতাংশ। এর আগে গত ১৮ এপ্রিলও জেলার তাপমাত্রা পৌঁছেছিল ৩৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে, যা চলতি মৌসুমে জেলার সর্বোচ্চ।
চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান জানান, “জেলার ওপর দিয়ে এখন মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে, যা আগামী ৪ থেকে ৫ দিন পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। আগামী দুই দিনে তাপমাত্রা আরও খানিকটা বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।” তিনি আরও বলেন, “২৭ ও ২৮ এপ্রিল বজ্রসহ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। তখন তাপমাত্রা কিছুটা কমে স্বাভাবিক হতে পারে।”
তাপপ্রবাহে স্বাস্থ্যঝুঁকি, সতর্কতা জারি
চুয়াডাঙ্গা জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ ইতোমধ্যে জনসাধারণকে সতর্ক থাকতে বলেছে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে না যেতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে প্রচুর পানি পান, ফলমূল খাওয়া এবং ঘন ঘন শরবত বা পানীয় পান করার পরামর্শ দিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ। বিশেষ করে শিশু, বৃদ্ধ ও অসুস্থদের তাপপ্রবাহ থেকে বাঁচাতে পরিবারের সদস্যদের সচেতন থাকতে বলা হয়েছে।
বাজারে চাহিদা বেড়েছে ঠান্ডা খাবার ও পানীয়র
তীব্র গরমে ডাব, লেবু-শরবত, তালের রসসহ ঠান্ডা পানীয়র চাহিদা ব্যাপকভাবে বেড়েছে। চুয়াডাঙ্গা শহরের চৌরাস্তার মোড়ে শরবত বিক্রি করছেন মোতালেব নামের এক ভ্রাম্যমাণ বিক্রেতা। তিনি জানান, “গরম যত বাড়ছে, শরবতের বিক্রিও তত বেড়েছে। তবে রাস্তায় মানুষের চলাচল খুবই কম, দুপুরের পর দোকান সামনে কেউই থাকছে না।”
একই কথা জানান ইজিবাইক চালক আলম হোসেন। “এই কয়দিন খুব গরম পড়তেছে। যাত্রী কমে গেছে অনেক। দুপুরের পর রাস্তায় মানুষই থাকে না,” বলছিলেন তিনি।
ডাব বিক্রেতা আকাশ বলেন, “ডাবের চাহিদা এখন তুঙ্গে। কিন্তু পাইকারি বাজারেই দাম বেশি, একেকটা ডাব কিনতে হচ্ছে ১০০ টাকার উপরে। বিক্রি করছি ১২০ থেকে ১৫০ টাকায়। তবুও চাহিদা আছে, কারণ এই গরমে মানুষ কিছু ঠান্ডা খুঁজেই।”
চুয়াডাঙ্গার তীব্র গরম পরিস্থিতি মোকাবেলায় এখন সবচেয়ে প্রয়োজন সচেতনতা, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা এবং পর্যাপ্ত পানি ও বিশ্রাম। আবহাওয়ার পরিবর্তনের অপেক্ষায় এই জেলার মানুষ।
এসএস//