ঢাকা, বুধবার   ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১৯ ১৪৩১

আইসিটি সেক্টরে উদ্যোক্তা

৩০ হাজার নারীকে ফ্রি প্রশিক্ষণ

প্রকাশিত : ০৬:০৯ পিএম, ১২ আগস্ট ২০১৭ শনিবার | আপডেট: ০৪:২১ পিএম, ৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭ শুক্রবার

তথ্যপ্রযুক্তি (আইসিটি) সেক্টরে দক্ষ উদ্যোক্তা সৃষ্টির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। পরিকল্পানার আওতায় ত্রিশ হাজার নারীকে বিনামূল্যে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। উইমেন আইসিটি ফ্রন্টিয়ার ইনিশিয়েটিভ (ওয়াইফাই) প্রকল্পের আওতায় এই প্রশিক্ষণ দেবে যৌথভাবে বাংলাদেশ সরকারের আইসিটি বিভাগ ও জাতিসংঘ। যারা আইসিটি সেক্টরে নিজেকে মেলে ধরতে চান তাদের জন্য এটি একটি সুখবর। আবেদন করতে পারেন এই প্রশিক্ষণের জন্য। তবে বিজ্ঞপ্তি দেখে মিলিয়ে নিন আপনি আবেদনের জন্য যোগ্য কিনা।  

যেসব বিষয়ে প্রশিক্ষণ
প্রযুক্তিগতভাবে নিজের ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান পরিচালনাসহ খুঁটিনাটি অনেক বিষয় শেখানো হবে এখানে। নারী ক্ষমতায়নের মাধ্যমে টেকসই উন্নয়ন, আইসিটি ব্যবহারের মাধ্যমে ব্যবসা করা, নারীদের কাজের ক্ষেত্রে ব্যবসায়ে বাধা-বিপত্তি মোকাবেলা করা, আইসিটির ব্যবহারের মাধ্যমে উদ্যোগ গ্রহণ করা, অর্থ জোগান দেওয়া, আইসিটি-নির্ভর উদ্যোগ গ্রহণ, কিভাবে আইসিটি সেক্টওে ব্যবসার উদ্যোগ নেয়া যেতে পারে ইত্যাদি বিষয় শেখানো হবে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রথমত, নারী ক্ষমতায়নের মাধ্যমে ব্যবসায় পরিকল্পনা এবং দ্বিতীয়ত, দক্ষভাবে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে ব্যবসায় পরিচালনা করা।মূলত ব্যবসায় পরিচালনা, হিসাব রাখা, ব্যবসায় পরিকল্পনা এবং নারী ক্ষমতায়নে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার বিধি শেখানো হবে এতে। একজন উদ্যোক্তা একাধিক বিষয়ে প্রশিক্ষণ নিতে পারেন। তবে প্রতিটি বিষয়ের জন্য আলাদা রেজিস্ট্রেশন করতে হবে।

কারা দেবে প্রশিক্ষণ
বিভিন্ন দেশে জাতিসংঘ ওয়াইফাই প্রকল্প পরিচালনা করছে। সেই ধারাবাহিকতায় স¤প্রতি বাংলাদেশে প্রকল্পটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়েছে। প্রকল্পের মাধ্যমে টেকসই অর্থনীতির ভিত গড়তে পুরুষ উদ্যোক্তাদের পাশাপাশি আইসিটিতে দক্ষ নারী উদ্যোক্তা গড়ে তোলা হবে। বাংলাদেশ সরকারের আইসিটি বিভাগ এবং জাতিসংঘের এশিয়ান অ্যান্ড প্যাসিফিক ট্রেনিং সেন্টার ফর আইসিটি ডেভেলপমেন্ট (ইউএন-এপিসিআইসিটি) ওয়াই-ফাই কর্মসূচি যৌথভাবে বাস্তবায়ন করবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে সহায়তা করছে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বেসিস), বাংলাদেশ উইমেন ইন টেকনোলজি (বিডবিøউআইটি) এবং বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব আইসিটি ডেভেলপমেন্ট (বিআইআইডি)।

