আর্থিক অন্তর্ভুক্তিকরণে তৃণমূলে কমিউনিটি ব্যাংকিং
মুহম্মদ মাহবুব আলী
প্রকাশিত : ০৭:৫৪ পিএম, ৩ জুলাই ২০১৭ সোমবার | আপডেট: ০৭:৫৫ পিএম, ১৮ জুলাই ২০১৭ মঙ্গলবার
প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো যখন সামাজিক যোগাযোগতত্তের মাধ্যমে উন্নয়নে ভূমিকা রাখে তখন তা মোট জাতীয় উৎপাদনশীলতায় সংযুক্তি ঘটে। আর অপ্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোয় যখন সামাজিক যোগাযোগতত্তটি কাজ করে তখন এটি মানুষের অস্তিত্ব ও বেঁচে থাকার অবলম্বন হিসেবে হত দরিদ্র ও দরিদ্রদের মধ্যে কাজ করে থাকে। সামাজিক যোগাযোগ তত্তের কারণেই বর্তমান সরকার আর্থিক অন্তর্ভূক্তিমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে যার মাধ্যমে মানুষ সঞ্চয় বিনিয়োগে উৎসাহী হয় এবং ভোগ প্রবণতায় তার দক্ষতা ও পারঙ্গমতার পরিচয় দিয়ে থাকে। আর্থিক অন্তর্ভূক্তিকরণের ক্ষেত্রে ক্ষুদ্রসঞ্চয়ের জন্য বাংলাদেশে তৃণমূল পর্যায়ে কমিউনিটি ব্যাংকিং চালুর উদ্যোগ গুরুত্বপূর্ণ।
একটি দেশের উন্নয়নের জন্য বিশেষত দারিদ্রতা থেকে মুক্তির জন্য বর্তমান একবিংশ শতকের দ্বিতীয় যুগে সামাজিক যোগাযোগ যথেষ্ট মাত্রায় গুরুত্বপূর্ণ হলেও এটি অলিখিতভাবে হাজার বছর ধরে কেবল বাংলাদেশ নয়, বিশ্বের বিভিন্ন দারিদ্র্যের দুষ্টু চক্রে যারা দেশে দেশে কালে কালে যুক্ত রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে সামাজিক যোগাযোগতত্তটি বহুল প্রচলিত একটি ব্যাপার। সামাজিক যোগাযোগতত্তের মাধ্যমে মানুষের ক্ষমতায়ন প্রাতিষ্ঠানিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিক উভয়ভাবেই ঘটে থাকে।
পরিবর্তিত বিশ্বের কারণে প্রাচীনকাল থেকে অলিখিতভাবে চলে আসা সামাজিক গণমাধ্যম/ইন্টারনেট/মোবাইল সামাজিক যোগাযোগ ব্যবস্থাপনার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। বর্তমান বিশ্বে আর্থিক পরিবেশ জানার জন্যে ইন্টারনেট/ মোবাইল ব্যবস্থাপনা অতি দ্রুত কাজ করে থাকে। বাংলাদেশের একটি গ্রামের কথাই ধরা যাক, যেখানে পূর্বে যোগাযোগে অনেক বিলম্বিত হতো, এখন মুহূর্তের মধ্যে মোবাইল বা ইন্টারনেটের মাধ্যমে পলকের মধ্যে সরাসরি যোগাযোগ করে খবর সংগ্রহ করা হয়ে থাকে। গ্রামীণ একজন কৃষক মোবাইলের কল্যাণে শহরে ফোন করে জানতে পারে কি দরে তার উৎপাদিত পণ্য বিক্রি হচ্ছে।
২০১৬ সাল বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য একটি উল্লেখযোগ্য বছর। এ সময়ে অর্থনীতির অগ্রযাত্রা অব্যাহত ছিল। যদিও বৈশ্বিক সমস্যা ছিল, বিশেষত মধ্যপ্রাচ্যের অর্থনীতিতে আগের রমরমা অবস্থা নেই। ফলে বিদেশ থেকে প্রবাসীদের অর্থ প্রেরণ কিছুটা কমা স্বাভাবিক। অন্যদিকে, গত শতাব্দীর নব্বইয়ের দশকে এবং একবিংশ শতকের প্রথম দশকে যেখানে পোশাক খাত থেকে রপ্তানিলব্ধ আয় ছিল গড়ে ৭৫%-এর মতো তা কিন্তু বর্তমানে বেড়ে ৮২% হয়েছে। অবশ্য হিসাব করে দেখেছি, রপ্তানিলব্ধ আয়ের ক্ষেত্রে, বিশেষত পোশাক শিল্পের ক্ষেত্রে ভ্যালু এডিশন হচ্ছে মাত্র ৩০%। বর্তমান সরকার যেখানে পেটে-ভাতে রাজনীতির বাস্তবায়নে সাফল্য দেখাচ্ছেন সেখানে ব্যাংকিং সেক্টরকে আরো দৃঢ়তার সঙ্গে এগিয়ে আসতে হবে।
ড. আতিউর রহমানের পরবর্তী মানে বাংলাদেশ ব্যাংক আর বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশিত ফাইন্যান্সিয়াল ইনক্লুশনের ক্ষেত্রে আগের মতো জোর দিচ্ছেন না। এ নির্দেশনার বাস্তবায়নে ব্যাংকিং সেক্টরকে অবশ্যই দৃঢ় ভূমিকা পালন করতে হবে।
