ঢাকা, সোমবার   ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪,   পৌষ ৯ ১৪৩১

দলের প্রয়োজনে কিপিং ছাড়তে আপত্তি নেই : মুশফিক

প্রকাশিত : ০১:৪৪ পিএম, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭ শনিবার

দলের প্রয়োজনে খেলায় পছন্দের স্থান উইকেট কিপিং ছাড়তেও প্রস্তুত আছেন বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ টেস্ট ক্রিকেট দলের অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজ খেলতে যাওয়ার আগে মিরপুরের শেরেবাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। মুশফিক জানান অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানকে অনেক মিস করবেন সিরিজে।


মুশফিক বলেন, ৩ দিনের একটি প্রস্তুতি ম্যাচ হবে। সেই ম্যাচ শেষে টিম ম্যানেজমেন্ট সিদ্ধান্ত নেবে আমাকে দিয়ে কিপিং করানো হবে কিনা।নিজের খেলার পজিশন প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, দলের প্রয়োজনে যে কোনো জায়গায় খেলতে প্রস্তুত আছি।


অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজ শেষে দলে মুশফিকের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন টিম ম্যানেজমেন্ট। এমনকি ক্রিকেট অপারেন্স কমিটির চেয়ারম্যান আকরাম খান জানান, দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের সময় দলে মুশফিকের ভূমিকা কী হবে তা নির্দিষ্ট করে দেয়া হবে।


সাকিব আল হাসানকে বড্ড মিস করবেন মুশফিক। অকপটেই জানিয়েছেন সেটি, সাকিবের জায়গায় দুইটা প্লেয়ারকে খেলাতে হয়, এটা বাস্তবতা। একটা বোলার, একটা ব্যাটসম্যান। অধিনায়ক হিসেবে ওর মতো খেলোয়াড়ের অভাব অনুভব করবই।


কিন্তু সাকিবকে ছাড়া খেলার একটা সুবিধাও দেখছেন মুশফিক, সাকিবকে ছাড়া খেললে বোঝা যাবে, ওর মতো একজন খেলোয়াড় ছাড়া আমরা কেমন খেলি। ওর জায়গায় যে খেলোয়াড়েরা খেলবে, এটি তাদের জন্যও বড় সুযোগ। সেই সুযোগটা কাজে লাগানো উচিত তাদের।


 দক্ষিণ আফ্রিকায় জিততে চান মুশফিকুর রহিম। সংবাদ সম্মেলনে খুব পরিষ্কারভাবেই কথাটা বললেন বাংলাদেশের টেস্ট অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। দক্ষিণ আফ্রিকার মতো দলকে হারানোর বিশ্বাসটা না থাকলে মহা মুশকিল। সাম্প্রতিক কালে ইংল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও অস্ট্রেলিয়ার মতো দলকে বাংলাদেশ হারিয়েছে সেই ‘বিশ্বাস’ থেকেই। দক্ষিণ আফ্রিকাকে দুই বছর আগে ঘরের মাটিতে ওয়ানডে সিরিজে হারানোর সুখস্মৃতিটা কিন্তু এবার মুশফিকদের স্বপ্ন দেখাচ্ছে অন্য রকম কিছু করারই।


সেই ‘অন্য রকম কিছু’টা হলো জয়। দক্ষিণ আফ্রিকা রওনা হওয়ার আগে বাংলাদেশ অধিনায়ক মনেপ্রাণেই বিশ্বাস করেন, এবার দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারানো সম্ভব, তাদের মাটিতেও। উচ্চাভিলাষী স্বপ্ন? হতে পারে। তবে অনেকের দৃষ্টিতেই ‘কঠিন’ এই সফরে মুশফিক কিন্তু জয় ছাড়া অন্য কিছু ভাবছেনই না।


মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে স্বপ্নই দেখতে বলছেন অধিনায়ক, ‘অনেকেই বলবেন, আমাদের কোনো সুযোগই নেই। কিন্তু আমি তাঁদের সঙ্গে একমত নই। এটাকে উচ্চাভিলাষী স্বপ্ন বলতে পারেন, কিন্তু ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করি দক্ষিণ আফ্রিকাকে আমরা হারাতে পারি, এই বিশ্বাসটা আমাদের থাকতেই হবে।’


দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে বাংলাদেশের রেকর্ড ধর্তব্যে নিলে মুশফিকের স্বপ্নটা উচ্চাভিলাষী মনে হওয়াটাই স্বাভাবিক। ২০০০ সালে টেস্ট মর্যাদা পাওয়ার পর দক্ষিণ আফ্রিকায় কেবল দুটি দ্বিপক্ষীয় সফর করেছে বাংলাদেশ। ২০০২ সালে প্রথমবার, এরপর ২০০৮ সালে। মাঝে অংশ নিয়েছে ২০০৩ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপ আর ২০০৭ সালের প্রথম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে। এই চার সফরের ফলাফল কিন্তু ভয় ধরিয়ে দিতেই পারে। সবচেয়ে বেশি শঙ্কিত হতে হবে টেস্ট ম্যাচগুলোর ফলের দিকে তাকিয়ে। তবে মুশফিককে সাহস জোগাচ্ছে সাম্প্রতিক কালে বাংলাদেশের সাফল্যই, ‘দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে আমাদের ভালো রেকর্ড নেই। আমাদের খুব কম খেলোয়াড়ই আছে, যারা দক্ষিণ আফ্রিকার কন্ডিশনে খেলেছে। ওটা এমনই একটা জায়গা, যেখানে অনেক দলই খারাপ খেলে। আমাদের জন্যও ওখানে খেলাটা কঠিন হতে পারে, তবে আমরা অবশ্যই চেষ্টা করব। বাংলাদেশ যে কয়বার দক্ষিণ আফ্রিকায় গেছে, সে তুলনায় বাংলাদেশ অবশ্যই এবার অনেক ভালো করবে। যেহেতু বাংলাদেশ এখন অনেক পরিণত দল; আমরা যদি আমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী খেলতে পারি, তাহলে মনে করি, একটা দল হিসেবে আমাদের ভালো করার সুযোগ আছে।’

পূর্ণাঙ্গ সিরিজ খেলতে চলতি মাসেই দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে যাচ্ছেন টাইগাররা। দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের প্রথমটি আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে ২ অক্টোবর এবং দ্বিতীয়টি ৬ থেকে ১০ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া সফরকালে বাংলাদেশ তিনটি ওয়ানডে ও দুটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচও খেলবে।
আরকে//এআর