বাসে দেখা, বাসে প্রেম আর বাসেই বিয়ে
প্রকাশিত : ০৮:২২ পিএম, ৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭ রবিবার | আপডেট: ০৭:০৯ পিএম, ৪ সেপ্টেম্বর ২০১৭ সোমবার
লাভ এট ফার্স্ট সাইট বা প্রথম দেখাতেই প্রেমে যদি কারও বিশ্বাস না থাকে তবে শুনতে পারেন প্রেমের এই গল্পের কথা। আজ থেকে ১৩ বছর আগের কথা। ২০০৩ সালের এক মধ্যরাত। নিউইয়র্ক শহরের বাস নং এম১৪ডি। ২৮ বছর বয়সী কারা মুলিনসকে প্রথম দেখাতেই ভালোবেসে ফেলেন ২২ বছর বয়সী অজভাল্ডো জেমিনিস। দীর্ঘ ১৩ বছর চুটিয়ে প্রেম করার পর গত ২০ আগস্ট তেমনি একটি মেট্রো বাসে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন এই জুটি। নিউইয়র্কের একটি স্থানীয় সংবাদমাধ্যম পিপল থেকে এ তথ্য পাওয়া যায়।
১৩ বছর আগের সেই রাতের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে জেমিনিস বলেন, “তার আত্মবিশ্বাসে কিছু একটা ছিল। তার ধরণ আমার পছন্দ হয়েছিল। তাকে দেখে প্রথম যে ব্যাপারটি আমার চিন্তায় আসে তা হল কখনো কোনো মেয়েকে বিয়ে করলে এমন মেয়েকেই করব।” যদিও সে রাতে একই স্টপেজে নেমো মুলিনসের সাথে কথা বলা হয়নি জমিনিসের। কিন্তু ৫ ঘন্টা পরেই একটি বারে তাদের আবার দেখা হয়। এবার আর সুযোগ হাতছাড়া করেননি জেমেনিস। প্রথম সে কথা হবার মুহূর্তের কথা স্মরণ করে মুলিনস বলেন, “তার মধ্যে সাহস সঞ্চার হচ্ছিল। তাকে আমার পছন্দ হয়েছিল তাই আমার নাম্বার তাকে দেই। আমি সেখান থেকে চলে আসার পরপরই সে আমাকে ফোন করে। কিন্তু আমি তখন তা কেটে দেই।” শুরুতেই আগ্রহ না থাকলেও ধীরে ধীরে জেমিনিসের প্রতি দুর্বল হতে থাকেন মুলিনস। ২০১৫ সালে সেই এম১৪ডি বাসেই মুলিনসকে বিয়ের প্রস্তাব করেন জেমিনিস। বিয়ের প্রস্তাবেও ছিল ব্যাপক নাটকীয়তা। তুষার ঝরের মধেই সিনেমা দেখতে যাবার কথা বলে মুলিনসকে বাসে ওঠান জেমিনিস। তারপর পুরো বাস ভর্তি যাত্রীদের সামনেই তাকে প্রস্তাব দেন জেমিনিস।
তাদের প্রথম দেখা ও বিয়ের প্রস্তাবের ঘটনাকে স্মরণীয় করে রাখতে এম১৪ডি বাসেই নিজেদের বিয়ের অনুষ্ঠান করার সিদ্ধান্ত নেয় এই জুটি। বিয়েতে বাস ভর্তি অপরিচিত যাত্রী ছাড়াও জেমিনিস ও মলিনস এর বন্ধু ও নিকট স্বজনেরাও উপস্থিত ছিল। উচ্ছ্বসিত জেমিনিস বলেন, “আমি এই বাসে সারাজীবনের জন্য চড়ে বসেছি। আর আমি জানতাম এই বাস ভুল ঠিকানায় যাবে না। যখন এটা সত্যি হল তা আমার ধারণার বাইরে চলে গেল। যা হল তা আমার আশার ছিল।”
যদিও বাসে খানিকটা ঝাকুনি ছিল কিন্তু অনুষ্ঠানটি ঠিকঠাকভাবেই শেষ হয়। বিয়ের কনে কারা মুলিনস খানিকটা চিন্তিত ছিলেন। না, জেমিনিসকে নিয়ে নয় বরং তার ৫ ইঞ্চি উচু হিল নিয়ে। তিনি বলেন, “আমার মনে হচ্ছিল আমি বাসে পরেই যাব কেননা এটি খুব দুলছিল। আমি কোনোমতে নিজেকে সামলে নিচ্ছিলাম কিন্তু সব ঠিকঠাক শেষ হল। আমাদের সব বন্ধুরাও এসেছিল।”
জেমিনিস এবং মলিনস মনে করেন তাদের ব্যতিক্রমী এই বিয়ের আয়োজন মানুষদেরকে তাদের আশেপাশে দৃষ্টি দিতে সাহায্য করবে। একটি সংকীর্ণ বাসে থেকেও পুরো পৃথিবীর দিকে নজর রাখা যায়।
বিবাহিত এই যুগল বলেন, “আমরা অনেক সময়ই আমাদের আশেপাশের শহর মানুষের দিকে নজর রাখি না। জীবন খুবই ছোট। আপনার আশেপাশের মানুষদের দেখুন। কে জানে আপনি কী দেখতে পারেন!”
পুরো অনুষ্ঠানটি ২০মিনিটে বাসের মধ্যেই শেষ হয়। পরের দিন ২১আগস্ট এই জুটি মধুচন্দ্রিমায় মিশর যান।
এসএইচ/ডব্লিউএন