ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

অ্যাসেম্বলি নির্বাচন

সহিংসতায় রক্তাক্ত ভেনিজুয়েলা, নিহত ১০

প্রকাশিত : ১০:২৭ এএম, ৩১ জুলাই ২০১৭ সোমবার | আপডেট: ০৪:৫৬ পিএম, ১ আগস্ট ২০১৭ মঙ্গলবার

ভেনিজুয়েলার রাজধানী কারাকাসে সরকার বিরোধীদের জমায়েতে বিস্ফোরণ। ছবি : বিবিসি

ভেনিজুয়েলার রাজধানী কারাকাসে সরকার বিরোধীদের জমায়েতে বিস্ফোরণ। ছবি : বিবিসি

রক্তাক্ত সংঘাত ও সহিংসতায় ভেনিজুয়েলায় ভোটগ্রহণ হয়েছে। বিতর্কিত কনস্টিটুয়েন্ট অ্যাসেম্বলির এ নির্বাচনে সরকার সমর্থক ও বিরোধীদের মধ্যে তুমুল সংঘর্ষে অন্তত ১০ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন বহু মানুষ। কয়েক ঘন্টা পরই ভোটের ফলাফল জানা যাবে। খবর বিবিসির।  

এর আগে রোববার বিরোধীদের বয়কটের মধ্যেই ভেনিজুয়েলায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়। বিরোধীরা ভোট বর্জন করে ব্যাপক বিক্ষোভ করে। এসময় সহিংসতায় অন্তত ১০ জন প্রাণ হারান। নিহতদের মধ্যে বিরোধী দলের একজন তরুণ নেতা, সরকার সমর্থক এক প্রার্থী এবং একজন সৈনিকও রয়েছেন বলে জানা গেছে।

সকালে (বাংলাদেশ সময় গভীর রাতে) ভোটগ্রহণ শুরু হলে বিরোধীরা রাজপথে নেমে আসে। রাজধানী কারাকাসসহ বিভিন্ন স্থানে তারা বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। তারা আইনশৃংখলা বাহিনী ও সমর্থকদের বাধার মুখে পড়ে। ভেনিজুয়েলার পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর তাকহিরায় সংঘর্ষের সময় গুলিতে অন্তত ৩ জন নিহত হন। এদের মধ্যে একজন সৈনিক ও দুজন তরুণ রয়েছেন। বলিভার রাজ্যে একজন আইনজীবী গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা গেছেন। রাজধানী কারাকাসে বিরোধীদের জমায়েতে বিস্ফোরণে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। এসময় বেশ কয়েকটি মোটর সাইকেলে আগুন দেয় বিরোধীরা।

প্রসঙ্গত, দেশটির সংবিধান সংশোধন বা নতুন করে লেখার লক্ষ্যে একটি কনস্টিটুয়েন্ট অ্যাসেম্বলি বা নতুন সাংবিধানিক সংসদ গঠনে এ নির্বাচন। নতুন সংবিধান প্রণয়ন বা খসড়া তৈরির মতো নির্দিষ্ট উদ্দেশ্যে লেজিসলেটিভ অ্যাসেম্বলি বা আইণপ্রণয়নকারী সংসদের মতোই সাধারণত কনস্টিটুয়েন্ট অ্যাসেম্বলি গঠন করা হয়। কাজ শেষ হওয়ার পর এ ধরনের সংসদ সচরাচর ভেঙে দেয়া হয়। ভেনিজুয়েলার ক্ষেত্রে দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট হুগো শ্যাভেজের শাসনামলে ১৯৯৯ সালে পাস হওয়া সংবিধান পুনর্লিখনের জন্য গত ১ মে মাদুরো নতুন সংসদ গঠনের লক্ষ্যে নির্বাচনের ঘোষণা দেন।

এ ধরনের সংসদ গঠনের মাধ্যমে দেশটির প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর ক্ষমতা আরও পাকাপোক্ত হবে অভিযোগ করে নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করেছে বিরোধীরা। তবে দেশটির সরকারের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে, কয়েক মাসের সহিংস বিক্ষোভ ও সংঘর্ষে জর্জরিত দেশে শান্তি ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে নতুন সংসদই একমাত্র পথ। এদিকে ভোট শুরুর প্রাক্কালে মাদুরোর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। বিক্ষোভকারীরা রাজধানী কারাকাসে প্রধান রাস্তাগুলো বন্ধ করে দিয়েছে। টিভিতে প্রচারিত এক বক্তব্যে মাদুরো ৫৪৫ আসন বিশিষ্ট সংসদে ‘বড় জয়’ পাবেন বলে প্রত্যাশা করেছেন। নির্বাচনে লড়ছেন সরকার সমর্থক ৬০০০ প্রার্থী। এদিকে ইলেক্টোরাল কাউন্সিল প্রধান তিবিসে লুসিনা স্বীকার করেছেন, ভোট শুরুর কিছুক্ষণের মধ্যেই দেশের কিছু অংশে বেশকিছু ভোটকেন্দ্রে হামলার ঘটনা ঘটেছে এবং ভোটযন্ত্রগুলো পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। এদিকে এ ভোট ভেনিজুয়েলার গণতন্ত্র ধ্বংস করবে বলে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং আর্জেন্টিনা ব্রাজিল, কলম্বিয়া ও মেক্সিকোসহ লাতিন আমেরিকার দেশগুলো এ নির্বাচনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে।

//এআর