ঢাকা, রবিবার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১০ ১৪৩১

আজব দেশ, জনসংখ্যা মাত্র তিনজন

প্রকাশিত : ১১:১০ এএম, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭ শনিবার | আপডেট: ০৪:২৬ পিএম, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭ রবিবার

পৃথিবীতে একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশ রয়েছে যে দেশের জনসংখ্যা মাত্র তিন জন। দেশটির নিজস্ব পতাকা, পাসপোর্ট, মুদ্রা সবই রয়েছে। ক্ষুদ্রতম এ দেশটির নাম প্রিন্সিপালিটি অব সিল্যান্ড। সংক্ষেপে সিল্যান্ডও বলা হয়ে থাকে।

ইংল্যান্ডের উত্তর সাগরে এই রাষ্ট্রটির অবস্থান।ব্রিটেনের সাফল্ক সমুদ্রের ধারে। ক্ষুদ্রতম এই দেশটির মোট আয়তন ৫৫০ বর্গমিটার। দেশটির একটি রাজধানীও রয়েছে। তার রাজধানীর নাম এইচ এম ফোর্ট রাফস। দেশটিতে ইংরেজি ভাষা প্রচলিত এবং মুদ্রার নাম সিল্যান্ড ডলার। বাইরের কোনো দেশে এই মুদ্রা চলে না। দেশটিতে কোনো মাটিও নেই।

এই দেশটি আসলে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্যবহৃত একটি সমুদ্র বন্দর। জার্মান সেনারা যে কোনও সময় ইংল্যান্ড আক্রমণ করতে পারে এমন আশঙ্কা থেকে ব্রিটিশ সেনাবাহিনী ইংল্যান্ডের উপকূলে দুর্গ বানানোর পরিকল্পনা করে। সে পরিকল্পনা থেকেই উপকূল থেকে ১০ কিলোমিটার গভীরে বানানো হয় মাউনসেল সি ফোর্ট। এখান থেকে শত্রুদের রণতরীর উপর নজরদারি চালানো হত।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হলে অন্যান্য অসংখ্য দুর্গের সঙ্গে ব্রিটিশ সেনাবাহিনী এটিকেও পরিত্যক্ত ঘোষণা করে। ১৯৬৭ সালের ২ সেপ্টেম্বর ব্রিটিশ নাগরিক মেজর প্যাডজ রয় বেটস ও তাঁর পরিবার এই দ্বীপের স্বত্বাধিকারী হন। তারপর তাঁরাই একে একটি স্বাধীন মাইক্রো রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা করেন। এ বছরের ২ সেপ্টেম্বর দেশটির স্বাধীনতার সূবর্ণজয়ন্তী পালিত হয়।

পৃথিবীর কোনো দেশ এখনও সিল্যান্ডকে স্বীকৃতি না দিলেও কেউ তাদের বিরোধিতাও করেনি। মজার কথা হল, মোট জনসংখ্যার তিনজনই বেটস পরিবারের সদস্য এবং যথাক্রমে তারা এই রাজ্যের রাজা, রানি এবং রাজপুত্র। তবে উইকিপিডিয়ার তথ্যমতে ২০০২ সালে দেশটির জনসংখ্যা ছিল ২৭ জন।

মাটি থেকে অনেকটা উপরে দুটো বড় বড় স্টিলের পাইপের উপর এই দেশটির অবস্থান। এই দেশটিতে কোনো মাটি নেই। পুরোটাই স্টিল। এই দেশটিতে যেতে হলে ইংল্যান্ডের উত্তর উপকূল থেকে ১০ কিলোমিটার সাগরের গভীরে যেতে হবে। দেশটিতে একটিমাত্র ঘর চোখে পড়বে এবং সেটিই এই দেশের রাজপ্রাসাদ। রাজপ্রাসাদের উপর দেশটির পতাকা পতপত করে উড়তে দেখা যাবে।


সিল্যান্ডে একবার অগ্নিকান্ড হয়। সময়টি ছিল ২০০৬ সালের ২৩ জুন। বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে এই আগুন লাগে। এতে সিল্যান্ডের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। অগ্নিকান্ডের খবর পেয়ে ইংল্যান্ডের উদ্ধারকারী হেলিকপ্টার এসে তাদেরকে উদ্ধার করে। পরবর্তীতে সিল্যান্ডকে মেরামত করা হলে ২০০৬ সালের নভেম্বরে তারা আবার সিল্যান্ডে ফিরে যান।

তথ্যসূত্র : উইকিপিডিয়া।

//এআর