হারিয়ে যাচ্ছে লাকসামের ৩০ প্রজাতির মাছ
প্রকাশিত : ০৬:২১ পিএম, ২৫ আগস্ট ২০১৭ শুক্রবার | আপডেট: ১০:৪৫ পিএম, ২৫ আগস্ট ২০১৭ শুক্রবার
কুমিল্লার লাকসাম ও মনোহরগঞ্জ উপজেলায় মানুষের জীবন যাত্রায় নানামুখি উন্নয়ন প্রকল্পে প্রাণ সঞ্চালন ঘটলেও কালের আবর্তে গ্রামাঞ্চলের চিরচেনা প্রায় ৩০ প্রজাতির দেশীয় মাছ হারিয়ে যাচ্ছে।
এ অঞ্চলের নদী-নালা, খাল-বিল ও পুকুর-জলাশয়গুলো নানা কারণে দেশীয় মাছশূন্য হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে জলবায়ুর বিরূপ প্রভাব, বন্যা, জলাবদ্ধতা, প্রাকৃতিক বিপর্যয়, কারেন্ট জালের অবাধ ব্যবহার, নিয়ম বহির্ভূত কীটনাশক-রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার, জলাশয় দূষণ, নদ-নদীর নাব্যতা হ্রাস, বাঁধ দিয়ে মৎস্য চাষ, অবাধ ড্রেজিং বাণিজ্য, মাটি ভরাট ছোট ছোট মাছ ধরা, বিদেশি লাভজনক আগ্রাসী মাছের চাষ, মাছ প্রজননে নানা বিতর্কিত নীতিমালা, স্থানীয় মৎস্য বিভাগের দায়িত্বহীনতা ও আন্তরিকতার অভাবে এলাকায় মৎস্য চাষ কিংবা বিপননে মারাত্মক প্রভাবে ৩০ জাতের দেশীয় মাছ এখন এলাকায় নিখোঁজের তালিকায়।
একটা সময়ে দেশীয় প্রজাতির মাছগুলো এলাকার মানুষের চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্নস্থানে রপ্তানি হতো। অথচ সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে আজ অস্তিত্ব সংকটে পড়া দেশীয় মাছগুলোর মধ্যে কৈ, মাগুর, শিং, পাপদা, টেংরা, পুঁটি, চাপিলা, শৈল, টাকী, গঁজার, বোয়াল, আউ, বাইলা, মেনী, বাইন, চিংড়ি, কাচকী, চাঁন্দা, চিতল, টেঁয়াবৈচা, বুঁতি, খৈইয়াসহ ৩০ প্রজাতির মাছ। তবে লাভজনক বিধায় দেশী-বিদেশী নানা আগ্রাসী মাছ চাষে আগ্রহ বাড়ছে চাষীদের।
এলাকার হাট-বাজারগুলোতে দেশীয় মাছের আমদানী নেই। এ অঞ্চলের মানুষ বিভিন্ন জলাশয়ে প্রচুর দেশীয় প্রজাতির মাছ চাষ করতো। অনেকে নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে অতিরিক্ত মাছগুলো স্থানীয় বাজারে বিক্রি করে সংসার চালাতো। কিন্তু সময়ের বিচারে জনসচেতনার অভাবে এবং স্থানীয় মৎস্য বিভাগের নজরদারী না থাকায় ওইসব মাছ পাওয়া যেন সোনার হরিণ। বর্তমানে মৎস্য প্রজনন নানা খাতগুলোতে বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের জন্যে দেশীয় প্রজাতির মাছগুলো বংশ বিস্তারে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে ফলে এ অঞ্চলে দেশীয় প্রজাতির মাছগুলোর আকাল অবস্থা বিরাজ করছে।
এছাড়া এলাকায় অসংখ্য মৎস্য সমিতির কর্মকাণ্ড নিয়ে স্থানীয় মৎস্য বিভাগের বিতর্কিত ভূমিকায় দেশীয় প্রজাতির মৎস্য প্রজনন ও বিপননে মারাত্মক ঝুঁকি বাড়ছে। উপজেলা মৎস্য হেচারীতে আজ লাল বাতি।
অপরদিকে এ অঞ্চলের ডাকাতিয়া নদী সংযোগ প্রায় অর্ধশতাধিক খাল ও পুকুর-জলাশয় জবরদখল, ভরাট বাণিজ্যে অস্তিত্ব হারাতে বসেছে। ফলে দেশীয় প্রজাতির মাছগুলো দিন দিন এ অঞ্চলের খাদ্য তালিকা থেকে হারিয়ে যাচ্ছে।
আরকে/ডব্লিউএন