বর্তমান যুগে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পূর্বতন ভূমিকা কেবল মুদ্রানীতি পরিচালনা, বিনিময়হার নির্ধারণ, লেন্ডার অব দি লাস্ট রিসোর্ট, মার্জিন রিকোয়ারমেন্টের উপর নির্ভর করে পরিচালনা বন্ধ হয়ে গেছে। আধুনিক কেন্দ্রীয় ব্যাংক মুদ্রা পরিচালনা, মূল্যস্ফীতি হ্রাসের পাশাপাশি ফাইন্যান্সিয়াল ইনক্লুশন করে থাকে। দীর্ঘ কাল ধরে যে পুঞ্জীভূত দুর্নীতি বিরাজ করছিল, সরকারের প্রয়াস সত্ত্বেও তাতে তেমন সাফল্য পরিলক্ষিত হচ্ছে না। ভারতে বর্তমানে কালো টাকা বন্ধে যে পদ্ধতিগ্রহণ করা হয়েছে একজন অর্থনীতির ছাত্র হিসেবে আমি মনে করি এটি বেশ কঠোর পদক্ষেপ হয়ে গেছে। এর ফল সে দেশে কতটুকু সুফল বয়ে আনবে ভবিষ্যত্ই বলবে। তবে বাংলাদেশের গ্রামীণ অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করার ক্ষেত্রে সরকারের সদিচ্ছার অভাব নেই। সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা বা এমডিজি অর্জনে বাংলাদেশের অগ্রগতি বেশ ভালো। তবে এক্সপোর্ট প্রমোশন ব্যুরো রপ্তানি বহুধা-বিভক্তকরণে সম্পূর্ণ ব্যর্থ। এমনকি বিদেশস্থ বাংলাদেশের এম্বেসি সমূহ দায়সারা গোছের কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে থাকে। অথচ প্রধানমন্ত্রীর উত্সাহে এসডিজি বাস্তবায়নে নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।
এসডিজির যে১৭টি মূল লক্ষ্য রয়েছে সেগুলো হচ্ছে: দারিদ্র্যের সকল ধরনের পরিসমাপ্তি, ক্ষুধার পরিসমাপ্তি, খাদ্য নিরাপত্তা অর্জন, খাদ্য উপাদানের মান উন্নয়নএবংস্থায়িত্বপূর্ণ কৃষির প্রসারমানতা, স্বাস্থ্য-সেবার উন্নয়ন এবং সব বয়সের মানুষের কল্যাণ সাধন, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং সকলের জন্যে সমস্ত জীবনভর শিক্ষার ব্যবস্থা; নারী-পুরুষ সমঅধিকার এবং নারীর ক্ষমতায়ন; পানিওপয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থার প্রাপ্যতা এবং টেকসই ব্যবস্থাপনা; সকলের জন্যে জ্বালানির প্রাপ্যতা, সহজলভ্যতা এবং টেকসই পদ্ধতির বাস্তবায়ন; অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক অগ্রগতির টেকসই, বাস্তবসম্মত কর্মসংস্থান পদ্ধতি এবং উপযুক্ত কর্মসংস্থান; অবকাঠামো তৈরি করা, শিল্পায়নকে প্রসারিত ও টেকসই করা এবং অভিনবত্ব আনয়ন করা; দেশের অভ্যন্তরে অসাম্যদূর করা; টেকসই ভোগ প্রবণতা এবং উত্পাদন ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা; আবহওয়া জনিত পরিবর্তনের বিরুদ্ধে তাত্ক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা; সমুদ্র, নদ নদী এবং জলজ সম্পদের সুস্পষ্ট ব্যবহার যার মাধ্যমে টেকসই উন্নয়ন সম্ভব, যাতে করে ইকোব্যবস্থা ঠিক থাকে, বনায়ন ব্যবস্থাপনা করা এবং বন সংরক্ষণ করা; ভূমির সংরক্ষণ এবং জীব বৈচিত্র্য রক্ষা করা; শান্তিপূর্ণ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের ব্যবস্থা করা; সকলের জন্যে ন্যায়বিচার ও সমতা বিধান করা; কার্যকর হিসাব রক্ষণ করা এবং সর্ব ক্ষেত্রে অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রতিষ্ঠান ব্যবস্থাপনা করা, সঠিকভাবে নিয়ম-পদ্ধতি অনুসরণ করে কল্যাণমুখী কার্যক্রম সমূহের বাস্তবায়ন করা এবং বিশ্বব্যাপী অংশীদারিত্বের মাধ্যমে টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিত করা।
এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়নে বর্তমান সরকার নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। সম্প্রতি পল্লী কর্মসহায়ক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে আয়োজিত এক সভায় ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমেদ মন্তব্য করেছেন যে, সরকার দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি ও মানবকল্যাণের জন্যে এসডিজি বাস্তবায়নে বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। যা দেশ এবং দেশের মানুষের উন্নয়নমুখী জীবন যাত্রার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ। আসলে এসডিজি বাস্তবায়নে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি খাত আর শর্তমুক্ত বৈদেশিক সহযোগিতা সমন্বিত ভূমিকা দেশের উন্নয়নের জন্যে অপরিহার্য হয়ে পড়েছে। বেসরকারি খাত সচরাচর সেখানেই বিনিয়োগ করে থাকে যেখানে তাদের বিনিয়োগ ধনাত্মক হয় এবং অনেক খানি মুনাফা অর্জন করতে পারে। অন্যদিকে বিদেশি রাষ্ট্রগুলো সচরাচর শর্তযুক্ত সাহায্য, অনুদান এবং ঋণ প্রদান করে থাকে যা অনেক সময় গ্রহীতা রাষ্ট্রের জন্যে মঙ্গল বয়ে আনে না। এমনকি যারা শর্ত আরোপ করে নিজের দেশের মুনাফা বৃদ্ধি করতে চায় তা শেষ পর্যন্ত আবার তাদের দেশেরই ক্ষতির কারণ হতে পারে। তবে এসডিজি বাস্তবায়নের কলাকৌশল অবশ্যই আমাদের দেশের মতো করে আমাদের নিজস্ব পদ্ধতিতে নির্ধারিত হতে হবে। বিশ্বায়নের যুগে যদিও বৈশ্বিক মানদণ্ড রয়েছে তবে তা আমাদের দেশের জন্যে কতটুকু অনুকূলতা কিন্তু নীতিনির্ধারকদের ভালো করে যাচাই-বাছাই করতে হবে। নচেত্তাদেশের মানুষের জন্য মঙ্গলজনক নাও হতে পারে। তবে এসডিজি বাস্তবায়নে প্রচুর পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন রয়েছে। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ নিম্ন-মধ্যম আয়ের রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। আশা করা যাচ্ছেভিশন২০২১এর মধ্যে উচ্চ-মধ্যম আয়ের রাষ্ট্রে পরিণত হতে পারবে। খুব বেশি হলে পরবর্তী পাঁচ বছরের মধ্যেই তা অর্জন করা যাবে যদি বর্তমান ধারায় অর্থনৈতিক অগ্রগতি, সুষম বন্টন ব্যবস্থা, জীবনমান উন্নয়নধারা এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য বিশেষ উদ্যোগ বহাল থাকে। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বৈদেশিক বিনিয়োগ আগামী বছরগুলোয় প্রায়৬৫% হারে প্রতি বছর বৃদ্ধি পাওয়া দরকার। দেশে সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য সরকার নানামুখী পদক্ষেপ নিয়েছে। তবে গৃহীত পদক্ষেপসমূহ দাতাগোষ্ঠী কর্তৃক নির্ধারিত না হয়ে বরং দেশের উপযুক্ত ও লাগসই হওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। সামুদ্রিক সম্পদ আহরণের ব্যবস্থা আরো বাস্তবসম্মতভাবে গ্রহণ করা প্রয়োজন। নচেৎ এই সম্পদের অনেক খানি প্রতিবেশী দেশগুলো নিয়ে নিতে পারে। কারিগরি কলা-কৌশল উদ্ভাবনে আধুনিকতা ও বৈশ্বিকতার পাশাপাশি এদেশের উপযোগী নানামুখী প্রযুক্তি তৈরির উদ্যোগ নিতে হবে। এসব প্রযুক্তির ব্যবহারে দেশীয় জনবল তৈরি করতে হবে। আঞ্চলিক সহযোগিতা সব সময়ে দেশের জন্যে ইতিবাচক যাতে হয় সেজন্য দরকষাকষি ও শর্তাবলি নির্ধারণের ক্ষেত্রে দেশের স্বার্থ, বৈজ্ঞানিক কলা-কৌশল ও জনকল্যাণের বিষয়টি মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা, বৈজ্ঞানিকদের মধ্যে অনুপ্রেরণা হিসাবে কাজ করতে হবে।
