যে কারণে ক্যারিয়ার শেষ হয়ে যেতে পারে
প্রকাশিত : ১০:২৫ এএম, ২৩ জুলাই ২০১৭ রবিবার | আপডেট: ০৫:২২ পিএম, ২৩ জুলাই ২০১৭ রবিবার
প্রতিকী ছবি
চাকরি পাওয়ার পর মনে হয়, হাঁফ ছেড়ে বাঁচলাম। স্টাডি ও ক্যারিয়ার দাঁড় করানোর চেষ্টা ছেড়ে দেয় অনেকেই। মনে করে সব চিন্তা শেষ। সত্যিই কি তাই? ক্যারিয়ারের উন্নতি চাইলে ভুলেও এমনটা ভাববেন না।
আপনাকে সব সময়, অফিসের বিষয়গুলোতে সচেতন থাকতে হবে। আর কিছু অভ্যাস তো অবশ্যই বদলে ফেলতে হবে, যা আপনার ক্যারিয়ার ধ্বংস করার জন্য যথেষ্ট।
সম্প্রতি স্কুপহুপ ওয়েবসাইটে ক্যারিয়ার ধ্বংসকারী কিছু বদঅভ্যাসের তালিকা দেয়া হয়েছে। একজন ক্যারিয়ার ওরিয়েন্টেড কর্মী হিসেবে আপনিও দেখে নিতে পারেন সেগুলো।
১. আপনি হয়তো অনেক দক্ষ একজন কর্মী, আপনার টিমের কেউ দুর্বল। তাই বলে কখনোই নিজের টিমকে অবহেলা বা উপহাস করবেন না। এটা আপনার ক্যারিয়ারের জন্য ক্ষতি বড় কারণ। যদি নিজের ক্যারিয়ার ভালো করতে চান, তাহলে সহকর্মীকে গুরুত্ব দিতে শিখুন। কোনো বিষয়ে তার দুর্বলতা থাকলে সেটি কাটিয়ে উঠতে তাকে সহায়তা করুন। এতে দুর্বল সহকর্মী যেমন আপনাকে শ্রদ্ধা করবে, অফিসও আপনাকে এজন্য ক্রেডিট দেবে।
২. সহকর্মী বা বসের সঙ্গে এমন কোনো প্রতিশ্রুতিতে আবদ্ধ হবেন না, যা আপনি রক্ষা করতে পারবেন না। আর যদি কথা দিতেই হয়, তাহলে সেটা যেভাবেই হোক রক্ষা করার চেষ্টা করুন।
৩. সব সময় শেষ মুহূর্তে কাজ শেষ করা ভালো অভ্যাস নয়। একবার বা দু’বার হতে পারে, কিন্তু সেটিরও যৌক্তিক গ্রাউন্ড থাকতে হবে। সদা যদি আপনি এমনটা করতে থাকেন, তাহলে বস আপনাকে ভালো চোখে দেখবে না, খুবই বিরক্ত হবেন।
৪. আপনি কাজের বিষয়ে সিরিয়াস না বলে অন্যরাও আপনার মতো হবে, এমনটা ভাববেন না। কোনোভাবেই সহকর্মীদের কাজে ব্যাঘাত ঘটাবেন না। এর ফলে সহকর্মীরা আপনার কাছে থেকে দূরে দূরে থাকার চেষ্টা করবে। টিম স্পিরিট নষ্ট করার দোষে আপনি দুষ্ট হতে পারেন।
৫. কোনো এক সহকর্মীর বিরুদ্ধে অন্য সহকর্মীদের কাছে কথা বলার অভ্যাস ত্যাগ করুন। এমনকি সহকর্মীদের কথা বসের সঙ্গে, বসের কথা সহকর্মীর সঙ্গে শেয়ার করাও ঠিক না। এতে আপনার ব্যক্তিত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে।
৬ . বসের আদেশ, নিষেধ, কথা মনোযোগ দিয়ে শুনতে হবে। ক্যারিয়ারের উন্নতি চাইলে অফিসে সবার কথা মন দিয়ে শুনুন। কখনোই এ বিষয়ে বিরক্তি প্রকাশ করবেন না। কোনো বিষয়ে দ্বিমত থাকলে বুঝিয়ে বলুন।
৭. অফিসের সবকিছুতেই হ্যাঁ বলাটা কি ভালো, না খারাপ? উত্তর হল, খারাপ। সবকিছুতেই রাজি হয়ে যাওয়াটা আপনার ক্যারিয়ার নষ্ট করে দেবে। এটা ঠিক যে, হ্যাঁ বলার জন্য আপনার বস ও সহকর্মীরা আপনার ওপর অনেক খুশি হবেন, তবুও যদি ক্যারিয়ার বাঁচাতে চান, তাহলে ‘না’ বলতে শিখুন। তবে যুক্তি ছাড়াই বস বা সহকর্মীর কথায় না বলাটা আবার ঝুঁকিপূর্ণ। আপনি কেন তার কথায় একমত নয় তা সুস্পষ্টভাবে তুলে ধরতে হবে।
৮. অফিসের ই-মেইলগুলো অযথা বড় করে লিখা যাবে না। কারণ অত সময় নিয়ে আপনার ইমেইল পড়ার সময় কারোরই নেই। এই ই-মেইলগুলো ছোট করে লিখতে শিখুন। আর সহকর্মীদের পাঠানো ই-মেইলে কখনোই অপ্রয়োজনীয় কথা লিখবেন না।
৯. সাদামাটাভাবে চাকরি করতে থাকলে একসময় আপনার ক্যারিয়ার ক্ষতিগ্রস্ত হবে। হয়তো আপনার চাকরি যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই, কিন্তু তাই বলে যেমন ইচ্ছা, তেমন করা যাবে না। মনে রাখবেন অফিস আপনাকে নিত্য জাজ করে। নিয়মিত দায়িত্ব অবহেলা বড় ক্ষতির কারণ হতে পারে। তাই অফিসে সিরিয়াস হওয়াটা খুবই জরুরি। সংশ্লিষ্ট বিষয়ে নিয়মিত স্টাডি করাও ক্যারিয়ারের জন্য দরকারী।
১০. অফিসে নিজের ইগো ধরে রাখলে ভবিষ্যতে আপনারই ক্ষতি হবে। সহকর্মীদের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ প্রাণবন্ত আচরণ আপনার ক্যারিয়ারের জন্যই ভালো।
১১. কর্মক্ষেত্রে বিশ্বস্ত ও আস্থাভাজন হওয়াটা খুবই জরুরি। আপনার বস যদি কোনো কাজে আপনার ওপর আস্থা না রাখতে পারেন তবে ক্যারিয়ার বেশি দূরে এগোবে না।
১২. আপনার যদি চাকরিটা ভালো নাই লাগে, তাহলে ছেড়ে দিন। চাকরিও ছাড়বেন না, আবার সহকর্মীদের সঙ্গে অফিসের বদনাম করবেন, এটা আপনার ক্যারিয়ারের ওপর অনেক বেশি নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। অফিসও আপনাকে নিয়ে বিড়ম্বনায় ভোগবে।
//এআর