মিথ্যা মামলা হলে কী করবেন
প্রকাশিত : ০২:২৪ পিএম, ২ আগস্ট ২০১৭ বুধবার | আপডেট: ০৪:১৭ পিএম, ৪ আগস্ট ২০১৭ শুক্রবার
শত্রুতাবশত কেউ আপনার বিরুদ্ধে থানা বা আদালতে মিথ্যা মামলা করল। অথচ আপনার কোনো দোষ নেই। এটা জানার পর আপনি ঘাবড়ে যান। বিভিন্ন উপায় খোঁজতে শুরু করেছেন? আপনি চাইলে আইনি লড়াই চালিয়ে সহজেই এই সমস্যা থেকে বেরিয়ে আসতে পারেন।
এ বিষয়ে ইটিভি অনলাইনের পাঠকদের পরামর্শ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম।
মামলা হওয়ার পর আগে জানতে হবে মামলাটি কোথায় হয়েছে। এরপর মামলার আরজি বা এজাহারের কপি তুলতে হবে। আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলে জানা যাবে এটি জামিনযোগ্য কি না।
অভিযোগ গুরুতর না হলে ও জামিনযোগ্য হলে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন চাইতে পারেন।
অভিযোগ জামিন অযোগ্য হলে হাইকোর্ট বিভাগে উপযুক্ত কারণ দেখিয়ে আগাম জামিনও চাইতে পারেন। তবে হাইকোর্ট বিভাগ আগাম জামিন নির্দিষ্ট মেয়াদ পর্যন্ত দিয়ে থাকেন। এ মেয়াদের মধ্যেই নিম্ন আদালতে গিয়ে জামিননামা সম্পাদনের জন্য আবেদন করতে হবে।
আদালতে বিচার চলাকালে নির্দিষ্ট তারিখে অবশ্যই হাজিরা দিতে হবে। কোনো যুক্তিসংগত কারণ ছাড়া অনুপস্থিত থাকলে আসামির জামিন বাতিল করে দিতে পারেন আদালত।
জামিন কখন চাইতে হবে: পুলিশ প্রতিবেদন হওয়ার আগেই জামিন চাইতে হয়। পুলিশ অভিযোগপত্র দাখিল করার আগে আপনার বিরুদ্ধে যে মিথ্যা অভিযোগটি দায়ের করা হয়েছে, তা প্রমাণের চেষ্টা করুন। তদন্তকারী কর্মকর্তা আপনার বিরুদ্ধে অভিযোগটির সত্যতা না পেলে আপনাকে নির্দোষ দেখিয়ে চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করবেন।
অভিযোগপত্র হয়ে গেলে মামলাটি বিচারিক আদালতে বদলি হবে। অভিযোগ গঠনের দিন আসামিকে হাজির হয়ে নতুন করে পূর্বশর্তে জামিন চাইতে হবে এবং জামিননামা সম্পাদন করতে হবে। এই আবেদনে আসামি মামলা থেকে অব্যাহতি চাইতে পারেন। অব্যাহতির আবেদন নাকচ হলে উচ্চ আদালতে প্রতিকার চাইতে পারেন।
গ্রেফতার হলে: মিথ্যা মামলা হওয়ার পর পুলিশ আসামিকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে যেতে পারে। সেক্ষেত্রে আইনজীবীর মাধ্যমে জামিনের আবেদন করতে পারবেন। যদি পুলিশ রিমান্ড চায়, তাহলে আইনজীবীর উচিত হবে রিমান্ড বাতিলের আবেদন করা।
যদি আদালত জামিন দেন, তাহলে একজন পরিচিত জামিনদারের জিম্মায় আসামিকে জামিননামা সম্পাদন করতে হবে। জামিন না হলে পর্যায়ক্রমে উচ্চ আদালতে আবেদন করতে হবে।
আদালতে মামলা হলে: যদি আদালতে মামলা (সিআর মামলা) হয়, তাহলে আদালত সমন দিতে পারেন কিংবা গ্রেফতারি পরোয়ানাও জারি করতে পারেন। এ ক্ষেত্রেও আত্মসমর্পণ করে জামিন চাইতে হবে। কিংবা হাইকোর্ট বিভাগে আগাম জামিন চাইতে পারেন।
সিআর মামলায় অভিযুক্ত সব আসামি হাজির হলেই বিচারের জন্য মামলাটি বদলি করা হয়। কোনো কারণে আসামি হাজির না হলে জামিন বাতিল হতে পারে। পর্যায়ক্রমে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি হতে পারে।
হাজির না হলে আসামির মালামাল ক্রোকের আদেশও হতে পারে এবং তার অনুপস্থিতিতেই বিচার হতে পারে। তবে সাক্ষ্যপ্রমাণে আসামি নির্দোষ প্রমাণিত হলে মিথ্যা অভিযোগকারীর বিরুদ্ধে প্রচলিত আইনেই পাল্টা মামলা করা যাবে।
দেওয়ানি মামলা: দেওয়ানি মামলা হলে জবাব দাখিলের জন্য আদালত আসামির কাছে সমন পাঠাবেন। নির্ধারিত তারিখে হাজির হয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে জবাব দাখিল করতে হবে। পরবর্তী সময়ে মামলা ধারাবাহিকভাবে চলবে।
//আর//এআর