ঢাকা, রবিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৫,   বৈশাখ ৬ ১৪৩২

রূপচর্চায় গোলাপজল

প্রকাশিত : ০৫:৪০ পিএম, ১১ জুলাই ২০১৭ মঙ্গলবার | আপডেট: ০৬:৫১ পিএম, ১৪ জুলাই ২০১৭ শুক্রবার

পবিত্রতা ও সৌন্দর্যের অন্যতম উপাদান হিসেবে গোলাপজলের ব্যবহার হয়ে আসছে আদি কাল থেকেই। মিসরীয় অঞ্চলে প্রথম গোলাপজলের উৎপত্তি বলে অনেকের ধারণা। রূপচর্চায় এটির ব্যবহার হয় প্রায় প্রতিটা দেশেই। জেনে নিন আপনার রূপচর্চায় এর ব্যবহার।

রুক্ষ-শুষ্ক চুলের সমাধান

চুল নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ রয়েছে অনেক। কারণ অনেকেই চুল নিয়ে বেশ চিন্তায় থাকেন, কারণ কারো চুল সিল্কি আবার কারো রুক্ষ। এ ক্ষেত্রে আপনি চাইলে সহজেই গোলাপজল ব্যবহার করতে পারেন। একটি ছোট বাটিতে গোলাপজলের সাথে সামান্য গ্লিসারিন মিশিয়ে তার মধ্যে তুলা ভিজিয়ে ১০-১৫ মিনিট পর্যন্ত মাথার চুলে ম্যাসাজ করুন। ৩০ মিনিট এভাবেই রাখুন। এরপর শ্যাম্পু করে চুল ধুয়ে ফেলুন। চুল ঝকঝকে সুন্দর থাকবে।

ফেসিয়াল ক্লিনজার

যারা এখনো পার্লারে যেতে আগ্রহী না তারা চাইলে নিজের ত্বকের সৌন্দর্য নিজেই করতে পারেন। ফেসওয়াস দিয়ে ভালো করে মুখ পরিস্কার করার পর একটি ছোট বাটিতে ১ টেবিল চামচ গোলাপজল নিয়ে তাতে কয়েক ফোঁটা গ্লিসারিন মিশিয়ে মুখে লাগিয়ে নিন। এভাবে করলে আপনার ত্বকের সৌন্দর্য পূর্বের চেয়ে বৃদ্ধি পাবে।

ক্লান্ত চোখের স্বস্তি

অনেকক্ষণ কম্পিউটার মনিটরের দিকে তাকিয়ে থাকলে অনেক সময় চোখ ব্যথা হয়, চোখ জ্বালাপোড়া করে বা চোখে ক্লান্তিভাব চলে আসে। সেক্ষেত্রে ঠাণ্ডা গোলাপজলে তুলা ভিজিয়ে চোখে দিলে স্বস্তি পাওয়া যাবে। পাশাপাশি চোখের ফোলাভাবও কমে যাবে।

ত্বককে সতেজ কোমল রাখে

গরমের তীব্রতা আপনার ত্বককে কোমল ও সতেজ রাখতে বাধা সৃষ্টি করে। এ ক্ষেত্রে আপনি বাইরে বের হবার সময় গোলাপজল নিয়ে যাবেন। কারণ গোলাপজল ত্বককে প্রাকৃতিক আর্দ্রতা ও পুষ্টি দান করার সঙ্গে সঙ্গে চেহারাটাও সতেজ রাখে। সারাদিনে সুযোগ পেলেই একবার গোলাপজলে মুখটা ধুয়ে নিতে পারেন।

