পালিত কন্যা নয়, হানিপ্রীত রাম রহিমের প্রেমিকা!
প্রকাশিত : ০৮:২৫ পিএম, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭ শনিবার | আপডেট: ০৯:৫৬ পিএম, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৭ রবিবার
দুই সাধ্বীকে ধর্ষণের দায়ে ২০ বছর সাজাপ্রাপ্ত ভারতের কথিত ধর্মগুরু গুরমিত রাম রহিম সিংয়ের সব বিষয়ে অত্যন্ত কাছাকাছি থাকতেন তার পালিত কন্যা হানিপ্রীত। কিন্তু হানিপ্রীতের সাবেক স্বামী দাবি করেছেন সে (হানিপ্রীত) রাম রহিমের পালিত কন্যা নয়, ছিলেন প্রেমিকা। সম্প্রতি রাম রহিমের ডেরায় এ দু’জনের নগ্ন ছবি দেখেছেন বলে দাবি করেছেন তিনি।
গতকাল শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে হানিপ্রীতের স্বামী বিশ্বাস গুপ্ত এই দাবি করেছেন বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছেন ইন্ডিয়া টুডে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সংবাদ সম্মেলনে কথা বলতে গিয়ে বারবার কেঁদে ফেলেন হানিপ্রীতের সাবেক এই স্বামী। রাম রহিম ও হানিপ্রীত তার জীবন ধ্বংস করে দিয়েছেন বলে দাবি করেন তিনি।
নিজের স্বার্থ হাসিলে রাম রহিম হানিপ্রীতের সঙ্গে তার বিয়ে দেন বলে জানান বিশ্বাস গুপ্ত। তিনি বলেন, মূলত ডেরায় হানিপ্রীতের অবস্থান বৈধ করার জন্যই বিয়েটা দেওয়া হয়। আমরা কখনো স্বামী-স্ত্রীর মতো জীবন কাটাইনি। হানিপ্রীত সব সময়ই রাম রহিমের অনুরক্ত ছিল।
বিশ্বাস গুপ্ত আরো বলেন, যখন আমি তাদের অবৈধ সম্পর্কের কথা জানতে পারি, তখনই হাইকোর্টে গিয়েছিলাম। গণমাধ্যমের সামনে হাজির হয়েছিলাম। সেটি ২০১১ সালের কথা। কিন্তু আমার বিরুদ্ধে কিছু মিথ্যা মামলা করা হয়।
এখন আদালতে বিশ্বাসের বিরুদ্ধে পাঁচটি মামলা বিচারাধীন। এসবের মধ্যে যৌতুক চেয়ে হয়রানি করার মামলাও রয়েছে। তিনি বলেন, লোক দিয়ে তাকে খুন করারও চেষ্টা করেছিলেন রাম রহিম। তার সম্পত্তি ও অর্থও কেড়ে নিয়েছেন তিনি।
হানিপ্রীত রাম রহিমের কোনোভাবেই পালিত কন্যা হতে পারে না জানিয়ে বিশ্বাস গুপ্ত বলেন, হানিপ্রীতকে বৈধভাবে দত্তক নেওয়া হয়নি। এটি স্রেফ মিথ্যা কথা।
রাম রহিম হরিয়ানার সিরসায় নিজের ডেরায় জনপ্রিয় রিয়েলিটি শো ‘বিগ বস’-এর আদলে প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছিলেন বলে জানিয়েছেন বিশ্বাস। এতে ছয় দম্পতি অংশ নিতেন এবং রাম রহিমের গুহায় (গুফা) কাটাতে হতো টানা ২৮ দিন।
রাম রহিম সব সময় নিজের কাছে অস্ত্র রাখতেন জানিয়ে বিশ্বাস গুপ্ত বলেন, কারাগারে থাকলেও তিনি খুব ক্ষমতাবান। তাই এই সংবাদ সম্মেলন থেকে বের হওয়ার পর, আমি সত্যিই জানি না, আমাকে আর আপনারা দেখতে পাবেন কি না।
এর আগে এক সাধ্বী অভিযোগ করেছিলেন, ডেরায় থাকা কমপক্ষে দুই হাজার নারীকে ধর্ষণ করেছেন রাম রহিম।
হরিয়ানায় রাম রহিমের সিরসার ডেরায় নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ। সেখানে অভিযানের শুরুর দিকে বিপুল পরিমাণ কনডম ও জন্মনিরোধক ওষুধ জব্দ করা হয়। ডেরার ভেতর সাধ্বী হোস্টেলে রাম রহিমের সরাসরি যাতায়াত ছিল। ওই যাতায়াতের জন্যই দুটি গোপন সুড়ঙ্গ তৈরি করা হয়েছিল। ডেরার ‘গুফা’ থেকে সাধ্বী হোস্টেল পর্যন্ত একটি গোপন সুড়ঙ্গের সন্ধান পাওয়া যায়। এ ছাড়া তার ডেরায় পানির নিচে গোপন ‘সেক্স কেভ’ বা ‘যৌন গুহার’ সন্ধান পেয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
জেলে যাবার পরও রাম রহিম তার পালিত কন্যাকে সঙ্গে রাখতে চাইতেন। এজন্য তিনি জেল কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদনও করেছিলেন।
গত ২৫ আগস্ট দুই নারী ভক্তকে ধর্ষণের অভিযোগে করা দুটি মামলায় রাম রহিমের ২০ বছর কারাদণ্ড হয়।
ডব্লিউএন