এসডিজি বাস্তবায়নের জন্য যে১৭টি লক্ষ্যমাত্রার রয়েছে সেগুলো বিভিন্নমুখী কর্মকাণ্ড ও কর্তৃপক্ষের আওতায় পরিচালিত হচ্ছে। তার বদলে একটি টাস্কফোর্সগঠনকরে একক কমিটির নেতৃত্বে এসডিজির সকল লক্ষ্য বাস্তবায়নের পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। এদেশের সিংহভাগ জনসংখ্যা বর্তমানে ত্রিশের নিচে। এদের প্রতি লক্ষ রেখে কেবল সরকার নয়, বেসরকারি খাতকে ও তাদের কর্মসংস্থান কৌশল তৈরি করতে হবে। এদিকে বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের জন্যে বাংলাদেশ দায়ী না হলেও এখন পর্যন্ত কেবল বাংলাদেশ নয়, অধিকাংশ ক্ষতিগ্রস্ত দেশই ক্ষতিকারক দেশ থেকে ক্ষতিপূরণ পাচ্ছেনা।
দেশে পরিবেশগত মান উন্নয়নে জনগণের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তবে কিছু অসাধু উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ী আছেন যারা অপরের সম্পদ কিংবা নদ-নদী-খাল-বিলকে নিজের মনে করে আত্মসাৎ করে থাকে। আসলে প্রকৃতিকে কেউ ধ্বংস করলে প্রকৃতির অমোঘ নিয়মে তার পরিণাম ভোগ করতে হয়। প্রকৃতির প্রতিশোধ বড় নির্মম।
দেশ থেকে দারিদ্র্য নির্মূল করতে সরকার সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কর্মসূচির আওতায় ৫১ লাখ ২০ হাজার প্রতিবন্ধী, বয়স্ক, বিধবা ও শারিরীকভাবে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীর মাঝে সরকার বিভিন্ন ধরনের ভাতা প্রদান করছে। পল্লী সমাজ সেবা কার্যক্রমের আওতায় সুফলভোগীর সংখ্যা ২৪,১৫,০০০জন। দরিদ্র নারীদের ক্ষমতায়ন ও অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য পল্লী মাতৃকেন্দ্র কার্যক্রমের আওতায় বর্তমানে দেশের ৬৪টি জেলায় ৩১৮টি কর্মসূচির আওতায় সুফলভোগীর সংখ্যা ৮৩৪৯৬০।
২০১৬ সালে বয়স্ক ভাতার হার ৪০০টাকা থেকে ৫০০টাকায় উন্নীত করা হয়েছে। উপকারভোগীর সংখ্যা এখন ৩১.৫ লক্ষ। বিধবা ভাতার হার ও ৫০০ টাকায় উন্নীত করা হয়েছে, উপকার পাচ্ছেন ১১.৫ লক্ষ দুস্থ ও বিধবা নারী। ৭০ হাজার প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষা উপবৃত্তির ২০১৬-১৭ সালের বাজেট নির্ধারিত হয়েছে ৪৭.৮৮ কোটি টাকা। ২০১৬ সালে ১৪ লাখ ৯০ হাজার ১০৫ জন শারীরিক প্রতিবন্ধীকে শনাক্ত করা হয়েছে।
একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের অধীনে ক্ষুদ্র সঞ্চয়ের মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের ১০০টি শাখা উদ্বোধনকরা হয়েছে।
অসচ্ছল প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের পুনর্বাসন কার্যক্রমের আওতায় সুফলভোগীর সংখ্যা বর্তমানে৭.৫০ লক্ষ।২০১৬-১৭ অর্থ বছরে তাদের জন্য ভাতা বরাদ্দ হয়েছে ৬০০ টাকা হারে ৫৪০কোটি টাকা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ আটটি উদ্যেগের একটি হচ্ছে আশ্রয়ণ প্রকল্প। আশ্রয়ণ প্রকল্পের ২য় পর্যায়ে ২৩৮টি প্রকল্পের অধীনে সুফলভোগীর সংখ্যা২২,০৪০টিপরিবার। এই প্রকল্পের অধীনে ১ লক্ষ ২২ হাজার পরিবারের মধ্যে ৯৭ কোটি টাকা ঋণ প্রদান করা হয়েছে। দেশের জনগণকে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী করার মাধ্যমে