ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১

তোফা–তহুরা আলাদা হচ্ছে ১ আগস্ট

প্রকাশিত : ০৯:২৯ এএম, ১৮ জুলাই ২০১৭ মঙ্গলবার | আপডেট: ০৯:১৩ পিএম, ১৮ জুলাই ২০১৭ মঙ্গলবার

আলাদা হওয়ার অপেক্ষায় জোড়া লাগা যমজ তোফা ও তহুরা

আলাদা হওয়ার অপেক্ষায় জোড়া লাগা যমজ তোফা ও তহুরা

তোফা তহুরার বয়স ১০মাস। বাড়ি গাইবান্ধায়। এরা জোড়া লাগা এই যমজ শিশু। তোফা ঘুমায় তো তহুরা চোখ ড্যাব ড্যাব করে তাকিয়ে থাকে। কোনো কোনো সময় দুজনই একসঙ্গে চিৎকার করে। তাদের মাথা-হাত-পা সবই আলাদা। শুধু পিঠের নিচ থেকে কোমর পর্যন্ত লাগানো।

চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় একে বলা হয় ‘পাইগোপেগাস’। এবার এই দুই শিশুকে আলাদা করা হবে। এ জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু সার্জারি বিভাগের প্রস্তুতি প্রায় শেষ পর্যায়ে। তোফা ও তহুরার শারীরিক অবস্থা ভালো থাকলে ১ আগস্ট তাদের অস্ত্রোপচার করা হবে। হাসপাতালের শিশু সার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সাহনূর ইসলামের অধীনে এই শিশুরা ভর্তি।

অধ্যাপক সাহনূর জানান, বাংলাদেশের ইতিহাসে ‘পাইগোপেগাস’ শিশুকে আলাদা করার ঘটনা এটি প্রথম হবে। এর আগে ঢাকা শিশু হাসপাতালসহ অন্যান্য হাসপাতালে তিন জোড়া শিশুকে অস্ত্রোপচার করে আলাদা করা হয়েছে, তাদের ধরন ছিল ভিন্ন।

তাদের বাবা রাজু মিয়া ও মা শাহিদা বেগম জানালেন, তোফা ঘুমায় তো তহুরা চোখ ড্যাব ড্যাব করে তাকিয়ে থাকে। কোনো কোনো সময় দুজনই একসঙ্গে চিৎকার করে। আবার মেজাজ যখন একটু ভালো থাকে, তখন চার হাত-পা নেড়ে খেলে। গাইবান্ধা থেকে ঢাকা আসতে গিয়ে তারা ক্লান্ত হয়ে পড়েছে।

অধ্যাপক সাহনূর ইসলাম জানান, তাদের প্রায় সবকিছু আলাদা থাকলেও তাদের স্নায়ুরজ্জুর আবরণী পর্দা একসঙ্গে লেগে আছে। অস্ত্রোপচারের সময় এ আবরণী পর্দা আলাদা করে আবার সেলাই করে লাগিয়ে দেওয়া হবে। অনেক সময় এতে আবার ছিদ্র হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তা হলে হাত-পা নাড়তে না পারা, প্রস্রাব-পায়খানা নিয়ন্ত্রণে রাখতে না পারার শঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।

তোফা-তহুরা চতুর্থবারের মতো সার্জারি বিভাগে এসেছে। জন্মের আট দিনের মাথায় প্রথম আনা হলে অস্ত্রোপচার করে দুজনের পেটের ভেতরে পায়খানা বের হওয়ার রাস্তা আলাদা করে দেওয়া হয়। অস্ত্রোপচার পরবর্তী চিকিৎসাসেবার জন্য এসেছে আরও দুবার। আর এবার এসেছে আলাদা হতে।

রাজু ও শাহিদা দম্পতির পাঁচ বছর বয়সী এক ছেলে আছে। দুই মেয়ে জন্ম হওয়ার আগে শাহিদা জানতেন না তাঁর পেটে যমজ বাচ্চা। বাড়িতেই তিনি মেয়েদের জন্ম দেন। তখনই দেখেন যমজ এবং জোড়া লাগানো। এই দুই মেয়েকে দেখতে আসা মানুষের ভিড় সামলাতে হিমশিম খেতে হয়েছে পরিবারটিকে।

//এআর