ভারতে ‘চুল চোর’ নিয়ে আতঙ্কে নারীরা
প্রকাশিত : ০৪:২৮ পিএম, ৪ আগস্ট ২০১৭ শুক্রবার | আপডেট: ০৯:২২ পিএম, ৪ আগস্ট ২০১৭ শুক্রবার
ভারতের উত্তরাঞ্চলীয় প্রদেশ হরিয়ানা ও রাজস্থানে অর্ধশতকের বেশি নারী অচেতন অবস্থায় তাদের চুল কেটে নেওয়ার অভিযোগ করেছেন। সংঘবদ্ধ কোনো চক্র বা কোনো তান্ত্রিক কিংবা ডাইনিরা বেছে বেছে নারীদের চুল কাটছেন বলে অনেকের ধারণা। তবে এ ঘটনার কোনো কূল-কিনারা পাচ্ছে না পুলিশ।
এই রহস্যেঘেরা `চুল চোর` কে নিয়ে দুই রাজ্যের নারীদের মধ্যে ভয় ও আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
সুনিতা দেবীর বয়স ৫৩ বছর, থাকেন ভারতের হরিয়ানা প্রদেশে।
তিনি বলেন, হঠাৎ একদিন তীব্র আলোর ঝলকানি আমাকে অচেতন করে দেয়। এক ঘণ্টা পর জেগে দেখি আমার চুল কেটে নেওয়া হয়েছে। হরিয়ানার গুরগাঁও জেলার ভিমগড় খেরির এই গৃহিনী শুক্রবারের ওই হামলার `মানসিক আঘাত` ভুলতে পারছেন না। তিনি না পারছেন ঘুমাতে, না পারছেন কোনো কিছুতে মনোযোগ দিতে।
সুনিতা দেবী যে এলাকায় থাকেন সেটি মূলত ব্যবসায়ী এবং কৃষক অধ্যুষিত এলাকা। তিনি অভিযোগ করেন, চুল কেটে নেওয়া বয়স্ক পুরুষ চোরের পরনে ছিল উজ্জ্বল রংয়ের কাপড়।
ঘটনার দিন রাত সাড়ে নয়টার দিকে নিচতলায় একা ছিলেন সুনিতা। ছেলের বউ আর নাতি ছিলেন দোতলায়। তারা যে গলিতে থাকেন সেখানে আরও প্রায় বিশটির মতো ঘর আছে। প্রতিদিনের ন্যায় রাত নয়টা থেকে ১০টার পর প্রতিবেশিরা, রাতের খাবারের পর সবাই বিশ্রাম করে।
শুক্রবারও এর ব্যতিক্রম ছিল না। কিন্তু প্রতিবেশিদের কেউই সুনিতা দেবীর বাসায় কাউকে ঢুকতে বা বের হতে দেখেনি। এর ফলে রহস্য আরো ঘনীভূত হয়।
কিন্তু এই ঘটনার পরদিন তার ঘরের কয়েক গজ দূরে একই ধরনের ঘটনা ঘটে। সুনিতার গৃহকর্মী আশা দেবী; তিনিও রাতের আঁধারে তাঁর চুল হারান। কিন্তু এবারের হামলাকারী পুরুষ নন, একজন নারী। আশা দেবীর শ্বশুর জানান, হামলার পরদিনই ছেলের বউসহ বাড়ির সব নারীকে উত্তর প্রদেশের এক আত্মীয়ের বাড়িতে রেখে আসেন তিনি।
‘চুল চোর`কে নিয়ে এলাকার মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
স্থানীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, চুল কেটে নিয়ে যাওয়া এই `ভূতুরে নাপিত` প্রথম দেখা যায় গত জুলাই মাসে রাজস্থানে। এরপর থেকে হরিয়ানা এমনকি রাজধানী দিল্লিতেও এই ধরনের ঘটনার খবর পাওয়া গেছে।
`চুল চোর` কে নিয়ে নানা ধরনের গল্প চালু করে দিয়েছেন অনেকে। কারো মতে, সংঘবদ্ধ কোনো চক্র এমন হামলার সঙ্গে জড়িত। আবার কারও মতে, তান্ত্রিক বা ডাইনিরা বেছে বেছে নারীদের চুল কাটছেন। কারও বিশ্বাস, এসব ঘটনায় জড়িয়ে আছে `অতিপ্রাকৃত শক্তি`।
আর/ডব্লিউএন