ঘুরে আসুন ভিমরুলি ভাসমান পেয়ারা বাজার
প্রকাশিত : ০৯:০৪ পিএম, ২৫ জুলাই ২০১৭ মঙ্গলবার | আপডেট: ০৩:৪০ পিএম, ৮ আগস্ট ২০১৭ মঙ্গলবার
ঝালকাঠি, বরিশাল আর পিরোজপুরের সীমান্তবর্তী এলাকার ২৬ গ্রামের প্রায় ৩১ হাজার একর জমির উপর গড়ে ওঠেছে পেয়ারা বাগান। আর এ পেয়ারা চাষের সঙ্গে প্রায় ২০ হাজার পরিবার সরাসরি জড়িত। তাদের এ পেয়ারা বিক্রির জন্য বিখ্যাত ভীমরুলি ভাসমান পেয়ারা বাজার।
ঝালকাঠী জেলা শহর থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে ভিমরুলি গ্রামের আঁকাবাঁকা ছোট্ট খালজুড়ে সপ্তাহের প্রতিদিনই সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে বিকিকিনি। হাটটি সারা বছর বসলেও প্রাণ ফিরে পায় পেয়ারা মৌসুমে৷
ভিমরুলি হাট খালের একটি মোহনায় বসে। তিন দিক থেকে তিনটি খাল এসে মিশেছে এখানে। ভিমরুলির আশপাশের সব গ্রামেই অসংখ্য পেয়ারা বাগান। এসব গ্রামে দৃষ্টিপথে ধরা দেবে সবুজের সমারহ। এসব সবুজের বেশিরভাগ হোগলা, সুপারি, আমড়া আর পেয়ারার বন। এসব বাগান থেকে চাষীরা নৌকায় করে সরাসরি এই বাজারে নিয়ে আসেন।
এখানে প্রতিদিন পেয়ারা বোঝাই শত শত নৌকা নিয়ে বিক্রেতারা খুঁজে বেড়ায় ক্রেতা। আর ক্রেতাদের বেশিরভাগই হল পাইকার। বড় ইঞ্জিন নৌকা নিয়ে তারা বাজারে আসেন। ছোট ছোট নৌকা থেকে পেয়ারা কিনে তার ঢাকা শহরে বিক্রি করেন।
আকর্ষণীয় দিক হল, ভাসমান বাজারের উত্তর প্রান্তে খালের উপরের থাকা ছোট একটি সেতু। সেখান থেকে বাজারটি খুব ভালো করে দেখা যায়। এখানে আসা সব নৌকাগুলোর আকার আর ডিজাইন প্রায় একই রকম। মনে হবে যেন, একই কারিগরের তৈরি সব নৌকা।
ভিমরুলির বাজারের সবচেয়ে ব্যস্ত সময় হল দুপর ১২টা থেকে বিকেল ৩টা। এ সময়ে নৌকার সংখ্যা কয়েকশ ছাড়িয়ে যায়।
বাসে যেতে চাইলে ঢাকার গাবতলী থেকে সাকুরা পরিবহনের এসি বাস যায় ঝালকাঠী। ভাড়া ৮শ’ টাকা। এছাড়া, ‘দ্রুতি’, ‘ঈগল’, ‘সুরভী’ ও ‘সাকুরা’ পরিবহনের নন এসি বাসও যায়, ভাড়া ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকা। এছাড়া ঢাকার সায়দাবাদ থেকে ঝালকাঠী সদরে যাওয়ার জন্য রয়েছে ‘সুগন্ধা’ পরিবহনের বাস। ঝালকাঠী জেলা সদর থেকে মোটরবাইকে এই হাটে যেতে সময় লাগে প্রায় আধাঘণ্টা। আর ইঞ্জিন নৌকায় গেলে সময় লাগে এক ঘণ্টা। ঝালকাঠী লঞ্চঘাট কিংবা কাঠপট্টি থেকে ইঞ্জিন নৌকা ভাড়া পাওয়া যায়। ১০ জনের চলার উপযোগী একটি নৌকার সারাদিনের ভাড়া ১৫শ’ থেকে ২ হাজার টাকা।
কোথায় থাকবেন: সারাদিন ঘুরে সন্ধ্যায় আবার ঝালকাঠী থেকে ফিরে আসতে পারেন। থাকতে চাইলে জেলা শহরের সাধারণ মানের হোটেলই একমাত্র ভরসা। এ শহরের দু’একটি হোটেল হল কালিবাড়ি রোডে ‘ধানসিঁড়ি রেস্ট হাউস’, বাতাসা পট্টিতে ‘আরাফাত বোর্ডিং’, সদর রোডে ‘হালিমা বোর্ডিং’ ইত্যাদি। ভাড়া ১শ’ থেকে ২৫০ টাকা। এছাড়া স্বরূপকাঠির মিয়ার হাটে হোটেল ইফতিতে থাকতে পারেন। একদম নদীর পাড় ঘেষে গড়ে ওঠা সাধারণ মানের এ হোটেলটিতে থাকাও হবে একটা অভিজ্ঞতা। তবে ভালো কোনো হোটেলে থাকতে চাইলে যেতে হবে বরিশাল সদরে। ঝালকাঠী থেকে যার দূরত্ব প্রায় বিশ কিলোমিটার।
যখন যাবেন: জুলাই, আগষ্ট, সেপ্টেম্বর মাস পেয়ারার মৌসুম। পেয়ারার মৌসুম শেষ হলে আসে আমড়ার মৌসুম। এ অঞ্চলে আমড়ার ফলনও সর্বত্র। আর সবশেষে আসে সুপারি।
আর/ডব্লিউএন