পুঁজিবাজার কৃত্রিমভাবে চাঙ্গা রাখার উদ্যোগ
প্রকাশিত : ০১:৪৮ পিএম, ১৭ আগস্ট ২০১৭ বৃহস্পতিবার | আপডেট: ০৮:২০ পিএম, ১৭ আগস্ট ২০১৭ বৃহস্পতিবার
পুঁজিবাজারকে চাঙ্গা রাখতে উদ্যোগ নিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এরই অংশ হিসেবে নেতিবাচক বিও অ্যাকাউন্টে শেয়ার লেনদেন আরও এক বছর চার মাস চালু রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ২০১৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত এসব হিসাবে লেনদেন করা যাবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, পুঁজিবাজার চাঙ্গা রাখতে এ সিদ্ধান্ত কৃত্রিম উপায় ছাড়া কিছুই না। এতে দীর্ঘমেয়াদে ক্ষতিতে পড়বে বাজার।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক অর্থ উপদেষ্টা ড. এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, বাজারকে তার নিজস্ব গতিতে চলতে দিতে হবে। কারণ কৃত্রিমভাবে বাজার বাড়ানো হলে তা টেকসই হয় না। তিনি বলেন, বিএসইসিকে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় কাজ করতে হবে। বাজারে কোনো অনিয়ম হলে তা চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নিতে হবে।
কমিশন সূত্রে জানা গেছে, দুই-একদিনের মধ্যেই এ ব্যাপারে প্রজ্ঞাপন জারি করবে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এর আগে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই), ডিএসই ব্রোকারেস অ্যাসোসিয়েশন (ডিবিএ) এবং বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) প্রতিনিধিরা রোববার সময় বাড়ানোর আবেদন করে।
এই আবেদনের প্রেক্ষিতেই সময় বাড়ানো হল। বিশ্লেষকরা বলছেন, এ ধরনের সিদ্ধান্তের ফলে দীর্ঘমেয়াদে শেয়ারবাজার ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এতে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আর মুনাফা লুটে নেবে হাতে গোনা কয়েকটি প্রতিষ্ঠান।
জানা গেছে, বাজার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে মার্জিন রুলস, ১৯৯৯ এর ৩ (৫) এর কার্যকারিতা স্থগিত করতে সম্প্রতি তিন সংস্থার সঙ্গে বৈঠক করে বিএসইসি। বৈঠকে বাজার পরিস্থিতি তুলে ধরে নেতিবাচক অ্যাকাউন্টে শেয়ার লেনদেন চালুর যুক্তি তুলে ধরা হয়। এরপরই সিদ্ধান্ত নেয়া হল। মার্জিন রুলসের এই ধারায় উল্লেখ আছে ঋণাত্মক মূলধনধারী অ্যাকাউন্টে গ্রাহক নিজে শেয়ার লেনদেন করতে পারবে না। কেবল ঋণদাতা ব্রোকারেজ হাউস ও মার্চেন্ট ব্যাংক এই ধরনের অ্যাকাউন্টে শেয়ার বিক্রি করে তার ঋণ সমন্বয় করতে পারবে। ২০১০ সালের ধসের পর বিশেষ পরিস্থিতি বিবেচনায় বিএসইসি আইনের সংশ্লিষ্ট ধারাটির কার্যকারিতা স্থগিত করে। এরপর কয়েক দফায় স্থগিত আদেশের মেয়াদ বাড়ানো হয়। স্থগিতাদেশের সর্বশেষ মেয়াদ শুক্রবার শেষ হওয়ার কথা। ‘১৯৯৯ সালের মার্জিন রুলসের ৩ (৫) ধারায় উল্লেখ করা হয়েছে, কোনো বিনিয়োগকারীর ডেবিট ব্যালেন্স ১৫০ শতাংশের নিচে নামলে ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান তার কাছে নতুন করে মার্জিন চাইবে। এই মার্জিনের পরিমাণ এমন হবে, যাতে তার ডেবিট ব্যালেন্স ১৫০ শতাংশের উপরে থাকে। নোটিশ দেয়ার তিন কার্যদিবসের মধ্যে পর্যাপ্ত মার্জিন জমা দেয়া না হলে সংশ্লিষ্ট গ্রাহককে নতুন কোনো লেনদেনের অনুমতি দিতে পারবে না ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান।
জানা গেছে, টানা মাস দুই শেয়ারবাজারে অস্বাভাবিক উত্থান হয়েছিল। তবে সাম্প্রতিক সময়ে তাতে আবার দরপতন শুরু হয়। এই পতন ঠেকাতে কৃত্রিমভাবে বাজার চাঙ্গা রাখার উদ্যোগ নেয়া হল।
আরকে/এআর