মুদ্রা পাচারের ৮০ শতাংশই বাণিজ্যের আবরণে : নজিবুর রহমান
প্রকাশিত : ১০:১৮ পিএম, ২৫ জুলাই ২০১৭ মঙ্গলবার | আপডেট: ০২:৫১ পিএম, ২৭ জুলাই ২০১৭ বৃহস্পতিবার
বাংলাদেশে মুদ্রা পাচারের ৮০ শতাংশই ব্যবসা বাণিজ্যের আড়ালে হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমান। মঙ্গলবার রাজধানীর লা মেরিডিয়ান হোটেলে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ে থেকে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ নির্মূলের প্রত্যয়ে ‘ডব্লিউসিও সিকিউরিটি প্রোজেক্ট’ এর উদ্বোধন শেষে তিনি এ মন্তব্য করেন।
প্রকল্প উদ্বোধনের আগে এক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। এতে অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এমএ মান্নান প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডব্লিউসিও এর সেক্রেটারি জেনারেল কুনিও মিকুরিয়া। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য সচিব শুভাশিষ বসু, নৌপরিবহন সচিব অশোক মাধব রায়, স্বরাষ্ট্র সচিব ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ প্রমুখ।
চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমান বলেন, আমরা দেখেছি বিদেশে পণ্য রপ্তানি করা হয়েছে কিন্তু দেশে একটি টাকাও আসে নাই। এটা হচ্ছে স্পষ্টত বাণিজ্যের আবরণে মুদ্রা পাচারের একটি বিষয়। বিষয়টি সুবিস্তর। এজন্য মানি লন্ডারিং আইন, ২০১২ এর আওতায় অর্থমন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, আইন মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক একসঙ্গে কাজ করছে।
তিনি বলেন, এটি বিশ্বজনীন সমস্যা হলেও বাংলাদেশ তা প্রতিরোধে ভালোভাবে কাজ করছে। আমরা বেশ কিছু মামলা তদন্তের মধ্যে আছি, তদন্তের পরে কিছু মামলা এরই মধ্যে রুজু করা হয়েছে। এটা রোধ করতে এ প্রকল্প কাজে লাগবে। এফইজি ফোরাম, এপিটিএফ, রাইলো সবগুলোতে বাংলাদেশ কাস্টমস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
তিনি বলেন, বাণিজ্যের নামে কেউ যাতে অর্থপাচার করতে না পারে এবং অন্য কোনো অবৈধ পণ্য, অস্ত্র আনা নেওয়া করতে না পারে সেজন্য ‘ডব্লিউসিও সিকিউরিটি প্রোজেক্ট’ বাস্তবায়নে ডব্লিউসিওর সাথে চুক্তিবদ্ধ হল বাংলাদেশ।
এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ডব্লিউসিও সিকিউরিটি প্রোজেক্ট’ এর মতো গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রকল্পের শুভ সূচনা হলো। বিশ্ব বাণিজ্যে যে কয়েকটি সংস্থা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ডব্লিউসিও। ডব্লিউসিও নতুন উদ্যোগ নিয়েছে। সারা পৃথিবীতে ক্রমান্বয়ে এটা বাস্তবায়িত হচ্ছে। এনবিআরসহ সরকারের যত গোয়েন্দা সংস্থা রয়েছে সবাইকে সম্পৃক্ত করে এ ফোরাম করা হয়েছে। আমরা মনে করি সারা পৃথিবীতে বাণিজ্য সহায়তার পাশাপাশি বাণিজ্যের নিরাপত্তার যে অঙ্গীকার আছে তাতে বাংলাদেশ এগিয়ে। প্রধানমন্ত্রী সব ধরণের সন্ত্রাসবাদ, জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সব সময় সোচ্চার।
স্বরাষ্ট্র সচিব ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ এ প্রকল্প সম্পর্কে বলেন, ক্ষুদ্র অস্ত্র অনেক সময় ক্ষুদ্রতার কারণে নিয়ে আসার প্রচেষ্টা হয়, অনেক সময় নিয়ে আসা সম্ভবও হয়। কিন্তু যাতে আমাদের কাস্টমসের ক্যাপাসিটি বিল্ড করে সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করে দেওয়া যায়, সেজন্য যত আধুনিক কলাকৌশল আছে তা কাস্টমস বিভাগকে এ প্রকল্পের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে, তাদের ক্যাপাসিটি বৃদ্ধি করা হবে।
তিনি বলেন, কাস্টমস সফলতার সাথে যে কাজ করে যাচ্ছে তা আরও বাড়িয়ে দেওয়া হবে। আমাদের দেশে আমরা ক্ষুদ্র অস্ত্র বিশেষ করে রিভলবার, পিস্তল এগুলোর লাইন্সেসিংয়ে অত্যন্ত কঠোরতা আরোপ করি। এছাড়া যাতে করে কেউ লাইন্সেস ছাড়া বহন করে তাহলে তারা ধরা পড়ে এবং আমরা তাদের ধরার চেষ্টা করি।
আরকে/ডব্লিউএন