দারিদ্র্য নিরসনের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আটটি উদ্ভাবনী উদ্যোগের অন্যতম একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প। এছাড়া দারিদ্র্য বিমোচন ও পল্লী উন্নয়নের অংশ হিসেবে ‘চরজীবিকায়ন কর্মসূচি-২’, ‘সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন কর্মসূচি’, ‘পল্লিজনপদ (উন্নতআবাসন) সৃজন’, ইকোনমিক এমপাওয়ারমেন্টঅফ দি পুওরেস্ট’, মিল্কভিটার কার্যক্রম সম্প্রসারণ, বঙ্গবন্ধু দারিদ্র্য বিমোচন ও পল্লীউন্নয়ন একাডেমি প্রতিষ্ঠাকরণ ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।
বর্তমানে দেশব্যাপী গড়ে ওঠা ক্ষুদ্রক্ষুদ্র কৃষিভিত্তিক খামারের সংখ্যা ১৮.৭২ লক্ষ। ডিজিটাল বাংলাদেশের অবদানে সুবিধাভোগীরা অনলাইনের মাধ্যমে ২৫৭৩ কোটি টাকা লেনদেন করেছে। ইতোমধ্যে ৬৪ জেলার ৪৮৫টি উপজেলায় এ অনলাইন কার্যক্রম চালু করা হয়েছে। দারিদ্র্য বিমোচনের লক্ষ্যে বিআরডিবির আওতায় এ পর্যন্ত ১,৯৯,৬৮৮টি সমিতি ও দল গঠন করা হয়েছে। কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে সেচ কার্যক্রমের আওতায় সদস্যদের মাঝে১৮,৪৬০টি গভীর নলকূপ, ৪৪,৫২৩টি অগভীর নলকূপ, ১৯,৪০৫টি শক্তিচালিত পাম্প এবং ২,৭৩,০০০টি হস্তচালিত পাম্প বিতরণ করা হয়েছে। বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমি ৮৮টিপ্রশিক্ষণ, অবহিতকরণ এবং কর্মশালা সংগঠনের মাধ্যমে ৩,৬৫১জন অংশগ্রহণকারীকে প্রশিক্ষণ প্রদান করেছে। চরজীবিকায়ন কর্মসূচির আওতায় কুড়িগ্রাম,জামালপুর, গাইবান্ধা,বগুড়া এবং সিরাজগঞ্জ জেলার২৮টি উপজেলার২.৫০ লক্ষ মানুষপ্রত্যক্ষ এবং প্রায় ১০ লক্ষ মানুষ পরোক্ষভাবেউপকৃতহচ্ছে।
ড. কাজীখলীকুজ্জমান আহমেদের নেতৃত্বে পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) জনকল্যাণে তাদের সহযোগী ১৯৫টি পার্টনার অর্গানাইজেশনের মাধ্যমে টেকসই উন্নয়নে কাজ করে চলেছে। মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি (এমআরএ)কে ঢেলে সাজানো উচিত। নচেৎ এটি মুখ থুবড়ে পড়া একটি সংস্থায় পরিণত হবে।
জনকল্যাণের বিষয়টি উপেক্ষিত হবে। সর্বক্ষেত্রে দারিদ্র্যদূরীকরণের জন্য ৬ষ্ঠ এবং ৭ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় সরকার নানামুখী ব্যবস্থা নিয়েছে। উন্নয়নের ধারাবাহিকতায়২৮,৭৯৩কোটি টাকা ব্যয়ে পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণের কাজ এগিয়ে চলেছে দ্রুত। দেশি বিদেশি সব বাধাকে নস্যাৎ করে দিয়ে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু তৈরির এ প্রয়াস সাধুবাদযোগ্য।
দেশে বিদ্যুৎ ঘাটতি মোকাবিলায় সরকারের উদ্যোগের প্রশংসা করতে হয়। ১,১৮,০০০কোটি টাকা ব্যয়ে রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পটি প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে। আশা করা যাচ্ছে যে, এ প্রকল্পটি সমাপ্ত হলে ২৪০০মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হবে। তবে সস্তায় বিদ্যুৎ উৎপাদনের উপর জোর দেওয়া দরকার।
ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে সজীব ওয়াজেদ জয়ের নেতৃত্বে বিশেষ অগ্রগতি সাধিত হচ্ছে। প্রশাসন যন্ত্র পরিচালনায়-ই-গভর্নেসের ব্যাপ্তি ঘটছে। এ পর্যন্ত ৫ হাজার২ শ৭৫টি ডিজিটাল সেন্টার স্থাপিত হয়েছে। ডিজিটালাইজেশনের সঙ্গে সঙ্গে জনগণের মধ্যে এর ভালো দিকগুলো ছড়িয়ে দেওয়ার প্রয়াস নেওয়া হয়েছে। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন কর্মকাণ্ড। সাইবারক্রাইম ঠেকানোর জন্য সাইবার পুলিশের প্রয়োজন রয়েছে।
বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তবে বোর্ড অব ইনভেস্টমেন্ট এবং রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর সার্বিক কর্মকাণ্ড ঢেলে সাজানো দরকার। আশা করা যাচ্ছে, এক কোটি লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করা হবে যা ২০২১ সাল নাগাদ কাজ শুরু করতে সক্ষম হবে।
লেইক এবং হাকফেলট (১৯৯৮) সালে মন্তব্য করেছেন যে, সামাজিক পুঁজি যোগাযোগের মাধ্যম হিসাবে বিবেচিত হয়ে থাকে যা নাগরিকদের মধ্যে একটি সম্পর্ক উন্নয়ন করে থাকে, সামাজিক পুঁজি বৃদ্ধি করে এবং কৌশল হিসাবে রাজনৈতিক উপায় ও প্রক্রিয়াকে অনেকাংশে সাফল্য দিতে সক্ষম হয়।
লিডবিরটর (১৯৯৭) সালে অভিমত ব্যক্ত করেন যে, সামাজিক উদ্যোক্তা উদ্ভাবনী শক্তির অধিকারী হয়ে থাকে। তার এ বক্তব্য প্রনিধানযোগ্য। যখন কোনো উদ্ভাবনই ঘটে থাকে তখন সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে এক স্থান থেকে অন্যস্থানে ছড়িয়ে পড়ে। ফলে এ উদ্ভাবনী শক্তিকে মানুষ যদি তার ও সমাজের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে পরিচালিত করে তবে তা দেশ ও জাতির জন্যে কল্যাণ বয়ে আনতে পারে। আবার খারাপ কাজে ব্যবহার করলে তা কিন্তু হিতসাধনের বিপরীত ভিন্নমুখীতা দেয়।
রাথানআউয়ে বুনজম এবং আলি বলেন, আরও নিবিড় ও বাস্তবমুখী নীতিবিশেষ করে স্ব-প্রণোদিত উদ্যোক্তাদের জন্য সামাজিক উদ্যোগ উন্নয়নের জন্য উন্নত করা উচিত। গবেষণা কাজ থেকে অভিজ্ঞতা, তারা পালন করে গ্রামীণ দরিদ্র সংগঠিত এবং স্ব-নিয়ন্ত্রিত কমিউনিটি ভিত্তিক সংগঠন যা সামাজিককল্যাণ এবং Pareto optimality নিশ্চিত একসঙ্গে কাজ করছে। নেই শুধু ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগের, কিন্তু এছাড়াও মাইক্রো উদ্যোগের আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বিশেষ অগ্রাধিকার এবং অন্তর্ভুক্তি পাওয়া উচিত দারিদ্র্য বিমোচন, সরকারি-বেসরকারি ও বিদেশি কৌশলগত মিত্রতার উপর বিশেষ জোর দিয়ে ক্ষুদ্র ও মাঝারি এন্টারপ্রাইজ খাতে প্রয়োজনীয় যথাযথ পদক্ষেপ উন্নয়নশীল জন্য প্রয়োজন হচ্ছে দেশের ক্ষুদ্র প্রতিষ্ঠানের।
রাজনৈতিক দর্শনই বর্তমানে সামাজিক পুঁজি গড়ে উঠতে সহায়তা প্রদান করছে যা জনমানুষের বহুমুখী দরিদ্রতা থেকে মুক্তি দিতে সক্ষম হচ্ছে।পরিবেশ অবশ্যই সামাজিক উন্নয়ন, ন্যায়বিচারও সুষম বন্টন ব্যবস্থার উপর জোর দিতে হবে। বর্তমানে বাংলাদেশে অতি দরিদ্রের সংখ্যা যেভাবে হ্রাস পাচ্ছে তা বস্তুত সরকারের রাজনৈতিক দর্শনের পাশাপাশি স্থিতিশীল অর্থনৈতিক উন্নয়নের পূর্বশর্ত হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। আশার কথা সাম্প্রতিক এক হিসাবে দেখা যাচ্ছে যে, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অন্তর্ভূক্তির ক্ষেত্রে আট ধাপ অবস্থান উন্নীত করতে সক্ষম হয়েছে। কমিউনিস্ট ব্যাংকিং তৃণমূল পর্যায়ে করা গেলে গতিময়তা পাবে।