প্রয়োজনীয় যোগ্যতা
প্রশিক্ষণের জন্য নির্দিষ্ট কোনো শিক্ষাগত যোগ্যতা চাওয়া হয়নি। প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে বাংলা ভাষায়। মূলত নারী উদ্যোক্তাদের দুটি বিষয়ের ওপরে গুরুত্ব দেওয়া হবে। নারী ক্ষমতায়নের মাধ্যমে ব্যবসায় পরিকল্পনা এবং দক্ষভাবে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে ব্যবসায় পরিচালনা করা। তবে প্রশিক্ষণের মেয়াদ খুবই অল্প সময়ের। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, প্রকল্পটিকে প্রশিক্ষণ বলা হলেও অনেকটা কর্মশালার মতো ছোট আকারে হবে। প্রতিটি প্রশিক্ষণ দুই দিন অথবা তিন দিন করে হবে। আবার কোনো কোনোটি ১২ ঘণ্টা কিংবা ১৮ ঘণ্টার হবে।

প্রশিক্ষণের ধাপ
প্রাথমিকভাবে সরকারের ৬০ জন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, প্রশিক্ষক ও আইসিটিতে দক্ষ ব্যক্তিদের ওয়াইফাই প্রকল্পের জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। পরবর্তী সময় এই প্রশিক্ষকরা মাঠপর্যায়ে প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য প্রশিক্ষক তৈরি করবেন। আইসিটি মন্ত্রণালয়ের অধীনে নির্মিত বিভিন্ন ল্যাবে হাতে-কলমে দেওয়া হবে এই প্রশিক্ষণ। কয়েকটি কিস্তিতেতে দেশের ৩০ হাজার নারী উদ্যোক্তাকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। প্রথম কিস্তিতে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে প্রায় পাঁচ হাজার নারী উদ্যোক্তাকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। পর্যায়ক্রমে এ সংখ্যা আরো বাড়বে বলে জানালেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

ভাতা ও সনদ
ওয়াইফাই প্রকল্পের মাধ্যমে সম্পূর্ণ বিনা খরচে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে নারী উদ্যোক্তাদের। সেইসঙ্গে প্রশিক্ষণার্থীদের জন্য রয়েছে ভাতা। প্রশিক্ষণের মেয়াদ ও বিষয়ের ওপর ভিত্তি করে দেওয়া হবে এই ভাতা। এছাড়া দেওয়া হবে সনদ। শুধু তাই নয়, ব্যবসার ক্ষেত্রে প্রয়োজন অনুসারে নানাভাবে সহযোগিতাও করা হবে।

যেভাবে আবেদন
বিসিসির নির্মিত বিভিন্ন ল্যাবে অথবা নির্ধারিত বুথের মাধ্যমে আবেদন করা যাবে। থাকবে অনলাইনে আবেদনের সুযোগ। শিগগিরই শুরু হচ্ছে আবেদন প্রক্রিয়া।

আবেদন বিস্তারিত
উইমেন আইসিটি ফ্রন্টিয়ার ইনিশিয়েটিভ বা ওয়াইফাই প্রকল্প সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য জানা যাবে িি.িঁহধঢ়পরপঃ.ড়ৎম/রিভর -এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে। চাইলে সরাসরিও যোগাযোগ করতে পারেন এই ঠিকানায়- বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল, ই-১৪/এক্স, বিসিসি ভবন, আগারগাঁও, শেরেবাংলানগর, ঢাকা। এছাড়াও বাংলাদেশ উইমেন ইন টেকনোলজি [বিডবিøউআইটি] এবং বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব আইসিটি ডেভেলপমেন্ট [বিআইআইডি] কার্যালয়েও যোগাযোগ করা যাবে।

প্রশিক্ষণ শেষে মিলবে সনদ
প্রশিক্ষণ শেষে সবাইকে একটি সনদ দেওয়া হবে। প্রকল্পের আওতায় সরকারের পক্ষ থেকে প্রশিক্ষণার্থীদের ব্যবসার প্রসারের জন্য সহায়তা করা হবে। প্রশিক্ষণ শেষে নারী উদ্যোক্তাদের ব্যবসায় ক্ষেত্রে প্রয়োজন অনুসারে নানাভাবে সহযোগিতা করা হবে।

//এআর