ঢাকা, শুক্রবার   ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪,   পৌষ ১২ ১৪৩১

বনশ্রীতে গৃহকর্মীর মৃত্যুতে গৃহকর্তা ও কেয়ারটেকার আটক

প্রকাশিত : ০৯:৫৫ পিএম, ৪ আগস্ট ২০১৭ শুক্রবার | আপডেট: ০৩:৪৫ পিএম, ৮ আগস্ট ২০১৭ মঙ্গলবার

রাজধানীর বনশ্রীতে গৃহকর্মীর মৃত্যুর ঘটনায় গৃহকর্তা মঈনুদ্দিন ও বাড়ির কেয়ারটেকার কামালকে আটক করেছে পুলিশ। শুক্রবার বিকাল চারটার দিকে তাদের খিলগাঁও থানা পুলিশ আটক করেছে বলে জানায়  খিলগাঁও জোনের সহকারী কমিশনার নাদিয়া জুই।

নাদিয়া জুই বলেন, শুক্রবার দুপুর দু’টার দিকে বনশ্রী এলাকায় গৃহকর্মীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধারের খবর পাই। তাৎক্ষণিকভাবে সেখানে টহল টিম পাঠাই। কিন্তু তার আগেই লাশটিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পুলিশের টহল টিম ঘটনাস্থলে যাওয়ার পর সেখানে কোনো লাশ পায়নি। পরে টহল টিমের পাঠানো সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশের আরেকটি টিম পাঠানো হয় হাসপাতালে। গৃহকর্মীর মৃত্যুর খবর এলাকায় ছড়িয়ে যাওয়ার পর থেকে গৃহকর্মীর স্বজন ও স্থানীয়রা গৃহকর্তার ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন। এ সময় উত্তেজিত এলাকাবাসীর ছোড়া ঢিলে অভিযুক্ত গৃহকর্তার বাড়ির কাঁচ ভেঙে যায়। সেখানে বেশ কয়েকটি গাড়িও ভাঙচুর করেন স্থানীয়রা।

শুক্রবার (৪ আগস্ট) বনশ্রী জি ব্লকের ৪ নম্বর রোডের ১৪ নম্বর বাড়ি থেকে লাইলী (২৫) নামের এক গৃহকর্মীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়।  এ ব্যাপারে গৃহকর্তা মঈনুদ্দিন জানান, লাইলী তার বাসায় প্রতিদিন সকালে কাজ করতে আসেন। শুক্রবার সকালে বাসায় কাজ করতে এসেই একটি কক্ষে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেন লাইলী। ডাকাডাকির পর দরজা না খোলায় দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায় লাইলীকে। পরে তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠালে সেখানকার চিকিৎসক জানান, হাসপাতালে নেওয়ার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে।

মৃত্যুর ব্যাপারে নিহত গৃহকর্মী লাইলীর (২৫) স্বামীর ভাইয়ের স্ত্রী নুরুন্নাহার বলেন, আমি নিজেও ওই বাসায় তৃতীয় তলায় কাজ করি। সকাল দশটার দিকে বাড়ির কেয়ারটেকার কামাল আমাকে লাইলীর মৃত্যুর খবর দেন। আমি সেখানে গিয়ে দেখি লাশটি ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে আছে। তার পায়ের নিচে একটি মোড়া রাখা ছিল। দরজা খোলা ছিল তখন। সব দেখে আত্মহত্যা বলে মনে হয়নি। মনে হয়েছে, লাইলীকে মারার পর ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মতিঝিল বিভাগের উপ-কমিশনার আনোয়ার হোসেন বলেন, সন্ধ্যার পর থেকে পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে হয়েছে। বাড়ির আশেপাশের অন্তত চারটি রাস্তার মাথায় অবস্থান নিয়েছেন স্থানীয়রা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কয়েকদফা টিয়ার শেল ছুড়েছে পুলিশ।

স্থানীয়রা জানান, গৃহকর্তা মঈনুদ্দিন ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে ওই এলাকায় গৃহকর্মীদের দীর্ঘ দিনের ক্ষোভ। এর আগেও এই বাসায় গৃহকর্মী নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে বলে তারা জানান।

আরকে/ডব্লিউএন