চুলের কন্ডিশনার হিসেবে গোলাপজল

চুলের কন্ডিশনার হিসেবেও গোলাপজল ব্যবহার করতে পারেন, ফলও ভালো পাবেন। চুলে শ্যাম্পু করার পর এক মগ পানিতে এক কাপ গোলাপজল দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। গোলাপজল দেয়ার পর চুলে আর পানি লাগাবেন না। এভাবেই চুল মুছে শুকিয়ে ফেলুন। চুলকে গভীর থেকে কন্ডিশনিং এবং উজ্জ্বলতা বাড়াতে গোলাপজলের ভূমিকা অনেক।

ফেশিয়াল টোনার হিসেবে কাজ করে

ফেশিয়াল টোনার হিসেবে কাজ করে গোলাপজল। ফ্রিজে রাখা ঠাণ্ডা গোলাপজলে তুলা ভিজিয়ে পুরো মুখে লাগান। গোলাপজল মুখের লোমকূপ বন্ধ করতে সাহায্য করে ব্রণের সমস্যা থাকে না। তাই চাইলে অনেকেই নিয়মিত টোনার হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন গোলাপ জল।

ত্বককে দেয় গোলাপি আভা

গোলাপজল ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়িয়ে ত্বককে দেয় গোলাপি আভা। একটি পাত্রে ২ টেবিল চামচ বেসন আর তার সাথে গোলাপজল ও লেবুর রস মিশিয়ে পেস্ট বানিয়ে নিন। এই পেস্টটি মুখে লাগিয়ে ১৫ মিনিট অপেক্ষা করে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। দেখবেন ত্বকের উজ্জ্বলতা বেড়ে গেছে।

পুরো শরীরকে দিন সতেজতা স্নিগ্ধতা

সাধারণত যে লোশন বা ক্রিম ব্যবহার করেন তার সঙ্গে সামান্য গোলাপজল মিশিয়ে শরীরে লাগাতে পারেন। এছাড়াও গোলাপজল দিয়ে গোসল করলে এর ঘ্রাণেও আপনি সতেজ অনুভব করবেন।

গোলাপজলে ঘুচবে ব্রণের সমস্যা

গোলাপজলে আছে ভিটামিন সি ও অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান যা ব্রণের ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণ থেকে রক্ষা করে। এ ক্ষেত্রে একটি বাটিতে ১ টেবিল চামচ লেবুর রস আর ১ টেবিল চামচ গোলাপজল মিশিয়ে তা পুরো মুখে দিয়ে ৩০ মিনিট অপেক্ষা করুন। এরপর পানির ঝাপটায় মুখ ধুয়ে ফেলুন। আপনার লোমকূপ পরিষ্কার হবে, মুখের অতিরিক্ত তৈলাক্ত ভাব দূর হবে এবং ব্রণের সমস্যা কমে যাবে।

বয়সের ছাপ দূর করতে গোলাপ জল

গোলাপজল নিয়মিত ব্যবহারে চেহারায় বয়সের ছাপ দরে হবে সহজেই। কারণ এতে আছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ভিটামিন এ-এর গুণ যা বয়সের সঙ্গে সঙ্গে বলিরেখা, চোখের নিচ ফুলে যাওয়া ও বয়সের ছাপের সমস্যাটি এড়াতে বেশ কার্যকরী।

সংরক্ষণ করুন গোলাপজল

প্রথমে গোলাপের পাঁপড়িগুলি ছিঁড়ে নিন। এবার চুলায় পরিমানমত পানি ফুটতে দিন, পানি ফুটে গেলে তাতে গোলাপের পাঁপড়িগুলি ছেড়ে দিন এবং চুলা বন্ধ করে ঢাকনা দিয়ে ঢেকে রাখুন প্রায় ১৫-২০ মিনিট। এর পর ছাঁকনি দিয়ে ছেঁকে পানি বের করে নিলেই গোলাপজল তৈরি হয়ে গেল। বোতল বা এয়ার টাইট বয়ামে সংরক্ষণ করুন। চাইলে ফ্রিজে অথবা ঘরের স্বাভাবিক তাপমাত্রায়ও রাখতে পারেন।

আর/ডব্লিউএন