সামাজিকযোগাযোগের ক্ষেত্রে অতি প্রয়োজনীয় উপাদান হিসাবে বিবেচিত হয় সামাজিকবুদ্ধিমত্তা। রিগো (২০১৪) মন্তব্য করেছেন যে, সামাজিক যোগাযোগের ক্ষেত্রে সাধারণ চলার মতো গুণ এবং সমাজের অন্যদের সাথে একীভূতভাবে কর্মসম্পাদন করার ক্ষমতা বোঝার। রিগোর এ বক্তব্য অতিশয়তাৎপর্য মণ্ডিত। আমরা যদি মনুষ্যসভ্যতার ইতিহাস পর্যালোচনা করি তবে দেখব যে, অগ্রসারমান জীবনযাত্রার ক্ষেত্রে সামাজিক বুদ্ধিমত্তা একটি অন্যতম উপাদান হিসাবে বিবেচিত হয়ে থাকে। আসলে যুথবদ্ধভাবে সমাজে বাস করতে গেলে সামাজিক বুদ্ধি অত্যন্ত প্রয়োজন হয়, যা সমাজের নিজের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে সহায়তা করে থাকে।
আমরা যদি ইতিহাস পর্যালোচনা করি পারমাণবিক বোমা উদ্ভাবনের পর নাগাসাকি ও হিরোশিমাকে তা মারণাস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছিল। আবার শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের মাধ্যমে জনকল্যাণে ব্যবহৃত হয়। অন্যদিকে সামাজিক উদ্যোক্তারা সমাজে দক্ষতা, কার্যকারিতার মাধ্যমে যোগ মূল্যসংযুক্ত করতে সক্ষম হয়ে থাকে।
এদেশে আবহমানকাল থেকে সামাজিক ব্যবসা প্রচলিত ছিল যার মূলভিত্তিভূমি ছিল সামাজিক পুঁজি, বিনিয়োগও শ্রম।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বর্তমানে ক্ষুদ্র সঞ্চয়ের উপর জোর দিচ্ছেন। এটি সামাজিক উন্নয়নে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ক্ষুদ্রসঞ্চয়কে একত্রিত করে সামাজিক পুঁজিতে রূপান্তর ও পাশাপাশি মানবপুঁজি এবং যোগাযোগের মাধ্যমে ক্ষমতায়ন, কর্মদক্ষতা ও কার্যকারিতা পরিদর্শন করা সম্ভব হয়। উদ্যোক্তাকে অবশ্যই সামাজিক উন্নয়নে জনগণের প্রয়োজনের নিরিখে স্বল্প মূল্যে পণ্য সরবরাহ ব্যবস্থায় উদ্বুদ্ধ হতে হবে।
অবশ্য সরবরাহজনিত ব্যবস্থাপনার অপ্রতুলতার কারণে অধিকাংশ কৃষক ন্যায্য মূল্য বঞ্চিত হচ্ছে। মাঝখান থেকে মধ্যস্বত্ব ভোগীরা লাভ করছে। তারপর ও ৩০/৪০ বছর আগে কৃষক, মৎস্যজীবীসহ অন্যান্য পেশার লোকদের আগের মতো ঠেকানো সম্ভব হচ্ছে না। স্থিতিশীল অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্যে অবশ্যই বন্টন ব্যবস্থাকে সুষম ও জনমুখী করার প্রয়োজন রয়েছে। নচেৎ এ ব্যবস্থাপনায় যে ত্রুটিসমূহ চিহ্ণিত হবে প্রকারান্তরে তা বাজার ব্যবস্থাপনার সকল ত্রুটিবিচ্যুতিকে দূর করবে না। বরং তথ্যে এক ধরনের সমন্বয়হীনতা বহাল থাকবে। এজন্যে অবশ্য সরকার মধ্যস্বত্বভোগীদের দূর করার প্রয়াস ও গ্রহণ করেছেন এবং সরাসরি পণ্য ক্রয় বিক্রয়ের ব্যবস্থাপনায় জোর দিচ্ছেন।
ধীরে ধীরে গ্রামীণ অর্থনীতি যত শক্তিশালী হচ্ছে তত কিন্তু নানামুখী পরিবর্তনশীলতার মাধ্যমে প্রবাহিত হচ্ছে অর্থনৈতিক উন্নয়নের উপাদানসমূহ। এক্ষেত্রে অবশ্যই সামাজিকযোগাযোগ ব্যবস্থাপনা কাজ করে থাকে।
প্রতিযোগিতাপূর্ণ বিশ্ববাজার ব্যবস্থায় ক্ষমতায়ন, ক্রয়ক্ষমতা এবং সামাজিক উদ্যোক্তা একত্রিতভাবে সামাজিকযোগাযোগ ব্যবস্থাপনাকে একটি দেশের উন্নয়নে কাজ করে অতি দারিদ্র্য কিংবা দারিদ্র্যের দুষ্টু চক্র থেকে মুক্তি দেয়। এক্ষেত্রে মোবাইল কিংবা ইন্টারনেটের মাধ্যমে অথবা প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়াগুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা হিসাবে পালন করে থাকে।
একটি তাত্ত্বিক মডেল উদ্ভাবন:
উপরোক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে আবহমান কাল থেকে চাল সামাজিক যোগাযোগ ও জনগণের ক্ষমাতয়নের একটি তত্ত বা মডেল সচিত্র নিম্নে দেখানো হলো:
