ঢাকা, রবিবার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১

উত্তরাঞ্চলে পানিবন্দি ৩ লাখ মানুষ

প্রকাশিত : ১০:০৫ এএম, ১১ জুলাই ২০১৭ মঙ্গলবার | আপডেট: ১০:৩১ এএম, ১১ জুলাই ২০১৭ মঙ্গলবার

ছবি: ফাইল ফটো

ছবি: ফাইল ফটো

ভারি বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় উত্তরঞ্চলের তিনটি জেলায় প্রায় তিন লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এ অঞ্চলে ব্রহ্মপুত্র ও তিস্তা নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে অতিক্রম করছে। পাশাপাশি ধরলা, ঘাঘট ও দুধকুমাররসহ অন্য নদীর পানিও রয়েছে বিপদসীমার কাছাকাছি।

উত্তরঞ্চলীয় জেলা কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা ও নীলফামারী জেলার প্রায় তিন লক্ষ মানুষ পানিবন্দি হয়ে আছে। বন্ধ রয়েছে ওইসব এলাকার ২২৩টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাঠদান বন্ধ। বন্যার্তদের অভিযোগ, ত্রাণ বিতরণ শুরু হলেও তা পর্যাপ্ত নয়।

কুড়িগ্রাম

পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলী মোখলেছুর রহমান বলেন, ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা, ধরলা, দুধকুমারসহ সবকটি নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় কুড়িগ্রামের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে। এক সপ্তাহের বন্যায় প্রায় দেড় লাখ মানুষ পানিবন্দি রয়েছে। প্লাবিত হয়েছে নতুন নতুন এলাকা। চিলমারী পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্রের পানি ১৭ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ১০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, এসব এলাকায় সরকারিভাবে ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম শুরু হলেও অপ্রতুল তা ছিল। গতকাল উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে একশ পরিবারকে ১০ কেজি করে চাল বিতরণ করা হয়।

কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক আবু ছালেহ মোহাম্মদ ফেরদৌস খান গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, বন্যাকবলিত এলাকায় দুই হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার, দেড়শ মেট্রিকটন চাল ও তিন লাখ ২৫ হাজার টাকা সরবরাহ করা হয়েছে।

গাইবান্ধা

জেলায় বন্যা পরিস্থিতি অবনতি হওয়ায় সুন্দরগঞ্জ, গাইবান্ধা সদর, ফুলছড়ি ও সাঘাটা উপজেলায় প্রায় দেড় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে আছে। বন্ধ রয়েছে ৪৮টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠদান।

পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্রের পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ১৭ সেন্টিমিটার উপর ও ঘাঘটের পানি বিপদসীমার মাত্র এক সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর ফলে বন্যায় দেড় লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক গৌতম চন্দ্র পাল গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, প্রশাসনের হাতে পর্যাপ্ত ত্রাণ সামগ্রী রয়েছে। আশা করছি কোথাও কোনো ধরনের সমস্যা হবে না। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জরুরিভাবে একশ ২৫ মেট্রিক টন চাল ও ১০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

নীলফামারী

জেলায় ভারি বর্ষণ আর পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীর পানি বিপদসীমার ৩২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। দুই-তিন দিনের মধ্যে আরও পানি বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি কপাট খুলে রেখে পানি নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। এ জেলায় ডিমলা ও জলঢাকা উপজেলায় ৩০টি গ্রামের পাঁচ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে আছে।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ খালেদ রহীম গণমাধ্যমকে জানিয়েছে, পরিস্থিতি মোকাবেলায় ইতোমধ্যে ৪০ মেট্রিক টন চাল ও ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ওই বরাদ্দ বন্যাকবলিতদের মাধ্যে বিতরণ করা হবে।