চাকরিতে সফল হওয়ার উপায়
প্রকাশিত : ১২:১৬ পিএম, ১৮ জুলাই ২০১৭ মঙ্গলবার | আপডেট: ০৯:৫৭ এএম, ২২ জুলাই ২০১৭ শনিবার
পরীক্ষার ফল, চাকরি পেতে বেগ পেতে হবে না। চাকরি পাওয়ার পর তরতর করে ওপরে উঠে যাবেন, এ ধারণা সব সময় ধোপে টেকে না। বরং ক্যারিয়ারে কাঙ্খিত পর্যায়ে পৌছতে কিছু কৌশল অবলম্বন করতে হয়, বুদ্ধি খাটাতে হয়। এক্ষেত্রে ছলচাতুরির আশ্রয় না নিয়ে সৎ থেকেও চাকরিতে উন্নতি করা যায়।
আবার মোটামুটি রেজাল্ট নিয়েও কিছু কৌশল অবলম্বন করলে আপনি যে কোনো বড় প্রতিষ্ঠানে গুরুত্বপূর্ণ পদ পেতে পারেন। পৃথিবীতে বড় বড় প্রতিষ্ঠানে যারা বড় চেয়ার দখল করে আছেন তারা সবাই যে ভালো রেজাল্টধারী সেটি কিন্তু কেউ দিব্যি দিয়ে বলতে পারবে না।
একাডেমিক লাইফ-রেজাল্ট আর কর্মক্ষেত্র দুটি সম্পূর্ণ আলাদা ক্ষেত্র। চাকরিতে ভালো করতে হলে গোল ওরিয়েন্টেড হতে হয়, দুরদৃষ্টিসম্পন্ন হতে হয়। আত্মবিশ্বাস নিয়ে ধে র্যের সঙ্গে দৃঢ়পদে এগিয়ে যেতে হয়। কর্মক্ষেত্রে যারা সৎ ও দায়িত্বনিষ্ঠ থাকেন তারাই ভালো করেন।
কর্মক্ষেত্রে সফল তারাই হন যারা কর্তৃপক্ষের আস্থা অর্জন করতে পারেন। যারা দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে সৎ, ফাঁকি দেন না প্রতিশ্রুতিশীল তারাই উর্দ্ধতনের আস্থার জায়গায় চলে যান।
ক্যারিয়ার সামনের দিকে নিয়ে যাওয়ার আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ উপায় হল-যোগাযোগ দক্ষতা ও নেটওয়ার্কিং। এ দুটি আপনাকে দ্রুত কাঙ্খিত স্থানে পৌছে দিবে। পপসুগার-এর প্রতিষ্ঠাতা ও প্রেসিডেন্ট লিসা সুগার তাঁর ‘পাওয়ার ইওর হ্যাপি’ বইতে চাকরি পাওয়া ও চাকরির ক্ষেত্রে সফল হওয়ার কৌশল সম্পর্কে কিছু কথা বলেছেন। চলুন দেখে নেয়া যাক পপসুগার ডট কমে প্রকাশিত সেই কৌশলগুলো কী।
নিজেকে ভালোভাবে জানুন
যদি নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস থাকে, তাহলে নিজেই একটি পরীক্ষা নিন। যেমন : মেয়ার-ব্রিগস বা ডিআইএসসির মাধ্যমে অনলাইনে পরীক্ষা করতে পারেন। যা সহজেই আপনার চিন্তা ও আগ্রহের জায়গাটি পরিষ্কার করে তুলবে। এছাড়া ভাবনার জগৎকে প্রসারিত করার পাশাপাশি কাজের দক্ষতা এবং আপনাকে সক্রিয় করে তুলতে সাহায্য করবে।
নেটওয়ার্ক তৈরি
