ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৭ ১৪৩১

যে ভিটামিন স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর

প্রকাশিত : ০১:১৬ পিএম, ২৮ জুলাই ২০১৭ শুক্রবার | আপডেট: ০৪:১৭ পিএম, ৪ আগস্ট ২০১৭ শুক্রবার

গবেষণায় দেখা গেছে, ভিটামিন সেবন শরীরের জন্য ভালো যার সুদৃঢ় প্রমাণও মিলে। কিন্তু সাম্প্রতিক বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে বিশেষ বিশেষ ভিটামিন কারও কারও জন্য ক্ষতিকর, যা মৃত্যু ঝুঁকি তৈরি করে।

ব্রিটিশ দৈনিক ইন্ডিপেনডেন্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বেশ কয়েকটি ভিটামিন কয়েকধরনের ক্যান্সারের ঝুঁকি তৈরি করে। আবার কিছু কিছু ভিটামিন কিডনিতে পাথরের ঝুঁকি বাড়ায়। কোনো ভিটামিন ও সাপ্লিমেন্ট খাওয়া উচিত, আর কোনোটি নয়। পত্রিকাটির এমন এ ধরণের প্রতিবেদন বৃহস্পতিবারে প্রকাশ করে।

কোন ভিটামিন খাওয়া উচিত আর কোনটি উচিত নয় তা তুলে ধরা হলো-

মাল্টিভিটামিন

কয়েক দশক ধরে ধারণা ছিল স্বাস্থ্যের জন্য মাল্টিভিটামিন খুব জরুরি। যেমন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ভিটামিন-সি, দৃষ্টিশক্তির সুরক্ষায় ভিটামিন-এ, শক্তিশালী থাকতে ভিটামিন-বি প্রয়োজন ।

২৫ বছরের বেশি বয়সী ৩৯ হাজার নারীর উপর ২০১১ সালে পরিচালিত এক সমীক্ষায় দেখা যায়, এগুলো যারা সেবন করেননি তাদের চেয়ে বেশি মৃত্যুঝুঁকি বেড়ে যায় সেবনকারীদের।

ভিটামিন ডি

সাধারণত আমরা যেসব খাবার খাই তার বেশির ভাগেই ভিটামিন ডি থাকে না। কিন্তু আমাদের হাড় মজবুতে এটা খুবই জরুরি। সূর্যের আলো লাগলে শরীরে এটা তৈরি হয়, তবে শীতকালে তা পর্যাপ্ত পরিমাণে পাওয়া কঠিন হয়।

সাম্প্রতিক কয়েকটি গবেষণায় দেখা গেছে, যারা নিয়মিত ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্ট নিয়েছেন তাদের চেয়ে যারা নেননি তারা বেশি দিন বাঁচে।

ভিটামিন সি

গবেষণার দেখা গেছে, ঠাণ্ডাজনিত সমস্যা রোধে ভিটামিন সি সাপ্লিমেন্ট তেমন কাজ করেই না বরং দুই হাজার মিলিগ্রাম বা তার চেয়ে বেশি কিডনিতে পাথরের ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। তাই ফল থেকেই ভিটামিন সি এর চাহিদা পূরণ করা যায়। স্ট্রবেরি এই পুষ্টি উপাদানে ভরপুর।

এন্টিঅক্সিডেন্ট

শরীরের প্রয়োজনের অতিরিক্ত এন্টিঅক্সিডেন্ট গ্রহণ করা হলে তা কয়েক ধরনের ক্যান্সারের ঝুঁকি তৈরি করে। ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়, মুত্যুর ঝুঁকি বাড়ায়। এটা সেবন বাদ দিয়ে রসালো ফল খেয়েই এর প্রয়োজন মেটানো যায়।

রসালো ফল ও শাকসব্জিতে ভিটামিন এ, সি ও ই-এসব এন্টিঅক্সিডেন্ট প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়। এন্টিঅক্সিডেন্ট সাপ্লিমেন্ট নিয়ে ২০০৭ সালের এক পর্যালোচনায় দেখানো হয়, বেটা ক্যারোটিন, ভিটামিন এ ও ভিটামিন ই-এর মাধ্যমে চিকিৎসায় মৃত্যু হার বাড়তে পারে।

ভিটামিন বি-

আলঝেইমার থেকে হৃদরোগ পর্যন্ত সব কিছুর চিকিৎসায় ভিটামিন বি-৩ দেওয়া হত। সাম্প্রতিক গবেষণায় এর ব্যবহার কমানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।‘গুড’ বা এইচডিএল কোলেস্টেরল বাড়াতে ভিটামিন বি-৩ এর ব্যবহারে হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক বা মৃত্যু কমেনি। বরং যারা বিও সাপ্লিমেন্ট নিয়েছেন তাদের সংক্রমণ, লিভারের সমস্যা ও অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণের ঝুঁকি বেড়েছে। স্যামন, টুনা মাছ এবং গাজর খেয়েই এর চাহিদা পূরণ করা যায়।

প্রোবায়োটিকস (ব্যাকটেরিয়াল সাপ্লিমেন্ট)

প্রোবায়োটিকসের প্রতিটি পিলের দাম ১ ডলার পর্যন্ত রাখা হয়ে থাকে। কিন্তু দই বা গাজরের মাধ্যমে প্রস্তুতকৃত খাবারে স্বাভাবিকভাবে যে পরিমাণে এটা পাওয়া যায় তার চেয়ে ওই পিলে কম থাকে।

জিঙ্ক

জিঙ্ক ঠাণ্ডাজনিত সমস্যার প্রশমণ ঘটায়। ‘কমন কোল্ডের’ জন্য দায়ী রিনোভাইরাসের বংশবিস্তারে বাধা দেয় এই খনিজ উপাদান। এটা সেবন করতে পারেন আপনি।

ভিটামিন ই

 এটি অতিরিক্ত সেবনে ক্যান্সারের ঝুঁকি তৈরি হয়। কথিত ক্যান্সার প্রতিরোধ সক্ষমতার কারণে ভিটামিন ই এন্টিঅক্সিডেন্টের বহুল ব্যবহার হয়ে থাকে। এক গবেষণায় দেখা গেছে, এই সাপ্লিমেন্ট সেবনকারীদের প্রোস্টেট ক্যান্সারের ঝুঁকি বেশি। এটি উচ্চ মাত্রায় ভিটামিন ই সেবনে সামগ্রিকবাবে মৃত্যু ঝুঁকি বাড়ে।

আপনি উদ্ভিজ্জ তেল, বিভিন্ন ধরনের বাদাম ও সবুজ শাক-সব্জি খান। এগুলো প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ই পাওয়া যায়।

ফলিক এসিড

ফলিক এসিড এক ধরনের বি ভিটামিন, যা দেহে নতুন কোষ তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। গর্ভবতী বা গর্ভধারণে ইচ্ছুক নারীদের দৈনিক ৪০০ মাইক্রোগ্রাম ফলিক এসিড সেবন করা উচিত। তাই গর্ভধারণ করলে বা গর্ভধারণ করতে চাইলে সেবন করতে হবে।

 

 

//আর//এআর