ম্যালেরিয়া প্রতিরোধে ভিন্ন উপায়ে বাগান
প্রকাশিত : ১১:৪৩ এএম, ৬ জুলাই ২০১৭ বৃহস্পতিবার | আপডেট: ০৭:৪০ পিএম, ৬ জুলাই ২০১৭ বৃহস্পতিবার
ছবি : ভিন্ন উপায়ে বাগান করে ম্যালেরিয়া মোকাবেলা সম্ভব-বলছেন গবেষকরা
ম্যালেরিয়া প্রতিরোধে ওষুধ নয়, বাগান হতে পারে সবচেয়ে শক্তিশালী অস্ত্র। বাগানের ফুল ছেটে ফেলে দিয়ে মশার খাদ্য সরবরাহ কমিয়ে দিয়ে প্রাণীটির সংখ্যা বৃদ্ধি রোধ করা সম্ভব বলে মনে করেন গবেষকরা। খবর বিবিসির।
পশ্চিম আফ্রিকার দেশ মালিতে বান্দিয়াগ্রা জেলার নয়টি গ্রামে এই পরিকল্পনা নিয়ে পরীক্ষাও চালিয়েছে গবেষকদের একটি দল।
সেখানে সাধারণ গুল্ম থেকে ফুল সরিয়ে ফেলা হয়। ফলে বয়স্ক, নারী ও ক্ষতিকারক পোকামাকড় যেগুলোর মাধ্যমে সাধারণত ম্যালেরিয়া ছড়ায়-সেসব পোকামাকড় মেরে ফেলা হয়।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এভাবে বয়স্ক স্ত্রী মশাদের মারতে পারলে ম্যালেরিয়ার বিস্তার রোধ করা সম্ভব।
অ্যানোফিলিস প্রজাতির এসব মশা তাদের লালাগ্রন্থিতে ম্যালেরিয়ার জীবানু বহন করে এবং কোনো মানুষকে কামড়ালে রক্তে সেই জীবানু দিয়ে দেয়।
জীবানুবাহিত ওই ব্যক্তির মাধ্যমেই ম্যালেরিয়া ছড়িয়ে পড়ে। স্ত্রী মশাগুলোও উর্বর হয়ে পড়ে আর ভালো রক্ত খুঁজে এবং ডিমও তৈরি করে যেসব ডিমের মধ্যে ওই পরজীবী বাস করে।
মাত্র দশদিনের মধ্যেই ম্যালেরিয়া জীবানুবাহিত নতুন আরেকটি মশা মানুষের মধ্যে এই রোগ সংক্রমণ করার জন্য উপযোগী হয়ে উঠে।
মানুষের মধ্যে ম্যালেরিয়া সংক্রমণের পাশাপাশি নিজেকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য ফুলের মধুর ওপরও নির্ভর করে স্ত্রী মশাগুলো।
মালির বান্দিয়াগ্রা জেলায় এমন কিছু ঝোপঝাড় আছে যা ম্যালেরিয়া জীবানু বহন করতে পারে এমন মশার চারণভূমি।সেখানে ফুলের এমন ঝোপ আছে যেখান থেকে অনায়াসে মধু খেতে পারবে স্ত্রী মশাগুলো।
মালির বিশেষজ্ঞরা ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের গবেষকদের সাহায্য নিয়ে উদ্যান সংক্রান্ত একটি পরীক্ষামূলক কার্যক্রম চালান যেটার মাধ্যমে তারা দেখতে চেয়েছেন গাছের ফুল সরিয়ে ফেলার মাধ্যমে স্থানীয় মশাগুলো মেরে ফেলা সম্ভব হয় কিনা।
তারা নয়টি গ্রাম বেছে নেন-এর মধ্যে ছয়টি গ্রামে প্রচুর ফুল গাছ ও ফুলের ঝোপঝাড় এবং বাকি তিনটি গ্রামে তেমনভাবে ফুলের ঝোপঝাড় নেই। গ্রামগুলোতে আলোর মাধ্যমে মশা ধরার ব্যবস্থাও করেন তারা। বাগানের মাধ্যমে মশা সংকলন বন্ধ করা যায় কিনা সেটা দেখাও উদ্দেশ্য ছিল। বাগান থেকে ফুল ছেঁটে ফেলার পর অন্তত ৬০ শতাংশ মশা কমে যায়। পরে গবেষকরা একমত হন যে, মশাগুলো ক্ষুধায় মারা গেছে।
গবেষকদের একজন প্রফেসর জো লাইনস বলছেন, এর মাধ্যমে এটাই বুঝা গেল যে, কোনো ধরনের ওষুধ ব্যবহার না করে আমরা পরিবর্তন আনতে পারি।
//এআর