চিত্র নং : ১ দেখা যায় যে, পরিবেশও বেশ গুরুত্ব বহন করে থাকে।
মোবাইল, প্রযুক্তি, ডিজিটাল এবং ওয়েব ইন্টারফেসের গ্রামাঞ্চলে একটি অনুকূল গ্রামীণ গতিবিদ্যাসহ সামাজিক মিডিয়া তৈরি করবে| প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সামাজিক নেটওয়ার্কিং অনুষ্ঠিত হবে, যাতে জনগণ তথ্যপ্রতি সাম্য করতে অন্তর্ভুক্তি পেতে পারেন | সম্প্রদায় (কমিউনিটি) ব্যাংকিং মাধ্যমে অনানুষ্ঠানিক খাতে, আনুষ্ঠানিক খাতে এবং আর্থিক অন্তর্ভুক্তি মধ্যে আসা উচিত| কমিউনিটি ব্যাংকিং একটি কম খরচে, যা ব্যাংকিং চ্যানেলে এবং ডাকঘরে বিকল্প একটি বিশেষ নিয়ম এবং বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে প্রবিধান এক্ষেত্রে কাজ করতে হবে|
Win-Win অবস্থায় ব্যবসা-বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক এবং সামাজিক বুনিয়াদ প্রতিষ্ঠায় গুরুত্ব আরোপ করতে হবে। কার্যকারিতা ও দক্ষতা দেশীয় এবং বৈশ্বিক অঙ্গনে এ মূল্য সংযোজনের সাধা সাহায্য করবে| সামাজিক উদ্যোক্তাদের সামাজিক সঞ্চয়ী, সামাজিক পুঁজি এবং সামাজিক নেটওয়ার্কিং থেকে প্রেরণা পেতে এবং সমাজে জনগণের ক্ষমতায়নের তৈরি করবে| যদি সামাজিক বিনিয়োগ সাহায্যে সামাজিক নিরাপত্তা সামাজিক এন্টারপ্রাইজ উন্নয়নের জন্য ব্যবহার করা যাবে না এমন ঘটতে পারে সামাজিক সঞ্চয়ী সামাজিক বিনিয়োগ প্রক্রিয়া হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না যদি বদলে নিষ্কাশন অপচয় সৃষ্টি করতে পারে|
টাকার অভাবে কেবল খুলনায় দুটো গ্রামে পরীক্ষা করে দেখা গেছে যে সামাজিক যোগাযোগতত্ত জনগণের ক্ষমতায়নে কাজ করে থাকে। এ লেখকের নেতৃত্বে একটি গবেষক দল Social Networking অর্থাৎ সামাজিক নেটওয়ার্কিং নামে একটি তত্ত্ব পরীক্ষা করে দেখছেন। প্রাথমিক পরীক্ষায় প্রমাণিত হয়েছে যে, প্রধানমন্ত্রীর কথাই যথার্থ। ক্ষুদ্র ঋণ নয়, বরং ক্ষুদ্র সঞ্চয় সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে জনকল্যাণ করে থাকে। গবেষণার মাধ্যমে এটি পরিষ্ফূটিত হয়েছে যে হাজার বছরের বাঙালি ঐতিহ্যে সামাজিক সম্পর্ক ও বন্ধন নানামুখী প্রতিকূলতার মধ্যেও মানুষের দারিদ্র্যসীমা অতিক্রমে সহায়তা করে থাকে। গ্রামীণ ব্যাংক এখন মান্ধাতার আমলের ধ্যান-ধারণায় কেবল মুনাফামুখী কর্মকাণ্ড করছে। ঋণগ্রহী তাদের ক্ষতি করছে। তবে সরকার বর্তমানে বিধবা ও স্বামী পরিত্যক্তা, হিজড়া, দলিতও বেদে, বয়স্কদের জন্যে নানামুখী উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন। সবচেয়ে বেশি হিত সাধনে ব্যাপৃত হয়েছেন সায়মা ওয়াজেদ পুতুল। আসলে প্রতিবন্ধীদেরও যে অধিকার রয়েছে, সামাজিক মর্যাদার রয়েছে এ ব্যাপারে আগে কেউ এভাবে ভাবেননি।
উপরোক্ত মডেলটি দেশে বিদেশে ব্যাপকভাবে পরীক্ষা করার জন্যে সরকারও বেসরকারিখাত এবং বিদেশি গবেষকদের কাছে অনুরোধ জানাচ্ছি। পাশাপাশি আশা করা সামাজিক যোগাযোগ ব্যবস্থাপনার তাত্তিক বিশ্লেষণকে মানব উন্নয়নে ও আত্মমর্যাদাশীল করে তুলতে হলে আর্থিক অন্তর্ভূক্তিকরণের ক্ষেত্রে ক্ষুদ্রসঞ্চয় বাংলাদেশে তৃণমূল পর্যায়ে কমিউনিটি ব্যাংকিং চালুর উদ্যোগ গ্রহণ করা দরকার। এ ব্যাপারে সরকার প্রধান জননেত্রী শেখ হাসিনার সদয় দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
লেখক : অর্থনীতিবিদ ও শিক্ষাবিদ
E-mail: [email protected]