ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

কোনটি নিরাপদ

সিজার নাকি নরমাল প্রসব

প্রকাশিত : ১১:৫৭ এএম, ২৫ আগস্ট ২০১৭ শুক্রবার | আপডেট: ০৮:৩০ পিএম, ১ সেপ্টেম্বর ২০১৭ শুক্রবার

বর্তমানে প্রসূতি মায়েদের অনেকেই অস্ত্রোপচারের ব্যাপারে আগ্রহী তারা এটাকে সন্তান জন্মদানের সহজ পদ্ধতি হিসেবে বেছে নিচ্ছেন। প্রসবকালীন ব্যাথা থেকে বাঁচতে তারা এমনটা করছেন।

কিন্তু সিজার একটা বড় অপারেশন। এ অপারেশনে কিছু ঝুঁকি থাকে। এজন্য খুব বেশি জটিলতা ছাড়া চিকিৎসকরা রোগীকে সিজারের পরামর্শ দেন না।

অপরদিকে গর্ভাবস্থায় জটিল সমস্যা যদি না হয় তাহলে নরমাল ডেলিভারি নিরাপদ। নরমাল ডেলিভারি শুধু বর্তমানের জন্যই ভালো নয় বরং পরবর্তীতে গর্ভধারণের জন্যও নিরাপদ।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, বর্তমানে প্রতি চারজন শিশুর মধ্যে একজন শিশু সিজারিয়ানের মাধ্যমে জন্ম নেয়।

পরিকল্পিত সিজারিয়ানে মায়ের সুবিধা: পরিকল্পিত সিজারিয়ানে বেশি রক্তক্ষরণ হয় না, প্রসব বেদনা সহ্য করতে হয় না ইত্যাদি।

সিজারিয়ানে মায়ের অসুবিধা: পরিকল্পিত সিজারিয়ানে শিশুর জন্মের পরও ব্লিডিং হলে অনেক ক্ষেত্রে গর্ভ অপসারণ করে ফেলতে হয় একে হিস্টেরেক্টমি বলে। অনেকদিন হাসপাতালে থাকতে হয়, অপারেশনের পরে ব্যথা হয় যা প্রায় কয়েক সপ্তাহ পর্যন্ত স্থায়ী হয়, হার্টঅ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ে, ইউটেরাইন ইনফেকশন এর ঝুঁকি বাড়ে। পরবর্তীতে সন্তান ধারণের সময় এক্টোপিক বা টিউবাল প্রেগনেন্সি, প্লাসেন্টা প্রিভিয়া, প্লাসেন্টা অ্যাক্রিটা এবং প্লাসেন্টাল অ্যাবরাপশন এর সমস্যা দেখা দেয়।

নরমাল প্রসবের সুবিধা অসুবিধা: নরমাল ডেলিভারি হলে মা কয়েক ঘণ্টা পরই স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসেন। পাশাপাশি মা কয়েক দিনের মধ্যেই স্বাভাবিক কাজ শুরু করতে পারে।

আবার নরমাল ডেলিভারি অস্বস্তিকর ও কষ্টকর। কেউ কেউ এটাকে নোংরা মনে হয় কারণ শরীর থেকে অনেক ঘাম, অ্যামনিওটিক তরল, রক্ত এবং বাচ্চার জন্মের পর প্লাসেন্টা বা নাড়ি বের হয়। ভ্যাজাইনাল ইনজুরি হতে পারে। অনেক সময় সেলাই লাগতে পারে।

ভালোভাবে বাচ্চার জন্ম হয়ে গেলে বাচ্চা শান্ত থাকে। শিশুর জন্মের সঙ্গে সঙ্গে শাল দুধ খাওয়ানো সহজ হয় ফলে মা ও বাচ্চার সম্পর্ক দৃঢ় হয়। নরমাল ডেলিভারিতে নবজাতককে যে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জন্ম নিতে হয় তাতে বাচ্চার ফুসফুস শ্বাস প্রশ্বাস নেয়ার জন্য প্রস্তুত ও শক্তিশালী হয়। বাচ্চার জন্মের পর মা শারীরিক ও মানসিক শক্তি লাভ করে। এর মাধ্যমে সে শান্তি ও অর্জনের বিস্ময়কর অনুভূতি পায়।

যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর ক্লিনিক্যাল এক্সসিলেন্স এর মতে, প্রতিটি মায়ের জন্যই সন্তান জন্মের দিনটা স্মরণীয়। প্রসব বেদনা অনেক কষ্টের কিন্তু মা তার সদ্যজাত সন্তানের মুখ দেখেই তার সব কষ্ট মলিন হয়ে যায়।

শিশুর জন্মের পদ্ধতির সিদ্ধান্ত নেয়ার অধিকার সব মায়ের আছে। কিন্তু এ সিদ্ধান্ত নেয়ার সময় তাদের সঠিক পরামর্শ দিয়ে সাহায্য করাটা জরুরি।

 

//আর//এআর