ঢাকা, সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১০ ১৪৩১

মা-মেয়ে এক সঙ্গে ‘এ’ গ্রেডে পাশ

প্রকাশিত : ০৪:২১ পিএম, ২৪ জুলাই ২০১৭ সোমবার | আপডেট: ০৬:১৫ পিএম, ২৬ জুলাই ২০১৭ বুধবার

বয়স না লেখাপড়ার জন্য চাই প্রবল ইচ্ছা শক্তি। এ ইচ্ছা শক্তিই কাঙ্খিত ফল অর্জনে সহায়ক। এটাই প্রমাণ করেছেন জয়পুরহাটের আদর্শপাড়া মহল্লার চল্লিশোর্ধ বয়সী মা ইসমত আরা।

তিনি তার মেয়ে তানজিলা আফরিনের সঙ্গে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে কৃতিত্বের সঙ্গে এ-গ্রেডে উত্তীর্ণ হয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন।

পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর মা-মেয়ের পাসের খবর জানতে পেরে শিক্ষক, সহপাঠী ও প্রতিবেশীরা ফুল ও মিষ্টি নিয়ে অভিনন্দন জানাতে আসেন।

জেলা জজ আদালতের সাবেক পেশকার জাহাঙ্গীর আলমের স্ত্রী ইসমত আরা। একমাত্র মেয়ে তানজিলা আফরিনকে নিয়ে জয়পুরহাট পৌর এলাকার আদর্শপাড়া মহল্লায় তাদের বসবাস। মেয়েকে ভবিষ্যতে ডাক্তার বানানোর প্রবল ইচ্ছা তাদের।

মেয়েকে পড়াশোনায় আগ্রহী করে তুলতে গিয়ে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়া মা ইসমত আরার মধ্যেও পড়াশুনার প্রতি জন্মে গভীর আগ্রহ। সিদ্ধান্ত নেন ঘর-সংসারের ফাঁকে যতটুকু সময় পাওয়া যায়, সে সময় টুকুকে পড়াশুনার কাজে লাগাবেন।

মনে মনে স্বপ্ন দেখেন এসএসসি, এইচএসসি, ডিগ্রি ও এলএলবি পরীক্ষায় পাশ করে নির্যাতিতা মহিলাদের পাশে দাঁড়াবেন, তাদের অধিকার আদায়ে কাজ করবেন।

সিদ্ধান্ত নেওয়ার দুই বছরের মাথায় মা ও মেয়ে একসঙ্গে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে দু’জনেই ভালোভাবে উত্তীর্ণ হন। এর মধ্যে মেয়ে তানজিলা আফরিন বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ নিয়ে ভর্তি হয় জয়পুরহাট সরকারি কলেজে বিজ্ঞান বিভাগে আর তিনি ভর্তি হন পাঁচবিবি উপজেলার আয়মা-জামালপুর গ্রামের টেকনিক্যাল কলেজে।

ইসমত আরা গণমাধ্যমকে বলেন, কিছুটা লোক লজ্জার ভয়ে কেউ যেন চিনতে না পরেন, তাই বোরকা পরে কলেজে যাতায়াত করতেন। এ নিয়ে কারো কোনো কথায় কান দেননি তিনি।

একই সাথে স্ত্রী-মেয়ের এইচএসসি পরীক্ষায় ভালো ফলাফলে খুশি জাহাঙ্গীর আলম। তিনি জানান, আগামীতে স্ত্রী ও মেয়েকে লেখাপড়ায় এগিয়ে যেতে তিনি সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাবেন।

আর/ডব্লিউএন