বঙ্গবন্ধুর ছবি এঁকে এবার প্রথম হলো অদ্রিজা
প্রকাশিত : ১০:১৫ পিএম, ১৬ আগস্ট ২০১৭ বুধবার | আপডেট: ০৯:৩৯ এএম, ১৭ আগস্ট ২০১৭ বৃহস্পতিবার
জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় এবার বঙ্গবন্ধুর ছবি এঁকে প্রথম পুরস্কার পেল অদ্রিজা কর (১১)।
অদ্রিজা কর বরিশালের আগৈলঝাড়ার শ্রীমতি মাতৃ মঙ্গল বালিকা বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী। তার বাবা উপজেলা বন্দরের শান্তিরঞ্জন মিষ্টান্ন ভাণ্ডারের স্বত্ত্বাধিকারী পরিমল কর।
এর আগে গত ২৬ মার্চ স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে আগৈলঝাড়া উপজেলা প্রশাসন শিশুদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা আয়োজন করে। এতে অংশ নেয় অদ্রিজা। প্রতিযোগিতার বিষয় ছিলো ‘বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ’। উপজেলা স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রতিযোগিতায় প্রথম হওয়া ছবি স্বাধীনতা দিবসের কার্ডের প্রথম পেইজে এবং দ্বিতীয় হওয়া ছবি কার্ডের পেছনের পেইজে দিয়ে কার্ড ছাপানো হবে।
সেবার দ্বিতীয় হওয়ায় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অদ্রিজা করের আঁকা বঙ্গবন্ধুর ছবি কার্ডের পেছনে ছাপা হয়। এতেই বিপত্তি দেখা দেয়। ওই ছবি দিয়ে ছাপানো কার্ডে বঙ্গবন্ধুর ছবি ‘বিকৃত’ করা হয়েছে এবং এতে জাতির মানহানি হয়েছে এমন অভিযোগ তুলে গত ৭ জুন আগৈলঝাড়ার তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) গাজী তারিক সালমনের বিরুদ্ধে বরিশাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ৫ কোটি টাকার মানহানি মামলা দায়ের করা হয়। মামলটি করেন জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট ওবায়েদ উল্লাহ সাজু।
আদালতের সমন পেয়ে গত ১৯ জুলাই স্বেচ্ছায় বরিশাল চিফ মেট্রোপলিটন আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করেন তারেক সালমন। ওই সময় সাজু ছাড়াও আওয়ামীপন্থী অর্ধশতাধিক আইনজীবী জামিনের বিরোধিতা করেন।
এক পর্যায়ে আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করলে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা ইউএনও তারিক সালমনের ডান হাতে একটি হাতকড়া চেপে ধরে দুই পাশে ও পেছনে পাহাড়া দিয়ে তাকে আদালতের হাজতখানায় নিয়ে যায়। দুই ঘণ্টা পর দুপুর দেড়টার দিকে বিচারক ফের তাকে জামিনের আদেশ দিলে ১০ হাজার টাকা বেল বন্ডে আদালতের হাজতখানা থেকে মুক্তি পান তিনি।
এ ঘটনার খবর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে দেশজুড়ে ব্যাপক সমালোচিত হয়। ইউএনও গাজী তারিক সালমনের হাজতবাসের ঘটনায় আওয়ামী লীগ ও প্রশাসনের অভ্যন্তরে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
পরে ইউএনও’র বিরুদ্ধে মামলা করায় জেলা আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদকের পদ থেকে ওবায়েদ উল্লাহ সাজুকে সাময়িক বহিষ্কার করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
ওই সময় অদ্রিজা ও তার পরিবার বেশ ভয় পায়। অদ্রিজা জানায়, পুরস্কার দেয়া স্যারকে পুলিশ ধরে নিয়ে যাওয়ার পর বাবা ফেসবুক থেকে আমার আঁকা বঙ্গবন্ধুর সেই ছবিটি সরিয়ে ফেলেছিল। কারও সঙ্গে কথাও বলতে দিত না বাবা-মা।
ডব্লিউএন