ঢাকা, বুধবার   ২৭ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১২ ১৪৩১

নিরাপত্তার চাদরে আবৃত শোলাকিয়া ঈদগাহ্ ময়দান

প্রকাশিত : ০৫:৫৮ পিএম, ১ সেপ্টেম্বর ২০১৭ শুক্রবার | আপডেট: ০৪:০২ পিএম, ৪ সেপ্টেম্বর ২০১৭ সোমবার

নিরাপত্তার চাদরে আবৃত হয়ে প্রস্তুত হচ্ছে শোলাকিয়া ঈদগাহ্ ময়দান। এশিয়ার সবথেকে বৃহত্তম ঈদ জামাতের এই ময়দানে প্রবেশ করতে মুসল্লিদের পাড়ি দিতে হবে  চার স্তরের কড়া নিরাপত্তবলয়। শরীর তল্লাশিতে থাকবে মেটাল ডিটেকটর। গোটা এলাকাজুড়ে থাকবে ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা (সিসিটিভি)। গত বছর ঈদ উল ফিতরের জামায়াতে জঙ্গী হামলার বিষয়টি বিবেচনায় রেখে এবার সবধরনের নিরাপত্তা প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে প্রশাসন।

আর এসবই করা হচ্ছে গত বছর ঈদুল ফিতরে শোলাকিয়া মাঠে সংঘটিত জঙ্গি হামলার বিষয়টি মাথায় রেখে। কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মো. আনোয়ার হোসেন খান ইটিভি অনলাইনকে জানান, ঈদের জামাতকে নির্বিঘ্ন করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে বিশেষ নিরাপত্তাব্যবস্থা। চার স্তরের এই নিরাপত্তাব্যবস্থার অংশ হিসেবে তিন প্লাটুন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও র‌্যাবের পাশাপাশি মাঠে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নসহ (এপিবিএন) বিপুলসংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন। পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরাও থাকবেন দায়িত্বে। নিরাপত্তার স্বার্থে জায়নামাজ ছাড়া ছাতা বা কোনো ধরনের ব্যাগ নিয়ে মুসল্লিদের মাঠে ঢুকতে দেওয়া হবে না বলেও জানান পুলিশ সুপার।

এবারের জামাত ১৯০তম ঈদ জামাত। ১৮২৮ সাল থেকে শুরু হয়ে নিয়মিত এখানে জামাত অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। জনশ্রুতি আছে প্রথম জামাতে সোয়া লাখ মুসল্লি একত্রে নামায আদায় করে বলে এ ময়দানের নাম হয় শোলাকিয়া ময়দান। সকাল ৯টায় শুরু হওয়া শোলাকিয়া মাঠের ঈদ জামাতে ইমামতি করবেন কিশোরগঞ্জ শামছুদ্দিন ভূঁইয়া জামে মসজিদের খতিব হাফেজ মাওলানা মুফতি হিফজুর রহমান।

সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ও শোলাকিয়া ঈদগাহ পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. আবদুল্লাহ আল মাসউদ জানান, উৎসবমুখর ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ঈদের জামাত অনুষ্ঠানের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। এরই মধ্যে মাঠে কাতারের দাগ কাটা, বালু ফেলা, দেয়ালে রং করা, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতাসহ প্রয়োজনীয় সংস্কার কাজ শেষ হয়েছে।

জামাত নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করতে কিশোরগঞ্জ পৌরসভার পক্ষ থেকেও প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। কিশোরগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মাহমুদ পারভেজ জানান, মুসল্লিদের যাতায়াতের সুবিধার্থে শোলাকিয়ার আশপাশের রাস্তাগুলোও সংস্কার করা হয়েছে।

ঈদ জামাতে আগত মুসল্লিদের অংশগ্রহণের সুবিধার্থে শোলাকিয়া স্পেশাল নামে দুটি বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয়েছে সরকারিভাবে। এর মধ্যে একটি ট্রেন ভোর পৌনে ৬টায় ময়মনসিংহ থেকে এবং অন্যটি সকাল ৬টায় ভৈরব থেকে কিশোরগঞ্জ শোলাকিয়া মাঠের উদ্দেশে ছেড়ে যাবে।

শোলাকিয়া ঈদগাহ জামে মসজিদের ইমাম আবদুস সালাম গোলাপ বলেন, ইতিহাস থেকে জানা যায়, মসনদ-ই-আলা ঈশা খাঁর ষষ্ঠ বংশধর দেওয়ান হয়বত খান বাহাদুর কিশোরগঞ্জের জমিদারি প্রতিষ্ঠার পর ইংরেজি ১৮২৮ সালে কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের পূর্ব প্রান্তে নরসুন্দা নদীর তীরে প্রায় সাত একর জমির ওপর এ ঈদগাহ প্রতিষ্ঠা করেন।

ডব্লিউএন