চলে গেলেন নায়করাজ রাজ্জাক
প্রকাশিত : ০৬:৩৮ পিএম, ২১ আগস্ট ২০১৭ সোমবার | আপডেট: ১০:৩২ পিএম, ২১ আগস্ট ২০১৭ সোমবার
কিংবদন্তি অভিনেতা নায়করাজ রাজ্জাক আর নেই (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্নালিল্লাহি রাজিউন)। আজ সোমবার (২১ আগস্ট) বিকেলে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর।
হাসপাতালে নেওয়ার পথে নায়করাজ মারা যান বলে নিশ্চিত করেন নির্মাতা মুশফিকুর রহমান গুলজার।
গত কয়েকদিন ধরে তিনি নিউমোনিয়ায় ভূগছিলেন। আজ সোমবার বিকেল ৫টা ২০ মিনিটে হার্ট অ্যাটাক অবস্থায় নায়ক রাজ্জাককে হাসপাতালে আনা হয় বলে তার পারিবারিক সূত্রে জানা যায়। বর্তমানে নায়করাজের মরদেহ রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে রয়েছে।
ইউনাইটেড হাসপাতালের ডিউটি অফিসার সাব্বির আহমেদ বলেন, `পরিবারের সদস্যরা বিকেলে যখন তাকে আনেন তখন তার কোনো জ্ঞান ছিল না। পরীক্ষা নিরীক্ষার পর আমাদের ডাক্তাররা তাকে মৃত্য ঘোষণা করেন।`
তিনি জানান, নায়ক রাজ রাজ্জাককে বিকেল সাড়ে ৫টায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয় এবং ৬টা ২০ মিনিটে আনুষ্ঠানিকভাবে মৃত্য ঘোষণা করা হয়। তবে হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই তিনি মারা যান বলে জানান সাব্বির আহমেদ।
রাজ্জাক ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার টালিগঞ্জে ১৯৪২ সালের ২৩ জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন। কলকাতার খানপুর হাইস্কুলে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ার সময় স্বরসতী পূজা চলাকালীন মঞ্চ নাটকে অভিনয়ের জন্য তার গেম টিচার রবীন্দ্রনাথ চক্রবর্তী তাঁকে বেছে নেন কেন্দ্রীয় চরিত্রে। শিশু-কিশোরদের নিয়ে লেখা নাটক বিদ্রোহীতে গ্রামীণ কিশোর চরিত্রে অভিনয়ের মধ্য দিয়েই নায়ক রাজের অভিনয়ে সম্পৃক্ততা।
তিনি ১৯৬৪ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে পাড়ি জমান। প্রথমদিকে রাজ্জাক তৎকালীন পাকিস্তান টেলিভিশনে "ঘরোয়া" নামের ধারাবাহিক নাটকে অভিনয় করে দর্শকদের কাছে জনপ্রিয় হন। নানা প্রতিকূলতা পেরিয়ে তিনি আব্দুল জব্বার খানের সাথে সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ করার সুযোগ পান। সালাউদ্দিন প্রোডাকশন্সের ‘তেরো নাম্বার ফেকু ওস্তাগড় লেন’ চলচ্চিত্রে ছোট একটি চরিত্রে অভিনয় করে সবার কাছে নিজ মেধার পরিচয় দেন রাজ্জাক।
পরে ‘কার ব ‘, ‘ডাক বাবু’, ‘আখেরী স্টেশন’সহ আরও বেশ ক`টি ছবিতে বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেন।
নায়ক হিসেবে নায়করাজ প্রথম অভিনয় করেন জহির রায়হান পরিচালিত ‘বেহুলা’ ছবিতে। এতে তাঁর বিপরীতে ছিলেন সুচন্দা।
‘কি যে করি’ ছবিতে অভিনয় করে নায়করাজ রাজ্জাক প্রথম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান। এরপর আরও চারবার তিনি জাতীয় সম্মাননা পান। ২০১১ সালের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে তিনি আজীবন সম্মাননা অর্জন করেন। এছাড়া বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি (বাচসাস) পুরস্কার পেয়েছেন অসংখ্যবার।
শুধু নায়ক হিসেবেই নয়, পরিচালক হিসেবেও বেশ সফল। ‘আয়না কাহিনী’ ছবিটি নির্মাণ করেন রাজ্জাক।
তিনি প্রায় ৩০০টি বাংলা ও উর্দু চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। পরিচালনা করেছেন প্রায় ১৬টি চলচ্চিত্র।
ডব্লিউএন