অবৈধ রেমিটেন্স চ্যানেল বন্ধ হবে : গভর্নর
প্রকাশিত : ০৯:১৩ পিএম, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭ মঙ্গলবার | আপডেট: ১১:৫৬ পিএম, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭ মঙ্গলবার
দেশের রেমিটেন্সের প্রবাহ বাড়ানোর জন্য অবৈধ সব চ্যানেল অপসারণ করা হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির।
তিনি বলেন, অবৈধ চ্যানেলের সঙ্গে সম্পৃক্ততা পাওয়ায় বিকাশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আরও যাদের সম্পৃক্ততা পাওয়া যাবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্য বিশারদ মিলনায়তনে রেমিটেন্স অ্যাওয়ার্ড-২০১৬ প্রদান অনুষ্ঠানে আজ মঙ্গলবার তিনি এসব কথা বলেন।
গত বছর রেমিটেন্সের প্রবাহ কম ছিল জানিয়েছে গভর্নর বলেন, আশার কথা হচ্ছে গত ২ মাসে রেমিটেন্স বেড়েছে। কিছু অবৈধ চ্যানেল বন্ধ করে দেওয়ার কারণে এর ইতিবাচক প্রভাব পড়ছে। আশা করছি রেমিটেন্সের প্রবৃদ্ধি ধরে রাখা যাবে। কারণ বাংলাদেশ ব্যাংক ইতোমধ্যে বেশকিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। প্রয়োজনে আরও পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
গভর্নর ফজলে কবির আরো বলেন, অবৈধ চ্যানেলগুলো অতি কম সময়ে গ্রাহকের কাছে টাকা পৌঁছে দেয়। তাই রেমিটেন্স পাঠানোর ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলোকে আরও কম সময় নিতে হবে। এতে তাদের খরচও অনেক কম পড়ে। এর জন্য বৈধভাবে প্রযুক্তিগত পন্থা বের করতে হবে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এমএ মান্নান।
রেমিটেন্সের বিষয়ে তিনি বলেন, আইনের মাধ্যমে দেশে রেমিটেন্স পাঠানোর ক্ষেত্রে সব অপ্রয়োজনীয় বাধা দূর করতে হবে। বিদেশে যে দূতাবাসগুলো রয়েছে সেগুলো হতে হবে শ্রমাবাস বা বাণিজ্য কেন্দ্র। আমার বিশ্বাস দূতাবাসগুলো তাদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করবে। কারণ আজ যারা পুরস্কার পেলেন তারা সবাই গুরুত্বপূর্ণ।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. ইউনুসুর রহমান, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব ড. নমিতা হালদার, বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এসকে সুর চৌধুরী, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল হামিদ মিয়া, অগ্রণী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শামসুল ইসলাম, সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ওবায়দুল্লাহ আল মাসুদ, জনতা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুস সালাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি অবৈধ চ্যানেলে রেমিটেন্স আনার সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে বিকাশের ২ হাজার ৮৮৭টি এজেন্টের কার্যক্রম স্থগিতের (বন্ধ) নির্দেশ দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। একইসঙ্গে এজেন্টদের ১ হাজার ৮৬৩টি হিসাব বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়।
আর বেনামে হিসাব পরিচালনা করার দায়ে ৮০ হাজার এজেন্টের ৬ লাখ হিসাবের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ও সন্ত্রাস বিরোধী আইন অনুযায়ী এসব সিদ্ধান্ত দেয় বাংলাদেশ ফিনান্সিয়াল ইন্টেলেজেন্ট ইউনিট (বিএফআইইউ)।
অনুষ্ঠানে ৪টি ক্যাটাগরিতে ৩৫ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে সর্বোচ্চ রেমিটেন্স প্রেরণকারী ২১ জন, বন্ডে বিনিয়োগকারী ৫ জন, বিদেশি বাংলাদেশি মালিকানাধীন ৪টি এক্সচেঞ্জ হাউজ ও শীর্ষ রেমিটেন্স আহরণকারী ৫ ব্যাংককে পুরস্কৃত করা হয়েছে।
সর্বোচ্চ রেমিটেন্স প্রেরণকারী ও বন্ডে বিনিয়োগকারী ব্যক্তিদের মধ্যে ১৭ জন সংযুক্ত আরব আমিরাতে বসবাস করছেন। অপর ৯ জন যুক্তরাষ্ট্র, কুয়েত, জার্মানি, সিঙ্গাপুর, কাতার ও অস্ট্রেলিয়ায় বসবাস করছেন।
শীর্ষ রেমিটেন্স আহরণকারী ব্যাংকগুলো হচ্ছে যথাক্রমে ইসলামী ব্যাংক, স্ট্যান্ডার্ড চাটার্ড, অগ্রণী, সোনালী ও জনতা ব্যাংক। এক্সচেঞ্জ হাউজগুলো হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের প্লাসিড ইনক করপোরেশন, ইতালির ন্যাশনাল এক্সচেঞ্জ কোম্পানি, যুক্তরাজ্যের এনইসি মানি ট্রান্সফার ও যুক্তরাষ্ট্রের সানম্যান গ্লোবাল এক্সপ্রেস।
অনিবাসী বাংলাদেশিদের আর্থিক অন্তর্ভুক্তির আওতায় আনা এবং বৈধ পথে রেমিট্যান্স প্রেরণে উৎসাহিত করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক রেমিট্যান্স অ্যাওয়ার্ড প্রবর্তন করে।
ডব্লিউএন