কোনো প্রতিষ্ঠানের ভেতরে কাজ করে এমন কারো সঙ্গে পরিচয় থাকা অনেক বড় সম্পদ আপনার জন্য। কেননা তার কাছ থেকে প্রতিষ্ঠানের কাজের ধরন, নিয়োগ প্রক্রিয়াসহ নানা বিষয়ে জানতে পারবেন। তবে নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা সহজ বিষয় নয়। নতুন সহকর্মী কিংবা নিত্যনতুন মানুষের সঙ্গে পরিচিত হোন। তাঁদের কথা মন দিয়ে শুনুন। বন্ধুত্বসুলভ আচরণ দেখান। তাহলে এক সময় ভালো নেটওয়ার্ক গড়ে উঠবে।
লিংকডইনসহ প্রফেশনাল সাইটগুলোতে নিয়মিত যোগাযোগ রাখুন। পরিচিত পেশাজীবীকে উৎসব পার্বনে মোবাইল থেকে ক্ষুদেবার্তা পাঠিয়ে কিংবা ইমেইল করে শুভেচ্ছা জানান। সম্ভব হলে মাঝে মধ্যে দেখা করুণ। এভাবে শক্ত একটা নেটওয়ার্ক গড়ে উঠবে। তখন ওই ব্যাক্তি তার প্রতিষ্ঠানে কোনো সুযোগ এলে আপনাকে টেনে নিবেন।
চাকরি ছাড়ার কারণ চিহ্নিত করুন
হুট করেই চাকরি ছেড়ে দিবেন না। তার আগে ভালো করে চিন্তা করুন। অতীতের চাকরির অভিজ্ঞতা খারাপ হতে পারে। কিন্তু তা ভেবে হতাশ না হয়ে ব্যর্থতার কারণ খুঁজে বের করুন। সেই ভুলগুলো থেকে শিক্ষা নিলে পরবর্তী চাকরি জীবনে অবশ্যই ভালো করবেন। বেটার অপরচ্যুনিটি না আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করুন।
কর্মস্থলে সব ধরনের কাজ শিখুন
একবার কোথাও কাজে যোগ দিলে সেখানকার বিভিন্ন কাজ সম্পর্কে ধারণা নিন। যা পরে আরো ভালো ক্যারিয়ার গঠনে সহায়ক হবে। ভালো চাকরি পাওয়ার গোপন কোনো রহস্য নেই। আপনাকে প্রতিটি বিষয় আয়ত্তে এনে কাজ করতে হবে। যেকোনো পরিবেশে নিজেকে খাপ খাইয়ে নিতে পারার দক্ষতা থাকতে হবে।
যোগাযোগে দক্ষতা বাড়ান
নতুন কারো সঙ্গে পরিচিত হতে সংকোচ কিংবা ভয় পাবেন না। নেটওয়ার্ক তৈরি করার গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার এটি। সে ক্ষেত্রে লিসা দিয়েছেন কিছু উপদেশ -
*বন্ধুত্বপূর্ণ হোন তবে পেশাদারিত্ব বজায় রাখুন;
*ই-মেইল পাঠানোর আগে ভুল ত্রুটিগুলো শোধরে নিন।
*ইনিয়ে বিনিয়ে কথা না বলে সোজাসাপ্টা কথা বলুন।
*সহজে যে উত্তর গুগলে অনুসন্ধানের মাধ্যমে পাওয়া যাবে, সেগুলা জিজ্ঞেস করে বিরক্ত করবেন না;
*কর্মস্থলের সঙ্গে একটি সুসম্পর্ক গড়ে তুলুন;
*ই-মেইলে সৃজনশীল বিষয়গুলো ফুটিয়ে তুলুন।
সাক্ষাৎকারের পূর্বপ্রস্তুতি
অবশ্যই সাক্ষাৎকারের আগে, যে পদের জন্য আপনি আবেদন করেছেন, তা সম্পর্কে, পদের জন্য যেসব অভিজ্ঞতা চাওয়া হয়েছে, সেসব বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা নিবেন। এরপর সাক্ষাৎকারে বসবেন। সেজন্য সংশ্লিষ্ট বিষয়ে পর্যাপ্ত পড়াশোনা করে নিজেকে প্রস্তুত করে নিতে হবে। যে প্রতিষ্ঠানে সাক্ষাৎকার দিবেন সেটি সম্পর্কে বিস্তারিত জানবেন।